সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মাইনাস ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় প্রবল শৈত্যের মধ্যেই অনশন শুরু করেছিলেন সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচুক। তিনিই ‘থ্রি ইডিয়টস’ ছবির ‘ফুংসুক ওয়াংরু’। সমস্যায় জর্জরিত লাদাখের মানুষ ও বাস্তুতন্ত্র রক্ষা করতেই এই অনশন। উদ্দেশ্য ছিল প্রধানমন্ত্রী মোদির দৃষ্টি আকর্ষণ করা। কিন্তু শুক্রবার রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ ফেসবুকে একটি পোস্ট করে সোনম (Sonam Wangchuk) দাবি করলেন, তাঁকে গৃহবন্দি করা হয়েছে।
ভিডিওয় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ”আমাকে গৃহবন্দি করা হয়েছে। বলতে গেলে গৃহবন্দির চেয়েও খারাপ পরিস্থিতি।” উল্লেখ্য, পাঁচদিনের জন্য অনশন শুরু করেছিলেন সোনম। দীর্ঘদিন ধরেই লাদাখের মানুষ দাবি করেছেন, পূর্ণ রাজ্য হিসাবে স্বায়ত্তশাসনের অধিকার দেওয়া হোক তাঁদের। রাজ্যের স্বীকৃতি না হলেও, সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণের দাবিতে সরব লাদাখের মানুষ। আগেই এই দাবির কথা তুলে ধরেছেন সোনম।
[আরও পড়ুন: জিটিএ-তে ভাঙন, ত্রিপাক্ষিক চুক্তি থেকে বেরতে চেয়ে রাজ্য সরকারকে চিঠি মোর্চার]
প্রধানমন্ত্রীর (Narendra Modi) কাছে সোনম আবেদন করেছিলেন, লাদাখে অত্যধিক শিল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। তার ফলে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সম্ভাবনা বাড়ছে। আপাতত মানুষের জীবিকার সুবিধা হলেও কয়েকদিনের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যাবে গোটা লাদাখ। তাই লাদাখ-সহ হিমালয়ের অন্যান্য অঞ্চলকে রক্ষা করতে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত প্রধানমন্ত্রীর। ভিডিওতে প্রধানমন্ত্রীকে সাফ বার্তা দিয়ে সোনম জানিয়েছিলেন, “আপনি হস্তক্ষেপ করুন। সংবিধানের ষষ্ঠ তফসিল অনুযায়ী লাদাখের প্রকৃতিকে বাঁচান।”
কিন্তু এবার সোনম জানাচ্ছেন, তাঁকে গৃহবন্দি করেছে প্রশাসন। দীর্ঘ ১৮ মিনিটের ভিডিওয় তাঁকে লাদাখের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলতে দেখা গিয়েছে। তাঁর কথায়, ”সমস্ত মানুষই কষ্টে রয়েছেন। যেমন যুব সম্প্রদায়ের কথাই ধরা যাক। তাঁরা চাকরি পাচ্ছেন না। ১২ হাজার চাকরির প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও চাকরি পেয়েছেন ৮০০ জন। তাও পুলিশে। মানুষকে অবদমন করে রাখার জন্য। চারদিকে প্রতিবাদ হচ্ছে। মানুষ ভয় পাচ্ছে।”
[আরও পড়ুন: ‘রামচন্দ্র এখন রাষ্ট্রনেতা’, মোদিকে রামের সঙ্গে তুলনা করে কটাক্ষের শিকার শিশির অধিকারী]
তাঁর তোপ মূলত লেফটেন্যান্ট গভর্নরের দিকে। তাঁর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে সোনমের দাবি, লাদাখের জন্য ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও প্রশাসন এমনই ঢিলেঢালা, তারা সেই টাকার যথোপযুক্ত প্রয়োগ করতে পারছে না। তাঁর আক্ষেপ, ”মানুষের এতে কোন অংশই নেই। কোনও গণতন্ত্র নেই।” প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত তাঁর কণ্ঠস্বর যাতে না পৌঁছয়, তাই এই পদক্ষেপ বলে দাবি সোনম। এই পরিস্থিতিতে ভিডিও বার্তার মাধ্যমে সকলের কাছে নিজের বক্তব্য পৌঁছে দিলেন তিনি।