সন্দীপ মজুমদার, উলুবেড়িয়া: হাওড়ায় ৭২ তম স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে চলল এনআরসি-র বিরুদ্ধে প্রচার। উত্তোলিত জাতীয় পতাকার নিচে দাঁড়িয়ে “আমরা ভারতবাসী/ ভারতেই থাকতে চাই” লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে স্লোগান দিলেন বাসিন্দারা। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে বাগনানের কাছাড়িপাড়ায়।
বুধবার সকালে কাছাড়ি পাড়ায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন বিধায়ক অরুনাভ সেন। সেই অনুষ্ঠানেই কেন্দ্রের এনআরসি ইস্যুকে উসকে দিয়ে চমক দেন স্থানীয় বাসিন্দারা। প্ল্যাকার্ড নিয়ে রীতিমতো মিছিল করে গোটা এলাকা পরিদর্শন করা হয়। তারপর মিছিল এসে থামে জাতীয় পতাকার নিচে। মিছিলে অংশগ্রহণকারী অধিকাংশের হাতে ছিল “আমরা ভারতবাসী/ভারতেই থাকতে চাই” কিংবা “আমার জন্মভূমি ভারত/আমি ভারত ছাড়তে চাইনা,” লেখা প্ল্যাকার্ড। এই মিছিল প্রসঙ্গে মুখ খুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দা চন্দ্রনাথ বসু। তাঁর সাফ দাবি, মিছিলের মাধ্যমে এনআরসি প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকারকে বার্তা দেওয়া হয়েছে। এমন একটা বিষয়ের প্রতিবাদের জন্য স্বাধীনতা দিবসের মঞ্চই হল আদর্শ স্থান।
[দাম্পত্য কলহের জের, শান্তিপুরে স্ত্রীকে কুপিয়ে আত্মঘাতী স্বামী]
বিধায়ক অরুণাভবাবু বলেন, স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এই ধরনের মিছিলের দরকার ছিল। এই মিছিলই এনআরসি-র বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বার্তাকে আরও বেশি করে জনমানসে পৌঁছে দেবে। বলা বাহুল্য, স্বাধীনতা দিবসের সকালে বাক্স প্যাঁটরা মাথায় নিয়ে এনআরসি ইস্যুকে সামনে রেখে এই বিরুদ্ধ প্রচারে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে গোটা কাছাড়িপাড়ায়।
উল্লেখ্য, জাতীয় নাগরিকপঞ্জি নিয়ে উত্তাল সমগ্র অসম। বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের চিহ্নিতকরণ নিয়ে শুরু হয়েছে চাপানউতোর। এনআরসি থেকে ৪০ লক্ষ মানুষের নাম বাদ পড়েছে। এহেন ঘটনায় প্রতিবেশী রাজ্যের সমালোচনায় মুখর হয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অসমবাসীর অবস্থাও শোচনীয়। ভুলভ্রান্তির জেরে বোড়ো ল্যান্ডের বাসিন্দাদের নামও এনআরসি থেকে বাদ পড়েছে। নাগরিকপঞ্জিতে নাম নেই প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির পরিবারের সদস্যদের। স্বাধীনতা সংগ্রামী গাওবুড়ার পরিবারের বর্তমান প্রজন্মের নাম জাতীয় নাগরিকপঞ্জি থেকে বাদ পড়েছে। একইভাবে এনআরসি-তে জায়গা পায়নি লোকগীতির প্রখ্যাত শিল্পী কালিকা প্রসাদের আত্মীয়দের নামও। জাতীয় নাগরিকপঞ্জি প্রকাশের দু’দিনের মধ্যেই তাই ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে সমগ্র আসমজুড়ে। এদিকে এনআরসি প্রকাশ হতেই শিলংরোডে হেনস্তার শিকার হচ্ছেন অসমবাসীরা। কর্মসূত্রে যাঁরা প্রতিদিন অসম থেকে অরুণাচল ও নাগাল্যান্ড যান তাঁরা বেশি বিপাকে পড়েছেন। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর পাশাপাশি সেই রাজ্যের ছাত্ররাও অসমের বাসিন্দাদের কাছে এনআরসি-র শংসাপত্র চাইছেন।
[স্বাধীনতা দিবসে সুন্দরবনের ১০০০ পথশিশুকে খাবার বিলি রবিনহুড বাহিনীর]
The post স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে এনআরসি-র বিরোধিতায় প্রচার, হাওড়ায় চাঞ্চল্য appeared first on Sangbad Pratidin.