সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: যেন শীত আর দুষণের প্রতিযোগিতা! দিল্লিতে যত শীত বাড়ছে, তত লাফিয়ে বাড়ছে দূষণের মাত্রা। শ্বাসকষ্টের পাশাপাশি চোখ জ্বালা ও লাল হয়ে যাওয়া রাজধানীর নাগরিকদের অন্যতম উপসর্গ। এর ফলে পৌষমাস এক শ্রেণির ব্যবসায়ীর। দিল্লির ওষুধের দোকানে চোখের ড্রপ (eye drops), মাস্ক এবং নেবুলাইজারের বিক্রি বাড়ছে।
এই ঘটনা অবশ্য নতুন নয়, প্রতিবার শীতে সময় দূষণ বাড়ে, তখন শ্বাসকষ্ট এবং চোখের সমস্যায় কাজে আসা সামগ্রীর বিক্রি বাড়ে দিল্লিতে। লুটিয়েন্স দিল্লির কেয়ার কেমিস্টস-এর কর্মী সুরেশ জানান, “দূষণের মাত্রা বাড়লেই চোখের ড্রপ, নাকের স্প্রে আর মাস্কের বিক্রি বেড়ে যায়। সাধারণত কাশি-সিরাপ বেশি বিক্রি হয়, কিন্তু এবার চোখের ড্রপ সবচেয়ে দ্রুত বিকোচ্ছে।”
আরএমএল হাসপাতালের কাছেই রয়েছে রাম ফার্মাসি। সেখানকার কেমিস্ট শ্রাবণ বলছেন, “এখন রোজই মানুষ চোখে জ্বালা, লালচে ভাবের অভিযোগ নিয়ে দোকানে আসছেন। চোখের ড্রপ, স্টিম নেওয়ার যন্ত্র আর নাসাল স্প্রের বিক্রি স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই বেড়ে গিয়েছে।” রাজকমল কেমিস্টের কর্মী অমিত গুপ্তা বলছেন, "চোখের ড্রপ বিক্রির অন্যতম কারণ শীতের শুষ্ক আবহাওয়া এবং দূষণ।" তিনি জানান, চলতি বছরে আই ড্রপ বিক্রি দশ থেকে পনেরো শতাংশ বেড়েছে।
দিল্লি ড্রাগ ট্রেডার্স অ্যাসোসিয়েশের সম্পাদক আশিস দাভরাজও জানান, “প্রতি বছর শীত পড়লেই এবং দূষণ বাড়লেই চোখের ড্রপ, মাস্কের মতো পণ্যের বিক্রি বেড়ে যায়। এই সময়ে চোখে জ্বালা ও অস্বস্তির অভিযোগ খুব সাধারণ ব্যাপার, আর বিক্রি গড়ে পনেরো শতাংশ পর্যন্ত বাড়ে।”
সুপ্রিম কোর্ট ও দিল্লি সরকার একাধিক নির্দেশিকা জারি করলেও দিল্লির দূষণ বাড়ছে বৈ কমছে না। এমনকী দূষণ প্রসঙ্গে সংসদে আলোচনার প্রস্তাব দেন বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বিরোধীরা সবরকমের সাহায্য করবেন বলেও জানান তিনি। প্রস্তাবিত বিষয়টি বিবেচনার আশ্বাসও দেয় সরকার পক্ষ। রাজধানীর দূষণ মাত্রাতিরিক্ত হওয়ায় হলুদ সতর্কতা জারি করে মৌসম ভবন। দিল্লি ও আশেপাশের হরিয়ানা ও উত্তরপ্রদেশের বেশ কয়েকটি জায়গায় দৃশ্যমানতা প্রায় তলানিতে ঠেকেছে। প্রতিদিন বাতিল হচ্ছে অসংখ্য বিমান ও ট্রেন। দৃশ্যমানতার অভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে জাতীয় সড়কগুলিতে। সব মিলিয়ে দূষণ থেকে মুক্তির পথে পাচ্ছে না দিল্লি।
