সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা, ঠাকুমা করোনা আক্রান্ত। তাই তাঁরা দু’জনেই ভরতি রয়েছেন হাসপাতালে। বাবা শয্যাশায়ী। তবু মা, ঠাকুমার অনুপস্থিতিতে বাবাই ছিল বছর দশেকের খুদের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু বাড়িতেই আচমকা মৃত্যু হয় বাবার। একা বাড়িতে কী করা উচিত, তা ঠিক করতে পারেনি খুদে। পরিবর্তে মা, ঠাকুমার হাসপাতাল থেকে ফেরার অপেক্ষায় বাবার দেহ আগলে বসে রইল খুদে।
মা, স্ত্রী, সন্তানকে নিয়েই সংসার ছিল চেন্নাইয়ের ভিলুপ্পুরামের বছর পঁয়ত্রিশের বাসিন্দা আয়ানারের। জীবন চলছিল দিব্যি ছন্দে। কিন্তু আচমকাই এক পথ দুর্ঘটনা বদলে দিয়েছিল জীবনের চেনা ছক। দীর্ঘদিন চেন্নাইয়ের সরকারি হাসপাতালে শুয়ে লড়াই করে গিয়েছেম আয়ানার। প্রাণে বেঁচে গিয়েছেন, তবে আর শক্তি ফেরেনি হাতে-পায়ে। তাই তো বিছানাই একমাত্র সঙ্গী হয়ে গিয়েছিল তাঁর। করোনা ভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে যান ওই ব্যক্তি। বাড়ি ফিরে যান তিনি। কিন্তু সেখানেই শান্তি হল না। আচমকাই তাঁর মা এবং স্ত্রী হয়ে পড়লেন অসুস্থ। তাঁদের স্থানীয় এক হাসপাতালে ভরতিও করানো হল। উপসর্গ দেখে চিকিৎসকদের মনে হয়েছিল দু’জনেই করোনা আক্রান্ত। আশঙ্কাই যেন সত্যি হল! নমুনা পরীক্ষার পর জানা যায়, ওই দুই মহিলাই করোনা আক্রান্ত। তাই হাসপাতালেই ছিলেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: সিকিম সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা, ভারতীয় জওয়ানদের হাতে জখম চিনের ৭ সেনা]
এদিকে, বাড়িতে তখন মাত্র ১০ বছর বয়সি ছেলে জিভার সঙ্গে একা রয়েছেন আয়ানার। একদিন আচমকা মারা গেলেন তিনি। চোখের সামনে বাবার মৃত্যু আবার তার উপর বাড়িতে আর কেউ নেই, দু’য়ে মিলে আতঙ্কে কাঁটা খুদে। কি যে করবে বুঝতেই পারছে না সে। প্রতিবেশীদেরও বিষয়টি জানায়নি জিভা। পরিবর্তে বাবার মরদেহের সামনে ঠায় বসে রয়েছে সে। অপেক্ষা করছে কখন মা, ঠাকুমা ফিরে আসবেন। তবে প্রতিবেশীরা জেনে ফেলেন। সেই অনুযায়ী খবর পান মৃতের করোনা আক্রান্ত স্ত্রী ও মা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানান তাঁরা। শেষকৃত্যে থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন দু’জনেই।
ভিলুপ্পুরামের পুলিশ সুপার এস জয়কুমার বলেন, “ওই দুই মহিলা বাড়ির লোকজনদের থেকে দূরেই রয়েছেন। সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত সেখানেই থাকবেন তাঁরা। তবে কিন্তু পরিবারের এক সদস্যের মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছিলেন দু’জনে। তাই উপযুক্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই তাঁদের শেষকৃত্যে যোগদানের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। শেষকৃত্যের পর আবারও হাসপাতালেই ফিরে যাবেন তাঁরা।” ওই খুদে আপাতত তাঁর কাকার বাড়িতেই থাকবে। পুলিশের তরফে পাঁচ হাজার টাকা, ২০ কেজি চাল, সবজি এবং মুদিখানার সামগ্রী দেওয়া হয়েছে তাঁদের।
[আরও পড়ুন: আরোগ্য সেতুর সাহায্যে চিহ্নিত ৩০০টি নতুন হটস্পট! ঘোষণা নীতি আয়োগের প্রধানের]
The post করোনা আক্রান্ত মা-ঠাকুমা ভরতি হাসপাতালে, বাবার দেহ আগলে বসে রইল খুদে appeared first on Sangbad Pratidin.
