সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে তুলে ধরতে গিয়ে সংসদের গোটা শীতকালীন অধিবেশনটাই নষ্ট করেছে কংগ্রেস, গুরুতর এমনই অভিযোগ তুলে হাত শিবিরের বিরুদ্ধে সরব হলেন লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তাই নয়, সংসদে বিরোধী দল হিসেবে কংগ্রেস নিজের দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ বলে অভিযোগ তুললেন তিনি। সংসদ অধিবেশন নিয়ে তৃণমূলের এমন গুরুতর অভিযোগ আসলে ইন্ডিয়া জোটে ঝড়ের পূর্বাভাষ বলে মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল।
এবারের অধিবেশনের শুরু থেকেই আদানি ইস্যুকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমেছিল কংগ্রেস। যদিও তৃণমূল, সপা-সহ জোটের একাধিক শরিকের বক্তব্য ছিল আদানির চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ অনেক ইস্যু রয়েছে। সম্ভল, বেলাগাম মূল্যবৃদ্ধি-সহ সাধারণ মানুষের সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে সেই সব বিষয়গুলি তুলে ধরা হোক সংসদে। তবে কংগ্রেস কথা শোনেনি। যার ফল কংগ্রেসের ডাকা কর্মসূচিতে যোগ দিতে দেখা যায়নি জোটের শরিকদলগুলিকে। এর মাঝে ওয়ানড়ের উপনির্বাচনে জয়ী হতে প্রথমবার সংসদে পা রেখেছেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। তৃণমূলের অভিযোগ, তাঁকে জাতীয় রাজনীতিতে তুলে ধরতে গিয়ে অধিবেশনের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়েছে হাত শিবির। অধিবেশনে প্রিয়াঙ্কাকে কেন্দ্র করেই আবর্তিত হয়েছে কংগ্রেসের কর্মসূচি।
এ প্রসঙ্গেই লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "কোনও সন্দেহ নেই এবার সংসদে কিছু হল না। বিআর আম্বেদকরের ঘটনা গোটা দেশের মাথা নিচু করে দিয়েছে। আমরাও দাবি জানিয়েছি, অমিত শাহ মার্জনা চান। গত কয়েকদিন ধরে লোকসভা সদস্যের মাথা ফাটছে। এগুলো ভাবা যায় না। এক দেশ, এক ভোট সংসদে পেশ করা ছাড়া শাসকদলের তরফে এবার আর কিছু হয়নি। অন্যদিকে, কংগ্রেস প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে সংসদে তুলে ধরার চেষ্টায় সক্রিয় ছিল। এই দুইয়ের বাইরে আর কিছু হয়নি এবারের অধিবেশনে।" একইসঙ্গে তিনি বলেন, "অধিবেশন চলবে কিনা তা শাসকদলের উপর নির্ভর করে। এই অধিবেশনের ব্যর্থতার দায় শাসকদলকে নিতে হবে। তবে বিরোধী দল কংগ্রেস বাকি দলগুলিকে সঙ্গে নিয়ে কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছে। নিজেরা যে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে সেটাই অন্যদের কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছে। তবে আমরা যেটা যথার্থ বলে মনে করেছি সেটাই করেছি।"
কংগ্রেসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে তিনি আরও বলেন, "এক দেশ, এক ভোট বিল সংসদে পেশ হওয়ার দিনেই তো আমি আশ্চর্য হয়ে গেলাম। একদিকে মোদি অনুপস্থিত, অন্যদিকে রাহুল গান্ধী অনুপস্থিত। বিরোধী দলনেতার যদি এই ভূমিকা হয় তা অপ্রত্যাশিত। বিরোধী দল লোকসভায় কোনও কর্মসূচি পালন করলে তা আগে বিরোধী দলকে জানানো উচিত। কিন্তু যেদিন অধিবেশন সেদিন সকাল ১০টায় মিটিং ডেকে সেদিন সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ফলে অখিলেশ কিংবা আমি উপস্থিত হতে পারিনি। সব মিলিয়ে কংগ্রেস ইন্ডিয়া জোটের ভূমিকা রক্ষা ও বিরোধী দল হিসেবে প্রকৃত দায়িত্ব পালন করতে পারেনি সংসদে।"