shono
Advertisement

অকাল মেনোপজ, মা হতে পারবেন না স্ত্রী, দ্বিতীয় বিয়ে করতে চেয়ে চিকিৎসকের দ্বারস্থ স্বামী

শুক্রাণু পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের সামনে তুলে ধরেন ওই ব্যক্তি।
Posted: 08:18 PM Oct 30, 2021Updated: 08:18 PM Oct 30, 2021

অভিরূপ দাস: মিনিট দুয়েক আগেও উথলে পরছিল ভালোবাসা। স্ত্রীর রজোনিবৃত্তি (Menopause)  হয়েছে শুনে ঘুরে গেলেন একশো আশি ডিগ্রি। চিকিৎসকের চেম্বারে একা ঢুকে স্বামীর সটান প্রশ্ন, “আরেকটা বিয়ে করলে বাবা হতে পারব তো?”এমন ঘটনায় বিস্মিত বিশিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. ইন্দ্রনীল সাহা। নিজেই সোশ্যাল সাইটে তিনি তুলে ধরেছেন এ ঘটনা। যদিও স্বামী–স্ত্রীর নাম পরিচয় গোপন রেখেছেন।

Advertisement

আঠেরো বছর আগে বিয়ে হয়েছে। অথচ এখনও নিঃসন্তান। সম্প্রতি এমন এক দম্পতি এসেছিলেন ডা. ইন্দ্রনীল সাহার চেম্বারে। স্বামীর বয়স চুয়াল্লিশ স্ত্রী সবে চৌত্রিশের কোঠায়। কেন এখনও বাচ্চা হচ্ছে না? তার কারণ জানতেই চিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন ওই দম্পতি। উত্তর খুঁজে পেতে উভয়কেই বেশ কিছু পরীক্ষা করার নির্দেশ দেন চিকিৎসক। সেসবের রিপোর্ট আসতেই পরিস্কার হয় বিষয়টি। চিকিৎসক জানিয়েছেন, কিছু পরীক্ষার পর দেখা যায় ওই মহিলার প্রিম্যাচিওর মেনোপজ হয়েছে। অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ের আগেই মাসিক বন্ধ হয়ে গিয়েছে। মেনোপজ হলে ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যায়৷ স্বাভাবিক ভাবে আর অন্তঃসত্ত্বা হওয়া যায় না। এ সমস্ত কথাই বুঝিয়ে বলেন চিকিৎসক। মেয়েটিকে ভেঙে পরতে বারণ করেন। নানানভাবে তাঁর মনোবল বাড়ান।

[আরও পড়ুন: কালীপুজোর দিন বদলাচ্ছে মেট্রো চলাচলের সময়সূচি, দক্ষিণেশ্বরের যাত্রীদের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা]

সে সময় তাঁর স্বামীও চিকিৎসকের সঙ্গে গলা মেলান। স্ত্রীর কাঁধে হাত রাখেন। সেই তিনিই নতুন মূর্তি ধরেন কিছুক্ষণ পর। চিকিৎসকের কথায়, স্ত্রীর হাত ধরে বেরিয়ে যাবার সামান্য সময় পর ফের চেম্বারে ঢোকেন স্বামী। এবার তিনি একা। নিজের শুক্রাণু পরীক্ষার রিপোর্ট নিয়ে ডাক্তারের সামনে তুলে ধরেন। “আরেকবার দেখুন। আমারটা ঠিক আছে তো স্যার? নতুন একটা বিয়ে করলে বাবা হতে পারব তো?” গোটা ঘটনায় হতভম্ব চিকিৎসক। তিনি জানিয়েছেন, “ইচ্ছে করছিল মিথ্যে কথা বলি। মেয়েটার সংসারটা বাঁচিয়ে দিই।”

শুধুমাত্র স্বাভাবিক ভাবে মা হতে পারবে না বলে আঠেরো বছরের একটা সম্পর্ক শেষ! এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ অনেকেই। মুহ্যমান শহরের বুদ্ধিজীবীরা। মনোবিদ তথা সমাজকর্মী রত্নাবলী রায় জানিয়েছেন, ২০২১ সালে পৌঁছেও মেয়েরা এখনও স্রেফ উৎপাদনের যন্ত্র। একটি মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তার মানেই যেন সে মুচলেকা দিয়েছে সন্তানের জন্ম দেবে। এর উপর ছেলে না হয়ে কন্যাসন্তান প্রসব করলে অনেকে বলবেন বংশে বাতি দেওয়ার কেউ থাকল না। অত্যন্ত গর্হিত চিন্তাভাবনা। শিক্ষিকা জয়তী গুহ জানিয়েছেন, এটাই সমাজের নির্মম সত্যি। পুঁথিগত শিক্ষা থাকলেও মানুষের বিবেক ক্রমশ ক্ষয়িষ্ণু হচ্ছে।

[আরও পড়ুন: আর্থিক অনটনের জেরে বাংলায় একজনও আত্মহত্যা করেননি, প্রকাশ কেন্দ্রীয় রিপোর্টে]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement