দেব গোস্বামী, বোলপুর: ভারত যে হিন্দু রাষ্ট্র নয়, সেটা ভোটের রায়ে প্রতিফলিত হয়েছে। মত অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের। মোদি সরকারের কট্টর সমালোচক হিসাবে পরিচিত অর্থনীতিবিদ বলছেন, এবারের লোকসভা ভোটের রায়ে ভারতকে হিন্দু রাষ্ট্র (Hindu Rashtra) করার প্রচেষ্টা কিছুটা আটকানো গিয়েছে।
প্রতীচী ট্রাস্টের তরফে প্রায় প্রতি বছরই একটি আলোচনাচক্রের আয়োজন করা হয়। এ বার সেই আলোচনাচক্রের বিষয় ছিল, ‘কেন স্কুলে যাই: সহযোগিতার সহজ পাঠ’। শনিবার বোলপুরে জামবুনির একটি বেসরকারি ভবনে এই শীর্ষক আলোচনা সভায় অন্যতম বক্তা এবং শ্রোতা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ। প্রতীচী ট্রাস্টের মানবী মজুমদার, সৌমিক মুখোপাধ্যায়-সহ বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ জঁ দ্রেজ আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন। আলোচনা সভায় অমর্ত্য সেন (Amartya Sen) বলেন, "এখন সর্বত্র আলোচনার বিষয়বস্তু ভারতকে কি করে হিন্দু রাষ্ট্র করা যায়? জানা দরকার, স্কুলের কচিকাঁচাদের কাছে হিন্দু-মুসলিমের কোনও পার্থক্য নেই। তাই দেশে লোকসভা নির্বাচনে ভারতকে হিন্দুরাষ্ট্র করার প্রচেষ্টা থেকে আটকানো গেল।"
[আরও পড়ুন: রোহিত-বিরাটদের অবসরে কি বাড়তি চাপ? মুখ খুললেন নয়া অধিনায়ক শুভমান]
নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদের মতে, "এবারের লোকসভা নির্বাচনে (Lok Sabha 2024) ভারতবর্ষকে হিন্দু রাষ্ট্রে পরিণত করার প্রচেষ্টা দেখানো হয়েছে। কিন্তু ভারতবর্ষ যে হিন্দু রাষ্ট্র নয়, সেটারই প্রতিফলন ঘটেছে নির্বাচনে। যা মানতে পারেননি অনেকেই। ওরা এটা মানতে পারল না যে, যেখানে বড় মন্দির তৈরি হল, সেখানে এক জন ধর্মনিরপেক্ষ দলের প্রার্থী, হিন্দুরাষ্ট্র গড়ার দাবি তোলা প্রার্থীকে হারিয়ে দিয়েছেন।" অমর্ত্যর উদ্বেগ, "ধর্মের নামে ভারতে এখন বিভাজন বাড়ছে। জোর করে বুলি আওড়ানোর চেষ্টা, মারধরের রাজনীতি চলছে। এমন পরিস্থিতিতে এখন দেশে প্রয়োজন মানবাধিকার শিক্ষার। শিক্ষা ব্যবস্থার প্রধান অন্য দিক হওয়া উচিত। ধর্মীয় অসহিষ্ণুতা মোকাবিলায় মানবাধিকার শিক্ষার প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।"
[আরও পড়ুন: ফের পয়েন্ট নষ্ট মোহনবাগানের, রেনবোর কাছে আটকে গেল সবুজ-মেরুন]
মোদি সরকারের নতুন ন্যায় সংহিতা কার্যকর করার সিদ্ধান্তেরও প্রবল সমালোচনা করেন। তাঁর বক্তব্য, "একটা সংবিধান বদলাতে গেলে যে পরিমাণ আলোচনা দরকার, তার প্রমান চোখে পড়েনি।" পাশাপাশি দেশের নতুন শিক্ষানীতিতে নতুনত্ব কিছু নেই বলে আক্ষেপ করেন অধ্যাপক সেন।