বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: মুর্শিদাবাদে অশান্তির আগুন নিয়ে বঙ্গ বিজেপিকে রাজ্যজুড়ে প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দিল দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রচার তুঙ্গে নিয়ে যেতে রাজ্য নেতৃত্ব কী পরিকল্পনা করেছে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ কথা বলেছেন বলে সূত্রের খবর। দু’জনের মধ্যে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, মহিলা কমিশন মুর্শিদাবাদে পাঠানোর বিষয়টি নিয়েও কথা হয় বলে জানা গিয়েছে। এছাড়াও, প্রয়োজনে সংসদীয় প্রতিনিধি দল পাঠানো হতে পারে বলে সূত্রের খবর।
মুর্শিদাবাদে ঘটে যাওয়া অশান্তির ওপর নজর রাখছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রতি মুহূর্তে রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছে দলের র্শীর্ষ নেতৃত্ব। এখনই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রাজ্যে গেলে প্রচারে তৃণমূল সুবিধা পেতে পারে। তাই প্রাথমিকভাবে মানবাধিকার কমিশন ও মহিলা কমিশনকে জেলায় পরিদর্শনে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে সংসদীয় দল পাঠানোর আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তবে কোনওভাবেই যাতে প্রচার হাতছাড়া না হয় সেদিকে নজর রেখে আন্দোলন গড়ে তোলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
গেরুয়া শিবির মনে করছে, গত বিধানসভা বা লোকসভায় মুর্শিদাবাদ ও মালদায় সবচেয়ে খারাপ ফল হয়েছে দলের। সংখ্যালঘু অধ্যুষিত জেলা হওয়ার কারণেই খারাপ ফল হয়। সংখ্যাগুরু ভোটারদের একত্র করতে না পারাও অন্যতম কারণ। সেক্ষেত্রে বিধানসভা ভোটের একবছর আগে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে হিন্দু ভোট আরও সংঘবদ্ধ করা যাবে। এই সুযোগ হাতছাড়া না করার নির্দেশ দিয়েছেন জে পি নাড্ডা ও বিএল সন্তোষ। ধারাবাহিকভাবে হিন্দু নিধন বা অত্যাচারের প্রচার চালিয়ে যেতে হবে। প্রতিদিন মুর্শিদাবাদ ও মালদায় রাজ্য নেতৃত্বের উপস্থিতি রাখতে হবে বলে দিল্লি। স্থানীয় নেতৃত্ব ও আশেপাশের জেলার সাংসদদেরও উপদ্রুত এলাকায় হাজির হওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। উত্তরবঙ্গের এক সাংসদ জানান, “ইতিমধ্যেই তাঁরা ত্রাণ নিয়ে আশ্রয় শিবিরে গিয়েছেন। আগামীতেও যাবেন।” সেইসঙ্গে নিজেদের সংসদীয় এলাকায় প্রচার তুঙ্গে তোলার নির্দেশ এসেছে বলে জানান তিনি।
চলতি বছরের শেষে বিহার ও বছর ঘুরলেই বাংলায় বিধানসভা ভোট। বিহারের লড়াই কঠিন না হলেও বিজেপির সামনে বড় বাধা বাংলা। সেখানে সংগঠন দিয়ে লড়াই করতে গেলে তৃণমূলের সঙ্গে পেরে ওঠা কঠিন। তাই একমাত্র ভরসা ধর্মীয় মেরুকরণ। মুর্শিদাবাদের ঘটনা মেরুকরণ করার রাস্তা আরও মসৃণ করেছে বলে ধারনা গেরুয়া শিবিরের শীর্ষ নেতৃত্বের। তাই বিষয়টি জিইয়ে রাখতে চায় দল। সেকারণে প্রতিদিনকার পরিস্থিতি ও রাজ্য পার্টি কী ধরণের কর্মসূচি নিচ্ছে সেই রিপোর্ট দিল্লির সদর দফতর পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এক সাংসদ।
