সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জতুগৃহে পরিণত হয়েছে উত্তর দিল্লির রানি ঝাঁসি রোডে আনাজ মান্ডির ব্যাগ কারখানা। শনিবারও যেখানে দিনভর ছিল কাজের পরিবেশ, আজ তা পুড়ে ছাড়খাড়। ভয়ংকর অগ্নিকাণ্ডে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৪৩ জন। গোটা ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। ইতিমধ্যেই নিহত ও আহতদের পরিবারের জন্য অর্থ সাহায্যের ঘোষণা করেছেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল।
এদিন ভোর ৫টা নাগাদ কলকাতার বাগরি মার্কেটের স্মৃতি ফেরে রাজধানীতে। আনাজ মান্ডির চারতলার বিল্ডিংটিতে আগুন লেগে যায়। যেখানে ছিল ব্যাগ তৈরির কারখানা। সেই সময় কারখানার ভিতর ঘুমাচ্ছিলেন শ্রমিকরা। আচমকা আগুনের স্ফুলিঙ্গে ঘুম ভাঙে তাঁদের। চোখ খুলেই দেখেন ভিতরে দাউদাউ করে আগুন জ্বলছে। মিনিট ২২ খবর পায় দমকলবাহিনী। বেশ কয়েক ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে দমকলের মোট ৩০টি ইঞ্জিন।
[আরও পড়ুন: লাগাতার যৌন নির্যাতনের প্রতিশোধ! বাবাকে খুনের পর গোপনাঙ্গ কাটল দত্তক কন্যা]
ধোঁয়া আর কুয়াশায় জনবহুল এলাকায় আগুন নেভাতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হয় দমকলকর্মীদের। উদ্ধার কাজেও বেগ পেতে হয় পুলিশকে। আশেপাশে প্রচুর প্লাস্টিক জাতীয় জিনিস মজুত থাকায় গোটা এলাকা ধোঁয়ায় ভরে যায়। রাস্তা সরু হওয়ায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢুকতে সমস্যায় পড়ে। তার উপর রাস্তার দু’ধারে সারি সারি করে রাখা মোটরবাইক। ফলে ভিতরে আটকে পড়া বাসিন্দাদের বের করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেকটা সময় নষ্ট হয়ে যায়। শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছে বলে প্রাথমিকভাবে মনে করা হচ্ছে। দিল্লি পুলিশের পিআরও এমএস রান্ধাওয়া জানাচ্ছেন, উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দল ইতিমধ্যেই গোটা বিল্ডিংয়ে তল্লাশি চালিয়েছে। কেউ কোথাও আটকে নেই বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। অনুমতি ছাড়াই কারখানায় কাজ চলছিল। তাই মালিকদের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়েছে। শীঘ্রই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হবে। গোটা বিষয়টি তদন্তের ভার দেওয়া হয়েছে দিল্লি পুলিশের অপরাধদমন শাখাকে।
এদিকে, ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল ঘুরে দেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী কেজরিওয়াল। হাসপাতালে আহতদের সঙ্গেও দেখা করেছেন তিনি। এমন মর্মান্তিক ঘটনায় শোকস্তব্ধ কেজরি বলেন, “অত্যন্ত দুঃখের ঘটনা। বিচার বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। মৃতদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা অর্থ সাহায্য দেওয়া হবে। প্রত্যেক আহতের পরিবার পাবে এক লক্ষ টাকা। এছাড়া সরকারি খরচেই আক্রান্তদের চিকিৎসা হবে।”
[আরও পড়ুন: ‘যোগী আসুন, নইলে শেষকৃত্য নয়’, দাঁতে দাঁত চেপে বলছে উন্নাওয়ে নিহত তরুণীর পরিবার]
আপাতত অন্যান্য বিল্ডিংয়ের বাসিন্দাদেরও অন্য নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনায় এখনও আতঙ্কে স্থানীয়রা। টুইটারে দুঃখপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। লেখেন, “এমন আগুনের ঘটনা অত্যন্ত ভয়ংকর। নিহতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। সরকার সমস্ত রকম সাহায্য করছে।” কেন্দ্রের তরফে নিহতের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা করে অর্থ সাহায্যের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আর গুরুতর আক্রান্তরা প্রত্যেকে পাবেন ৫০ হাজার টাকা। আক্রান্তদের পরিবারের প্রতি সহানুভূতি জানিয়ে টুইট করেছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী, প্রত্যেকেই।
The post নিরাপত্তার গলদেই এতবড় অগ্নিকাণ্ড, হতাহতদের আর্থিক সাহায্য ঘোষণা দিল্লির appeared first on Sangbad Pratidin.