বুদ্ধদেব সেনগুপ্ত, নয়াদিল্লি: এপস্টেইন ফাইল নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি কংগ্রেসের। মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ও কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চৌহান দাবি করেন, এপস্টেইন ফাইলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নাম রয়েছে। বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারর বিবৃতিও দাবি করেন এই কংগ্রেস নেতা। মোদি ছাড়া ফাইলে পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী-সহ দেশের এক প্রথম সারির শিল্পপতি এবং একাধিক হাই প্রোফাইল নেতার নাম রয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। এই প্রসঙ্গে সানডে গার্ডিয়ানে একটি প্রতিবেদন ছাপা হয়। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০১৯ সালে মোদির সঙ্গে বৈঠক করতে চেয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রাক্তন পরামর্শদাতা স্টিভ ব্যানন। ব্যানন যান এপস্টেইনের কাছে। এটা এপস্টেইনের গ্রেপ্তারির মাস দুয়েক আগের ঘটনা। এপস্টেইন নিরাশ করেননি ব্যাননকে।
এপস্টেইন ফাইল নিয়ে উত্তাল আমেরিকা। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়েছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবার তার আঁচ লাগল ভারতেও। এপস্টেইন ফাইলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিরও নাম রয়েছে বলে দাবি করলেন কংগ্রেস নেতা পৃথ্বীরাজ চৌহান। এই নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বিবৃতি দাবি করেছেন তিনি। মোদির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম মন্ত্রী হরদীপ সিং পুরী এবং শিল্পপতি অনিল আম্বানির নামও এপস্টেইন ফাইলে রয়েছে অভিযোগ।
এপস্টেইন ফাইলে একাধিক ভারতীয় হাই প্রোফাইল নেতার নাম রয়েছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে সানডে গার্ডিয়ান। সেখান থেকেই হইচইয়ের সূত্রপাত। প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপস্টেইন জানান, তিনি চেষ্টা করবেন। তারপরে তিনি একটি বার্তা দেন ব্যাননকে। সেখানে বলেন, 'মোদী অনবোর্ড।' সানডে গার্ডিয়ানের দাবি, একটি ইমেল থেকে এই তথ্য জানতে পেরেছে তারা। এদিন মহারাষ্ট্রের সাতারায় সাংবাদিক সম্মেলনে গার্ডিয়ানের সেই প্রতিবেদন তুলে ধরে পৃথ্বীরাজ চৌহান প্রশ্ন তোলেন, 'ট্রাম্পের প্রাক্তন উপদেষ্টা যদি এপস্টেইন ঘনিষ্ঠ হন, তা হলে তাঁর সঙ্গে মোদির কী সম্পর্ক, এর উত্তর কেন্দ্রীয় সরকারকে দিতে হবে।'
উল্লেখ্য, এবারই প্রথম নয়। এপস্টেইন ফাইলে মোদির নাম রয়েছে বলে 'পাবলিক ইন্ডিয়া' নামে একটি ইউটিউব চ্যানেলে আগেই দাবি করেছিলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামীও। ২০১৭ সালের মার্চে আমেরিকা সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই সময়ে শিল্পপতি অনিল আম্বানি এপস্টেইনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন বলে মার্কিন ওভারসাইট কমিটির রেকর্ডে দাবি করা হয়েছে। একইসঙ্গে ২০১৪ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে এপস্টেইনের সাক্ষাৎসূচিতে অন্তত পাঁচবার হরদীপ সিং পুরীর নাম ছিল বলেও অভিযোগ। সেই সময়ে তিনি আন্তর্জাতিক পিস ইনস্টিটিউটের সভাপতি ছিলেন। তবে মোদি, হরদীপ সিং পুরী বা অনিল আম্বানির সঙ্গে এপস্টেইনের সাক্ষাতের কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত মেলেনি বলেই দাবি।
উল্লেখ্য, যৌন হেনস্থা, ধর্ষণ, নাবালিকা পাচার-সহ একাধিক মামলায় অভিযুক্ত এপস্টেইন। এদের মধ্যে বেশিরভাগই নাবালিকা। কমবেশি ৪০ জন মহিলা তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যৌন হেনস্থার অভিযোগ তুলেছিলেন। মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। ৪৫ বছরের কারাদণ্ড হয়। তবে ২০১৯ সালে জেলেই আত্মঘাতী হন এপস্টেইন। এপস্টেইনের সঙ্গে কাদের ওঠাবসা রয়েছে, সেই সম্পর্কে আদালতকে বিস্তারিত জানিয়েছিলেন ভার্জিনিয়া জিওফ্রে নামে এক মহিলা। ওই সব নথিপত্রে বিল ক্লিন্টন থেকে মাইকেল জ্যাকসন, ডোনাল্ড ট্রাম্প-সহ বিশ্বের তাবড় ব্যক্তিদের নাম রয়েছে বলে শোনা যায়। তবে তার সত্যি-মিথ্যা যাচাই হয়নি আজও।
