সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আগামী ৩০ জানুয়ারি শেষ হচ্ছে কংগ্রেসের ভারত জোড়ো যাত্রা। বৃহস্পতিবার তা প্রবেশ করেছে জম্মু ও কাশ্মীরে (Jammu and Kashmir)। সেখানেই যাত্রার শেষ দিন জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবে শতাব্দীপ্রাচীন দলটি। কিন্তু সেটা দলীয় সদর দপ্তরে। ঐতিহাসিক লাল চকে নয়। একথা জানানোর সময় জম্মু ও কাশ্মীরে কংগ্রেসের দলীয় প্রধান রজনী পাটিল বলেছেন, লাল চকে জাতীয় পতাকা তোলা আসলে আরএসএসের এজেন্ডা। আর সেই কারণেই এমন পরিকল্পনা।
ঠিক কী বলেছেন রজনী? তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, ”আমরা আরএসএসের এজেন্ডায় বিশ্বাস করি না। তাই লাল চকে জাতীয় উত্তোলন করব না। সেখানে ইতিমধ্যেই জাতীয় পতাকা উড়ছে।” লাল চক থেকে এক কিলোমিটারেরও কম দূরত্বে অবস্থিত মৌলানা আজাদ রোডে রয়েছে কাশ্মীর প্রদেশ কংগ্রেস কমিটির সদর দপ্তর। সেখানেই পতাকা উত্তোলন করার পরিকল্পনা রয়েছে কংগ্রেসের।
[আরও পড়ুন: স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে অভিষেকের বৈঠক, ত্রিপুরায় নির্বাচনে ‘একলা চলা’র পথেই তৃণমূল]
প্রসঙ্গত, শ্রীনগরের একেবারে হৃদয়ে অবস্থিত লাল চক। চারপাশে অবস্থিত পার্ক, স্কুল ও সংবাদমাধ্যমের দপ্তর। একদা এখানেই জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু। সেটা ১৯৪৮ সাল। সেই ইতিহাসের কথা মাথায় রাখলে কংগ্রেসের সেখানে পতাকা তোলাকে ‘আরএসএসের এজেন্ডা’ বলাটা অনেকেরই বিসদৃশ ঠেকবে। এপ্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমকে রজনী বলেছেন, ”হ্যাঁ, পণ্ডিত নেহরু লাল চকে (Lal Chowk) পতাকা তুলেছিলেন। কিন্তু ১৯৯০ নাগাদ বিজেপির (BJP) মুরলি মনোহর যোশি লাল চকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। পরে সুষমা স্বরাজ ও অরুণ জেটলিও এখানে এসেছেন, তবে তাঁদের আটকে দেওয়া হয়। জাতীয় পতাকা যেখানে খুশি তোলা যায়। কিন্তু আমি বলতে চাই, যেখানে আমাদের নিজস্ব দপ্তরই রয়েছে, সেখানে আলাদা করে অন্যত্র তা তোলার মানে কী? আমরা কেন ৩৭০ ও লাল চকের মতো আরএসএসের এজেন্ডা মানব? আমরা শান্তির বার্তাই প্রচার করতে চাই।”
কংগ্রেসের (Congress) এহেন যুক্তিকে পালটা দিয়েছে বিজেপি। সংবাদমাধ্যমকে বিজেপি মুখপাত্র সুনীল শেঠি বলেছেন, ”লাল চকে পতাকা ওড়ানোটা ভারতীয় হিসেবে গর্বের, কেননা এটাই বিচ্ছিন্নতাবাদের নার্ভ সেন্টার। ওরা (কংগ্রেস) এই পরিস্থিতিটা তৈরি করেছে গত ৭০ বছরে। লাল চককে তুলে দিয়েছে বিচ্ছিন্নতাবাদী ও রাষ্ট্রদ্রোহীদের হাতে। এখানে পতাকা তোলা আরএসএসের এজেন্ডা নয়, সমস্ত ভারতবাসীর এজেন্ডা।”
বলে রাখা ভাল, গত ৭ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয়েছে ভারত জোড়ো যাত্রা। শুরু থেকেই এই যাত্রাকে নিয়ে কংগ্রেস উচ্চাকাঙ্ক্ষী। জনসংযোগ বাড়িয়ে হৃত জনসমর্থন পুনরুদ্ধারে ভারত জোড়ো যাত্রা (Bharat Jodo Yatra) শুরু করেছে শতাব্দীপ্রাচীন রাজনৈতিক দল। সুদীর্ঘ পথ ধরে মিছিলে হাঁটছেন রাহুল গান্ধী ও অগণিত কংগ্রেস সমর্থক। নানা জায়গায় সেই যাত্রায় যোগ দিয়েছেন একাধিক সেলিব্রিটি। ফলে জৌলুস আরও বেড়েছে ভারত জোড়ো যাত্রার। যা শেষ হবে এমাসেই।