নন্দিতা রায়, নয়াদিল্লি: রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার দাবি জানিয়েছেন, গঙ্গাসাগর মেলাকে 'জাতীয় মেলা' তকমা দেওয়া হোক। কিন্তু সোমবার লোকসভায় তৃণমূল সাংসদ বাপি হালদারের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্র জানিয়ে দিল এমন কোনও পরিকল্পনা নেই কেন্দ্রের।
বাপি হালদার লিখিত প্রশ্নে জানতে চেয়েছিলেন এমন গঙ্গাসাগর মেলাকে 'জাতীয় মেলা'র স্বীকৃতি দেওয়া নিয়ে কী ভাবছে কেন্দ্র। এই প্রশ্নের উত্তরে কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত জানালেন, এমন কোনও পরিকল্পনা নেই। পরে সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলে তিনি ক্ষোভ উগরে কেন্দ্রকে 'বাংলা-বিরোধী' বলে তোপ দাগেন।
প্রসঙ্গত, কুম্ভমেলার সঙ্গে তুলনা করে এর আগে একাধিক বার গঙ্গাসাগরকে জাতীয় মেলা ঘোষণা করার দাবি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হয়েছিলেন তৃণমূল সাংসদেরাও। অভিযোগ তোলা হয়, কেন্দ্রের বৈমাতৃসুলভ আচরণের জেরেই উপেক্ষিত গঙ্গাসাগর। অথচ প্রতিবছর এই মেলায় ভিড় জমান লক্ষ লক্ষ সাধু-সন্ত ও ভক্তরা। গঙ্গাসাগর মেলার পৌরাণিক, ঐতিহাসিক এবং প্রত্নতাত্ত্বিক গুরুত্ব অস্বীকার করার কোনও জায়গা নেই। তারপরও কেন্দ্রের এই বঞ্চনা আসলে বাংলার প্রতি বঞ্চনার এক জ্বলন্ত উদাহরণ বলে অভিযোগ তুলছে তৃণমূল।
বলে রাখা ভালো, ২০২৫ সালের ১৫ জানুয়ারি শেষ হয়েছিল এবারের গঙ্গাসাগর মেলা। এবার মোক্ষলাভের আশায় গঙ্গাসাগরে এক কোটি ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী ডুব দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি মুহূর্তে নজরদারি ও নির্দেশমতো বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রী, জেলা প্রশাসন, পুলিশ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি সক্রিয়ভাবে কাজ করেছে। এ বছর সাগরদ্বীপের রাস্তায় ১০০টি সৌরবিদ্যুৎচালিত আলোর ব্যবস্থা করা হয়। মেলা প্রাঙ্গণ দূষণমুক্ত ও পরিচ্ছন্ন রাখতে চারটি প্লাস্টিক বোতল কাটার মেশিনও বসানো হয়। সমুদ্রতট পরিষ্কার রাখতে তিন হাজারেরও বেশি সৈকতপ্রহরী নিযুক্ত করা হয়েছিল।
এদিকে এদিনই রাজ্যসভায় তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্য়ায় এক লিখিত প্রশ্নে জানতে চান, বাংলাদেশের সঙ্গে জলবণ্টন করার ফলে গঙ্গার চরিত্র বদল ঘটছে কিনা। সেই প্রশ্নের উত্তরে জলশক্তি মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী রাজভুষণ চৌধুরী জানিয়ে দেন, এখনও পর্যন্ত এমন কোনও তথ্যপ্রমাণ মেলেনি।
