সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের উত্তরপ্রদেশে ধর্মীয় বিদ্বেষ এতটাই চরমে পৌঁছেছে যে, তা থেকে রক্ষা নেই শাসক বিজেপির সংখ্যালঘু নেতারও। আর সেই বিদ্বেষের বলি হলেন এক নিরীহ সাংবাদিক! বাড়িতে ঢুকে কুপিয়ে খুন করা হল তাঁকে। চলল গুলি। বন্ধুকে বাঁচাতে গিয়ে জখম হলেন বিজেপির সংখ্যালঘু সেলের ওই নেতা। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। ঘটনায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মৃত সাংবাদিকের নাম দিলীপ সাইনি (৩৮)। আক্রান্ত বিজেপি নেতা শাহিদ খান। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দিলীপের সঙ্গে সংখ্যালঘু শাহিদ খানের ঘনিষ্ঠতা নিয়ে আপত্তি ছিল অনেকের। যার জেরে তৈরি হয় পরিবারিক বিবাদ। সে কারণেই এই খুন কি না খতিয়ে দেখছে পুলিশ। বুধবার রাতে ঘটনাটি ঘটে উত্তরপ্রদেশের ফতেপুরে।
পুলিশ জানিয়েছে, হামলার সময় বাড়িতে বন্ধু শাহিদ খানের সঙ্গেই রাতের খাবার খাচ্ছিলেন দিলীপ। সেই সময়ে একটি ফোন আসে। দিলীপ ফোনে কথা বলার সময়ই দরজা ভেঙে আচমকা ঘরে ঢুকে পড়ে প্রায় ১৬ জনের একটি দল। ঢুকেই ছুরি দিয়ে কোপাতে থাকে তাঁকে! বন্ধু শাহিদ হামলাকারীদের বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁকেও আঘাত করে অভিযুক্তরা। ভয় দেখাতে কয়েক রাউন্ড গুলিও চালায় বলে অভিযোগ।
পুলিশ জানিয়েছে, দুজনকে প্রথমে জেলা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখান থেকে তাঁদের কানপুরের এক হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। হাসপাতালে যাওয়ার পথে মৃত্যু হয় দিলীপের। ফতেপুর পুলিশের প্রধান ধবল জয়সওয়াল বলেন, "দিলীপ সাইনিকে কোপানো হয়েছে। তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিক তদন্তের পর জানা গিয়েছে, মৃত অভিযুক্তদের চিনতেন। তাঁদের সঙ্গে কিছু নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। আমরা মামলা দায়ের করেছি। তদন্ত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে।"
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দিলীপ আর শাহিদ খানের ঘনিষ্ঠতা আর বন্ধুত্ব নিয়ে অনেকে আপত্তি ছিল। দিলীপকে এ নিয়ে বেশ কয়েকবার নিষেধ করেছেন বেশ কয়েকজন। এনিয়ে চলছিল পারিবারিক বিবাদও। পুলিশ সূত্রের খবর, লখনউ আর ফতেপুরে বেশ কিছু সম্পত্তির মালিক ছিলেন দিলীপ সাইনি। তা নিয়েও চলছিল বিবাদ। জানা গিয়েছে হামলাকারীদের ৯ জনই ছিল দুই বন্ধুর পরিচিত। বাকি কাউকেই চিনতেন না। তাই মনে করা হচ্ছে, দুষ্কৃতীরা লোক ভাড়া করেছিল। চারজনকে গ্রেপ্তার করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।