স্টাফ রিপোর্টার: কোথাও নোটার (NOTA) চেয়েও ভোট কম, কোথাও আবার নোটার সঙ্গে সমানে সমানে লড়াই। চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে হাস্যকর ও লজ্জাজনক ফলাফল সিপিএমের। সারা দেশ থেকে সিপিএম (CPM) যে ক্রমশ নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে, সেটাই আরেকবার প্রমাণ হয়ে গেল সদ্যসমাপ্ত চার রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে। কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা না হওয়ায় একা লড়েছিল সিপিএম। বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে কংগ্রেস যেমন পর্যদস্তু হয়েছে, তেমনই বামেরা আবার কোনও লড়াই দিতেই পারেনি।
মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, তেলেঙ্গানা ও ছত্তিশগড় – এই চার রাজ্যে এবার সিপিএমের ঝুলি শূন্য। সিপিআই একটিমাত্র আসন পেয়েছে। সেটা তেলেঙ্গানায়, কংগ্রেসের সঙ্গে সমঝোতা করে। তেলেঙ্গানার (Telengana) কোঠাগুদা আসনে সে রাজ্যের সিপিআইয়ের রাজ্য সম্পাদক কুনামনেনি শম্ভাশিব রাও জয়ী হয়েছেন। তবে সিপিআই আবার এখানে হারিয়েছে ফরওয়ার্ড ব্লক প্রার্থীকে। চার রাজ্যে আলাদাভাবে লড়েছিল সিপিএম। বাংলায় যতই ‘হাত’ শিবিরের সঙ্গে সিপিএমের মাখামাখি থাকুক না কেন, রাজস্থান, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ ও তেলেঙ্গানায় সিপিএমের সঙ্গে সমঝোতার ক্ষেত্রে কিন্তু কোনও আগ্রহই দেখায়নি কংগ্রেস(Congress)।
[আরও পড়ুন: জাতীয় সংগীতের মতোই দাঁড়িয়ে গাইতে হবে ‘বাংলার মাটি বাংলার জল’, ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর]
রাজস্থানের (Rajasthan) দুটি আসন ভাদরা ও দুঙ্গরগড় সিপিএমের দখলে থাকলেও এবার হাতছাড়া হয়েছে। প্রাক্তন সিপিএম বিধায়ক পেমা রাম জিততে পারেননি। গতবার রাজস্থানে দুটি আসনে জয় থাকলেও এবার ১৭টি আসনে লড়েও ঝোলা শূন্য সিপিএমের। প্রাপ্ত ভোটের হার কমে গিয়ে ০.৯৬ শতাংশ হয়েছে। নোটাতেও প্রায় একইরকম ভোট পড়েছে। রাজস্থান সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক অমরা রামের বক্তব্য, ‘‘মেরুকরণের বিরুদ্ধে আমরা আমাদের কথা বলে লড়াই করেছি। আর এখানে কংগ্রেস আর বিজেপির বিরুদ্ধেই তো আমরা লড়ি। তাই এবার একাই লড়েছিলাম।’’
[আরও পড়ুন: বিয়ে বিতর্ককে হাওয়ায় উড়িয়ে হানিমুনে পরম-পিয়া! কোথায় গেলেন দম্পতি?]
মরুরাজ্য ছাড়া বাকি তিন রাজ্যে নোটার চেয়েও ভোট কম পেয়েছে সিপিএম। সূত্রের খবর, তেলেঙ্গানায় সিপিএম পেয়েছে ০.২২ শতাংশ, মধ্যপ্রদেশে ০.০১ শতাংশ ও ছত্তিশগড়ে সিপিএমের প্রাপ্ত ভোট ০.০৪ শতাংশ ভোট। ফলে চার রাজ্যের সিপিএমের এই হাল নিয়ে পার্টির একাংশ কংগ্রেসের অসহযোগিতাকে দায়ী করেছে। চার রাজ্যের ফল প্রকাশের পরই কংগ্রেসের ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছে পার্টির একাংশ। বিজেপি বিরোধী দলগুলির সঙ্গে সমঝোতা করতে না চাওয়ায় কংগ্রেসের এই ভূমিকাকেই কাঠগড়ায় তুলেছে সিপিএম। ‘ইন্ডিয়া’ জোট ধর্ম বজায় রাখতে প্রকাশ্যে সিপিএম নেতৃত্ব মুখ না খুললেও পার্টির মধ্যে তারা কংগ্রেসের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে খবর।
সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীর (Sujan Chakraborty) বক্তব্য, ‘‘সারা দেশে বিজেপি বিরোধী শক্তিকে আরও ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’’ কিন্তু কংগ্রেস যে বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে এক জায়গায় নেওয়ার মনোভাব দেখায়নি, তা নিয়ে অবশ্য কিছু বলতে চাননি সিপিএম নেতৃত্ব। সিপিএম সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরির কথায়, “মানুষের জীবন-জীবিকার লড়াইকে গুরুত্ব দিতে হবে। ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলিকে আরও একজোট হতে হবে।”