সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: করোনা (Coronavirus) মোকাবিলায় উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর করুণ দশা ফের প্রকট হয়ে উঠল এলাহাবাদ হাই কোর্টের (Allahabad High Court) এক মন্তব্যে। রাজ্যের শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলে কোভিড পরিস্থিতিতে ‘রামই ভরসা’ বলে আক্ষেপ করতে দেখা গেল আদালতকে। এই মন্তব্যে ফের করোনা কালে যোগীরাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিয়ে উঠতে থাকা অভিযোগই যেন মান্যতা পেল।
মীরাটের এক হাসপাতালে ভরতি হওয়া এক করোনা রোগীর মৃত্যুর পরে সেই দেহটিকে বেওয়ারিশ বলে ঘোষণা করে দেয় কর্তৃপক্ষ। এই সংক্রান্ত এক মামলার শুনানি চলছিল বিচারপতি সিদ্ধার্থ ভার্মা ও বিচারপতি অজিত কুমারের বেঞ্চে। সেই শুনানির সময়ই এমন মন্তব্য করেন তাঁরা।
[আরও পড়ুন: কোভিড চিকিৎসায় প্লাজমা থেরাপি নয়, জানিয়ে দিল কেন্দ্র]
ঠিক কী হয়েছিল? অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২২ এপ্রিল হাসপাতালের শৌচাগারে হঠাৎই অচেতন হয়ে পড়েন সন্তোষ। পরে তাঁর চিকিৎসা শুরু হলেও বাঁচানো যায়নি তাঁকে। হাসপাতালের কর্মীরা চিনতে পারেননি তাঁকে। এমনকী, তাঁর ফাইলও খুঁজে পাওয়া যায়নি। এরপরই তাঁর দেহটি শনাক্ত করতে না পেরে ‘বেওয়ারিশ’ ঘোষণা করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
এই ঘটনা সম্পর্কে বলতে গিয়ে আদালত জানায়, যদি মীরাটের মতো শহরের একটি মেডিক্যাল কলেজের এই অবস্থা হয় তাহলে রাজ্যের শহরতলি ও গ্রামাঞ্চলে কোভিড সংক্রান্ত স্বাস্থ্য পরিকাঠামো ‘রামের ভরসা’য় রয়েছে। অর্থাৎ কার্যত ঈশ্বরের করুণাপ্রত্যাশী হয়ে রয়েছে।
রীতিমতো ভর্ৎসনার সুরে আদালত বলে, যদি ডাক্তার ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এই ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয় দিতে থাকেন, তাহলে তা অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। নিরীহ মানুষের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার মতো। যাঁরা এই ধরনের কাণ্ড ঘটিয়েছে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক রাজ্য। সেই সঙ্গে শহরতলি অঞ্চলে যে পরিকাঠামো অত্যন্ত খারাপ অবস্থায় রয়েছে সেবিষয়ে আদালত নিঃসন্দেহ বলে জানান বিচারপতিরা। তাছাড়া গ্রামাঞ্চলে যে জীবনদায়ী ওষুধের তীব্র অভাব রয়েছে তাও জানিয়ে দেন তাঁরা।
উত্তরপ্রদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে অনেক দিন ধরেই উদ্বেগ রয়েছে। যদিও মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ জানিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের রাজ্যে অক্সিজেনের ঘাটতি নেই। হাসপাতালের বেড নিয়েও সমস্যা নেই। কিন্তু বারবার অভিযোগ উঠেছে রাজ্যের বেহাল করোনা পরিস্থিতি নিয়ে। সম্প্রতি নতুন করে বিতর্ক ঘনিয়েছে নদীতে ভেসে যাওয়া মৃতদেহের সারি নিয়ে।