সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: স্বামী যৌন নির্যাতন করলে সেটাও ধর্ষণ। সাফ জানিয়ে দিল গুজরাট হাই কোর্ট (Gujarat High Court)। আদালতের পর্যবেক্ষণ, কোনও ব্যক্তি যদি মহিলাকে যৌন নির্যাতন করে তাহলে ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। যদি হেনস্তাকারী ও নির্যাতিতার মধ্যে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক থাকে তাহলেও সেটা ধর্ষণ। সেই সঙ্গে আদালত আরও জানায়, ভারতে মহিলাদের উপর নির্যাতনের অধিকাংশ ঘটনাই প্রকাশ্যে আসে না। উল্লেখ্য, রাজকোটের এক মহিলার অভিযোগের ভিত্তিতেই এই পর্যবেক্ষণ করেছে গুজরাট হাই কোর্ট।
গত বছর রাজকোটের এক ব্যক্তির সঙ্গে বিয়ে হয় আবেদনকারীর। তাঁর অভিযোগ, তাঁর ঘরে ক্যামেরা লাগিয়ে ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ছবি তুলেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এমনকি ঘনিষ্ঠ ছবি তুলে পর্ন সাইটে বিক্রি করেছেন স্বামী, এমনটাও অভিযোগ করেছেন তিনি। পরিবারের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপেও এই ছবি ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গোটা ঘটনার জেরে আবেদনকারীর স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। জামিন চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন আবেদনকারীর শাশুড়ি।
[আরও পড়ুন: ইন্ডিয়া বৈঠকের আগেই আসন রফা নিয়ে কংগ্রেসকে বার্তা ‘উদার’ মমতার]
জামিনের সওয়াল জবাব চলাকালীনই আইনজীবী বলেন, ভারতীয় দণ্ডবিধি অনুযায়ী বৈবাহিক ধর্ষণ শাস্তিযোগ্য অপরাধ নয়। এই কথার তীব্র বিরোধিতা করেন আদালতের বিচারপতি ডি এ যোশী। তিনি সাফ জানান, “স্বামী হোক বা যেই হোক, সে আসলে একজন পুরুষ। সে যদি কোনও মহিলাকে ধর্ষণ করলে সেটা ধর্ষণই হয়। নির্যাতিতা যদি ওই ব্যক্তির স্ত্রী হন তাহলেও সেটা ধর্ষণ, শাস্তিযোগ্য অপরাধ।” এই পর্যবেক্ষণের পর আবেদনকারীর শাশুড়ির জামিন খারিজ করে দেয় গুজরাট হাই কোর্ট।
উল্লেখ্য, বৈবাহিক ধর্ষণকে (Marital Rape) শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে মনে করে একাধিক দেশ। ভারতেও সেই একই পদক্ষেপ করা হোক, এমন দাবি উঠছে বহুদিন ধরেই। কিন্তু এখনও বৈবাহিক ধর্ষণের পক্ষেই সওয়াল করেছে বেশ কিছু আদালত। কয়েকদিন আগেই এলাহাবাদ হাই কোর্ট জানায়, স্ত্রীর বয়স যদি ১৮ বছর কিংবা তার বেশি হয়, তাহলে আইন অনুযায়ী বৈবাহিক ধর্ষণ অপরাধ নয়। এক্ষেত্রে স্বামীকে কোনও প্রকার শাস্তি কিংবা জরিমানা করা যায় না। তবে বৈবাহিক ধর্ষণের বিষয়টি অপরাধের আওতায় ফেলা হবে কি না, সেই সংক্রান্ত মামলা এখনও সুপ্রিম কোর্টের (Supreme Court) বিচারাধীন।