সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রথমে নিশিকান্ত দুবে। পরে দীনেশ শর্মা। বিচারব্যবস্থাকে নিশানা করে দলের দুই সাংসদের মন্তব্যে রীতিমতো অস্বস্তিতে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের দুই সাংসদের মন্তব্যের জেরে বিতর্কের জল এত দূর গড়িয়ে গিয়েছে যে শেষপর্যন্ত বাধ্য হয়ে বিবৃতি দিতে হল খোদ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডাকে। বিজেপি সভাপতি জানালেন, দুই সাংসদের বক্তব্য একান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত। দলের সঙ্গে এর কোনও সম্পর্ক নেই।
শনিবার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে ওয়াকফ আইন নিয়ে সুপ্রিম কোর্টকে নিশানা করে বলে দেন, ‘যদি আইন তৈরি করা সুপ্রিম কোর্টের কাজ হয় তাহলে সংসদ বন্ধ করে দিন।’ গোড্ডার বিজেপি সাংসদ প্রশ্ন তোলেন, "আপনাদের নিয়োগ করেছেন যাঁরা, আপনারা তাঁদের কী ভাবে নির্দেশ দিতে পারেন? আপনারা দেশকে নৈরাজ্যের দিকে নিয়ে যেতে চান।" আর এক বিজেপি সাংসদ দীনেশ শর্মাও কড়া সুরে নিশানা করেন বিচারব্যবস্থাকে। তিনি বলে দেন, "রাষ্ট্রপতিই ‘সুপ্রিম’, তাঁকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারে না।"
নিশিকান্ত-দীনেশদের ওই মন্তব্যর প্রতিবাদে নিমেষে আসরে নামে বিরোধী শিবির। কংগ্রেসের মানিকম ঠাকুর বলেন, “সুপ্রিম কোর্টের উদ্দেশে এই ধরনের মন্তব্য অবমাননাকর। নিশিকান্ত দুবে এমন একজন ব্যক্তি যিনি লাগাতার সাংবিধানিক সংস্থাগুলিকে নষ্ট করার চেষ্টা করেন। এখন সুপ্রিম কোর্টের উপর আক্রমণ করছেন। আশা করব বিচারপতিরা এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখবেন।" আসাদউদ্দিন ওয়েইসির সুর আরও চড়া। হায়দরাবাদের সাংসদ বলছেন, "আপনারা টিউবলাইট। যে ১৪২ ধারা বিআর আম্বেদকরের আনা। তিনি আপনাদের থেকে অনেক দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ছিলেন।" প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে ওয়েইসির বক্তব্য, "আপনার লোকজন এতটাই অসহিষ্ণু যে এঁরা সুপ্রিম কোর্টকেও আক্রমণ করছে। এদের না আটকালে দেশ দুর্বল হবে। দেশবাসী আপনাকে ক্ষমা করবে না।"
চাপের মুখে বিবৃতি দিতে বাধ্য হয় বিজেপি। খোদ দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা সোশাল মিডিয়ায় বার্তা দেন, 'দীনেশ শর্মা এবং নিশিকান্ত দুবের মন্তব্য নিতান্তই তাঁদের ব্যক্তিগত। দলের এর সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই। বিজেপি তাঁদের সঙ্গে একমত নয় এবং কখন এই ধরনের মন্তব্য সমর্থন করেনি।' নাড্ডা জানান, বিজেপি যে শুধু এই মন্তব্য খারিজ করছে তাই নয়, দলের সকলকে বলে দেওয়া হয়েছে ভবিষ্যতে যেন এই ধরনের মন্তব্য না করা হয়।
