shono
Advertisement
Burtolla Case

বৃষ্টিতে প্রমাণ লোপাটের পরেও কীভাবে গ্রেপ্তার দোষী? বড়তলা কাণ্ডে ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর জানালেন সিপি

অপহরণ ও যৌন হেনস্তার ঘটনায় মঙ্গলবারই দোষীর ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত।
Published By: Sayani SenPosted: 11:46 PM Feb 19, 2025Updated: 11:46 PM Feb 19, 2025

নিরুফা খাতুন: আর জি কর কাণ্ডে কলকাতা পুলিশকে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিল। তাদের পেশাদারিত্ব নিয়েও বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হয়েছিল। কিন্তু বড়তলায় নির্যাতিতা ৭ মাসের শিশুকন্যা সুবিচার পেয়েছে। অপহরণ ও যৌন হেনস্তার  ঘটনায় মঙ্গলবারই দোষীর ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত। সাজা ঘোষণার পর বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতা পুলিশের পেশাদারিত্বের প্রশংসা করলেন নগরপাল মনোজ ভার্মা।

Advertisement

তিনি বলেন, "যা তথ্যপ্রমাণ ছিল, তার উপর নির্ভর করে ঝাড়গ্রাম থেকে গ্রেফতার করা হয় রাজীব ঘোষকে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য সিট গঠন করেছিলাম আমরা। ২৮ দিনের মধ্যে চার্জশিট দিতে পেরেছি। ৭৯ দিনের মাথায় অভিযুক্ত দোষী সাব্যস্ত হয়েছে। সম্ভবত এটাই প্রথম কোনও ধর্ষণের ঘটনা, যেখানে নির্যাতিতা বেঁচে থাকা সত্ত্বেও দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এ এক ঐতিহাসিক রায়। কলকাতা পুলিশও ইতিহাস গড়েছে। কলকাতা পুলিশ যথেষ্ট পেশাদারিত্বের সঙ্গে কাজ করে। বড়তলা মামলার ক্ষেত্রেও তদন্তকারী আধিকারিক-সহ টিমের সদস‌্যরা পেশাদারিত্ব দেখিয়েছেন। নির্যাতিতা শিশুকন‌্যা এখনও হাসপাতালে ভর্তি। তার অবস্থা সংকটজনক নয়। তবে এটাও বলা যাবে না যে সে পুরোপুরি সুস্থ। ভবিষ‌্যতে সে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারবে কি না তাও বলা যাচ্ছে না।"

কীভাবে দোষীকে গ্রেপ্তার করা হল, তারও বিস্তারিত বর্ণনা দেন সিপি। তিনি বলেন, "তদন্তে নেমে প্রথমে সমস্যা হচ্ছিল। কারণ, ঘটনার দিন রাতে বৃষ্টি হয়েছিল। যে কারণে অনেক তথ্য পাওয়া যাচ্ছিল না। গেট প্যাটার্ন মেথড ও রাইট ব্লকার সিস্টেম ব্যবহার করা হয়। শিশুর শরীরে একাধিক কামড়ের দাগ ছিল। অভিযুক্তর দাঁতের সঙ্গে সেগুলি মিলিয়ে দেখা হয়। ডিএনএ নমুনা, রক্তের নমুনাও মিলে যায়। ফলে আদালতের কাছে অভিযুক্তর দোষ প্রমাণে আর কোনও সমস্যা হয়নি।"

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩০ নভেম্বর, বড়তলা থানা এলাকার এক বাসিন্দা দেখেন বাড়ির সামনে ফুটপাথে শুয়ে তারস্বরে কাঁদছে এক দুধের শিশু। আশপাশে কেউ নেই। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশকে ফোন করেন তিনি। একই সময় ফুটপাথবাসী এক দম্পতি তাঁদের সন্তানের খোঁজ শুরু করেন। খোঁজ পেতে পুলিশের দ্বারস্থ হন। পরে বোঝা যায়, ফুটপাথে কাঁদতে থাকা শিশুটিকে ওই ফুটপাথবাসী দম্পতিরই সন্তান। একরত্তিকে সঙ্গে সঙ্গে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানেই সে এখনও চিকিৎসাধীন। চিকিৎসা করতে গিয়ে চমকে ওঠেন ডাক্তাররা। দেখেন, দুধের শিশুটির গোপনাঙ্গে একাধিক ক্ষতর চিহ্ন রয়েছে। এমনকী, সারা শরীরেও একাধিক আঁচড়ের চিহ্ন রয়েছে। মনে করা হয়, শিশুটিকে যৌন নিগ্রহ করা হয়েছে।

তদন্তে নেমে মোট ১৯ মিনিটের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেন তদন্তকারীরা। গত বছরের ৪ ডিসেম্বর রাজীব ঘোষ ওরফে গোবরাকে ঝাড়গ্রামের গোপীবল্লভপুর থানার আলমপুরের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। যৌন নির্যাতনের পর সেখানে গিয়ে গা ঢাকা দিয়েছিল দোষী। গেইট পদ্ধতি ব্যবহার করে সিসিটিভি ফুটেজের সঙ্গে অভিযুক্তের হাঁটাচলা মিলিয়ে দেখে গ্রেপ্তার করা হয় তাকে। ২৬ দিনের মাথায় চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ। ২৪ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। সাক্ষীদের তালিকায় ছিলেন আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের সুপারও। গত বৃহস্পতিবার মামলার শুনানি শেষ হয়। সোমবার আদালত রাজীব ওরফে গোবরাকে দোষী সাব্যস্ত করে। মঙ্গলবার এই মামলায় মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেন কলকাতা নগর দায়রা আদালতের বিশেষ পকসো কোর্টের বিচারক।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • বড়তলায় নির্যাতিতা ৭ মাসের শিশুকন্যা সুবিচার পেয়েছে।
  • অপহরণ ও যৌন হেনস্তার ঘটনায় মঙ্গলবারই দোষীর ফাঁসির সাজা দিয়েছে আদালত।
  • সাজা ঘোষণার পর বুধবার সাংবাদিক বৈঠকে কলকাতা পুলিশের পেশাদারিত্বের প্রশংসা করলেন নগরপাল মনোজ ভার্মা।
Advertisement