সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সুপ্রিম নির্দেশে নির্বাচনী বন্ড বন্ধ হলেও রাজনৈতিক দলগুলির চাঁদায় কোনও খামতি নেই। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে দেশের রাজনৈতিক দলগুলি ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের মাধ্যমে অনুদান পেয়েছে মোট ৩৮১১ কোটি টাকা। মোট ৯টি ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের প্রাপ্ত মোট অনুদানের মধ্যে সবচেয়ে উপরে রয়েছে বিজেপি। মোট অর্থের ৮২ শতাংশই গিয়েছে তাদের পকেটে। কংগ্রেস পেয়েছে ৮ শতাংশ। বাকি দলগুলি মিলিতভাবে পেয়েছে ১০ শতাংশ অনুদান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের কাছে ১৯টি নিবন্ধিত ইলেক্টোরাল ট্রাস্টের মধ্যে ১৩টির অনুদান সংক্রান্ত বিবরণ ছিল। এদের মধ্যে ৯টি ট্রাস্টের অনুদান সংক্রান্ত রিপোর্ট বলছে, তাদের প্রাপ্ত অনুদান ৩৮১১ কোটি টাকা। ২০২৩-২৪ সালে যেটা ছিল ১২১৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ এই ট্রাস্টের মাধ্যমে অনুদান বেড়েছে প্রায় ২০০ শতাংশ। মোট ৩৮১১ কোটি টাকা অনুদানের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৩১১২ কোটি টাকা। অন্যদিকে কংগ্রেস পেয়েছে ২০০ কোটি, এবং বাকি দলগুলি মিলিতভাবে পেয়েছে ৪০০ কোটি। বিজেপিকে সবচেয়ে বেশি অনুদান আদায় করে দিয়েছে প্রুডেন্ট ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট। ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে এই ট্রাস্ট পেয়েছে ২৬৬৮ কোটি টাকা। যার মধ্যে ২১৮০.০৭ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে বিজেপিকে।
এই ট্রাস্টকে অনুদান দিয়েছে জিন্দল স্টিল অ্যান্ড পাওয়ার, মেঘা ইঞ্জিনিয়ারিং, ভারতী এয়ারটেল, অরবিন্দ ফার্মা, টরেন্ট ফার্মাসিউটিক্যালসের মতো বড় সংস্থা। এই ট্রাস্ট থেকে বিজেপির পাশাপাশি অনুদান পেয়েছে কংগ্রেস, তৃণমূল, আপ, টিডিপি-সহ অন্যান্য দল। যদিও সিংহভাগ অর্থই গিয়েছে বিজেপির পকেটে। তালিকায় দ্বিতীয়স্থানে রয়েছে প্রোগ্রেসিভ ইলেক্টোরাল ট্রাস্ট। এদের প্রাপ্ত অনুদান ৯১৭ কোটি টাকা। যার মধ্যে ৯১৪.৯৭ কোটি টাকা এরা রাজনৈতিক দলগুলিকে দিয়েছে। সেই অর্থের ৮০.৮২ শতাংশ গিয়েছে বিজেপির খাতায়। এই ট্রাস্টে অনুদান দিয়েছে টাটা গ্রুপ। যার মধ্যে রয়েছে টাটা সন্স, টিসিএস, টাটা স্টিল, টাটা মোটরস এবং টাটা পাওয়ার।
উল্লেখ্য, ২০২৩-২৪ সালে বিজেপি মোট ৩,৯৬৭.১৪ কোটি টাকা অনুদান বাবদ পেয়েছিল, যার মধ্যে ১,৬৮৫.৬২ কোটি টাকা অর্থাৎ ৪৩ শতাংশ এসেছিল নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে। ২০২৪ সালে এই নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে সুপ্রিম কোর্ট। বন্ড বাতিল হওয়ার পর এখন বেসরকারি সংস্থা বা কোনও ব্যক্তি চেক, ডিমান্ড ড্রাফ্ট, ইউপিআই এবং ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলিকে অনুদান দিতে পারে। সেই অনুদান বিষয়ে নির্বাচন কমিশনে রিপোর্ট করতে হয় সমস্ত রাজনৈতিক দলকে।
