সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কখনও ভুয়ো বিনিয়োগ প্রকল্প বা আংশিক সময়ের কাজের 'অফার', কখনও আবার ভুয়ো অনলাইনে গেমের প্ল্যাটফর্ম। নানা কৌশলে ফাঁদে ফেলা হয়েছে দেশের হাজার হাজার মানুষকে! প্রতারণা অঙ্কও হাজার কোটি ছাড়িয়ে গিয়েছে। এই মর্মে সাইবার প্রতারণা সংক্রান্ত একটি মামলায় চার্জশিট জমা দিল সিবিআই। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার চার্জশিটে অভিযুক্ত ১৭ জন। তাঁদের মধ্যে চার জন বিদেশি নাগরিক। কলকাঠিও নাড়া হত বিদেশ থেকে। মূল অভিযুক্ত তিন জনকে গত অক্টোবরেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সিবিআই জানিয়েছে, এই প্রতারণা কারবারে জড়িয়ে মোট ৫৮টি সংস্থা।
কর্নাটক, তামিলনাড়ু, কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, ঝাড়খণ্ড এবং হরিয়ানা মিলিয়ে মোট ২৭টি জায়গায় তল্লাশি অভিযান চালিয়েছিল সিবিআই। অভিযানের নাম 'অপারেশন চক্র-ভি'। সিবিআইয়ের তল্লাশি অভিযানে বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রচুর বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম, আর্থিক নথিপত্র। ফরেনসিক পরীক্ষাতেই বিদেশিদের যোগসাজশের প্রমাণ মিলেছে বলে জানিয়েছে সিবিআই। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, প্রতারণার কারবার চালানোর জন্য ১১১টি শেল কোম্পানি তৈরি করা হয়েছিল।
সিবিআই জানিয়েছে, কখনও মেসেজে, কখনও গুগলে বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে নাগরিকদের বিভিন্ন বিনিয়োগ প্রকল্পে টাকা ঢালা বা আংশিক সময়ের কাজের 'অফার' দেওয়া হত। কখনও কখনও মেজেস পাঠানো হত হোয়াট্সঅ্যাপেও। আবেদন করলেই ঋণ পাওয়া যাবে, এমন লোভও দেখানো হত। তাতেই বহু মানুষ আকৃষ্ট হয়ে প্রতারণার ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছেন। এর জন্য একাধিক অ্যাপও তৈরি করা হয়েছিল। এই ধরনের একাধিক অভিযোগের তদন্তে নেমে প্রাথমিক ভাবে সিবিআই মনে করেছিল, সবই বিচ্ছিন্ন ঘটনা। কিন্তু তদন্ত যত এগিয়েছে, ততই যোগসূত্র প্রকাশ্যে এসেছে। তদন্তকারীরা দেখেছেন, অধিকাংশ ঘটনাতেই একই মোবাইল অ্যাপ ব্যবহার করা হয়েছে। টাকাপয়সার লেনদেনও হয়েছে একই ভাবে। এ রকমই বিভিন্ন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথি ঘেঁটে হাজার কোটিরও বেশিও টাকার লেনদেন সম্পর্কে জানতে পারেন তদন্তকারীরা। তদন্তে দেখা যায়, খুবই অল্প সময়ের মধ্যে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে ১৫২ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে। এর পরেই গোটা প্রতারণাচক্র সামনে আসে।
তদন্তে যে চার বিদেশির জড়িত থাকার প্রমাণ পেয়েছে সিবিআই, তাঁদের নাম জউ ই, হুয়ান লিউ, ওয়েইজান লিউ এবং গুয়ানহুয়া ওয়াং। অভিযোগ, ২০২০ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত ভারতে একাধিক শেল কোম্পানি তৈরির নেপথ্যে তাঁদেরই হাত রয়েছে।
