সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারত-পাকিস্তানের সংঘর্ষ বিরতির নেপথ্যে আমেরিকার চাপ? কাশ্মীর ইস্যুতে মধ্যস্থতা করবে ডোনাল্ড ট্রাম্প? সংঘর্ষ বিরতি কার্যকর হতেই উঠছিল একের পর এক প্রশ্ন। বুধবার সেই সমস্ত প্রশ্নের সপাট জবাব দিল বিদেশমন্ত্রক। জানিয়ে দিল, সংঘর্ষবিরতির সঙ্গে ব্যবসার কোনও সম্পর্ক নেই। তবে মার্কিন নেতৃত্বের সঙ্গে ভারতীয় নেতৃত্বের বিস্তর আলোচনা হয়েছে। এর পাশাপাশি কাশ্মীর নিয়েও নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করে দিল সরকার। জানিয়ে দিল, কাশ্মীর দ্বিপাক্ষিক ইস্যু ছিল, আছে এবং থাকবে।
মঙ্গলবার বিকেলে সাংবাদিক সম্মেলন করেন বিদেশমন্ত্রকের সচিব রণধীর জয়সওয়াল। স্বাভাবিকভাবেই সাংবাদিকরা প্রশ্ন তোলেন, মার্কিন প্রেসিডেন্টের চাপের কাছেই কি মাথা নুইয়েছে ভারত? জবাবে বিদেশ সচিব বলেন, "৭ মে, অপারেশন সিঁদুরের শুরু থেকে ১০ মে, সংঘর্ষবিরতি ঘোষণা পর্যন্ত আমেরিকা এবং ভারতের নেতৃত্বের মধ্যে লাগাতার কথা হয়েছে। তৎকালীন উদ্ভুত সামরিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে বারবার। কিন্তু কোনও আলোচনায় ব্যবসার কথা উঠে আসেনি।"
এ প্রসঙ্গে বলে রাখা দরকার, গত শনিবারও ট্রাম্পের দাবি ছিল তিনিই যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতা করেছেন। বলেছিলেন, “গোটা রাত দীর্ঘ আলোচনার পর দুই দেশই এই মুহূর্ত থেকে সম্পূর্ণরূপে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে। সঠিক সময়ে বাস্তবজ্ঞান কাজে লাগানোয় দুপক্ষকে শুভেচ্ছা।” তারপর সোমবার তিনি দাবি করেন, “পরমাণু শক্তিধর দুই দেশকে চাপ দিয়ে সংঘর্ষবিরতি করেছি। যুদ্ধ না থামালে বাণিজ্যেও না, হুঁশিয়ারি দিয়েছিলাম। তাতেই কাজ হয়েছে।” ট্রাম্প স্পষ্ট বলেন, "আমিই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামিয়েছি। উভয় দেশের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজন।" তাঁর এই দাবি নিয়ে বিরোধীরাও বিঁধছিল সরকারকে। এবার বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট বার্তা দিল বিদেশমন্ত্রক।
সাফ জানাল, "কাশ্মীর নিয়ে এখনও একই অবস্থান ভারতের। কাশ্মীর ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক ইস্যু। এ বিষয়ে তৃতীয় কোনও শক্তির মধ্যস্থতা সহ্য করবে না নয়াদিল্লি। পাকিস্তানের সঙ্গে একমাত্র একটি ইস্যুতেই কথা হতে পারে-পাক অধিকৃত কাশ্মীর ফেরানো। অন্য কোনও বিষয়ে নয়।"
উল্লেখ্য, যে কোনও দেশে ভারত-পাকিস্তানের মতো সামরিক পরিস্থিতি তৈরি হলে তা আন্তর্জাতিক মঞ্চে জানানো উচিত। ভারত বরাবরই এটা করে এসেছে। ২২ এপ্রিল পহেলগাঁও হামলার পর থেকেই আমেরিকার পাশাপাশি ব্রিটেন, ফ্রান্স, রাশিয়া এমনকী, চিনের সঙ্গেও কথোপকথন চালিয়ে এসেছে। তাই আমেরিকার সঙ্গে ফোনালাপকে অন্যমাত্রা দিতে রাজি নয় নয়াদিল্লি।
