সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দীর্ঘ প্রতীক্ষার পরে ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে কুখ্যাত জঙ্গি তাহাউর রানাকে। বৃহস্পতিবার ভারতে এসে পৌঁছবে সে। তারপরে রানার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করবে এনআইএ। জানা গিয়েছে, এনআইএর ডিরেক্টর জেনারেল সদানন্দ দাতের নেতৃত্বে তদন্ত চলবে। উল্লেখ্য, ২৬/১১ হামলার শিকার ছিলেন এই সদানন্দও।
২৬/১১ রাতে যেসব এলাকাগুলি কেঁপে উঠেছিল হামলায়, সেগুলির কোনওটিই সদানন্দের কর্মক্ষেত্রের আওতায় ছিল না। কিন্তু সেন্ট্রাল মুম্বইয়ের তৎকালীন এসিপি সেসব বেড়াজালের তোয়াক্কা করেননি। বাড়ি থেকে বেরিয়ে থানায় গিয়ে অস্ত্র তুলে নেন, সঙ্গে নেন ৬ জন পুলিশ আধিকারিককে। খবর পান, কামা অ্যান্ড আলব্লেস হাসপাতালের দিকে এগোচ্ছে জঙ্গিরা। সেখানে রওনা দেন সদানন্দও।
হাসপাতাল চত্বরে পৌঁছতেই আজমল কাসভ ও তার সঙ্গী আবু ইসমাইল গ্রেনেড ছোড়ে সদানন্দ ও তাঁর সঙ্গীদের লক্ষ্য করে। মৃত্যু হয় এক পুলিশ আধিকারিকের। আহত হন সদানন্দ ও তাঁর সঙ্গীরা। তবে আহত অবস্থাতেও জঙ্গিদের সঙ্গে গুলির লড়াই চালিয়ে যান তিনি। প্রায় ৪০ মিনিট সিঁড়িতে দাঁড়িয়ে গুলি চালান, যেন জঙ্গিরা এগিয়ে গিয়ে হাসপাতালের দখল নিতে না পারে। তার মধ্যে আরও একবার গ্রেনেডের আঘাতে ভয়ংকরভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় সদানন্দের পা এবং মুখ। সেই সুযোগেই হাসপাতাল থেকে পালায় কাসভ এবং ইসমাইল। অসামান্য বীরত্বের জন্য পরে পুরস্কৃতও হন সদানন্দ।
পুলিশ আধিকারিক হয়ে ওঠার যাত্রাটা মোটেও সহজ ছিল না সদানন্দের পক্ষে। ছোটবেলায় তাঁর মা পরিচারিকার কাজ করতেন। পড়াশোনার খরচ যোগাতে বাড়ি বাড়ি খবরের কাগজ বিলি করতেন সদানন্দ। অবশেষে ১৯৯০ সালে আইপিএস হন তিনি। দীর্ঘ কেরিয়ারে মুম্বই পুলিশ এবং সিবিআইয়ের একাধিক পদ সামলেছেন। মহারাষ্ট্রের জঙ্গি দমন স্কোয়াডেও ছিলেন। ২০২৩ সালে এনআইএর ডিরেক্টর জেনারেল পদে বসেন। এবার ২৬/১১ হামলার মূলচক্রীর বিরুদ্ধে তদন্তে নেতৃত্ব দেবেন তিনি।
