সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতের মানচিত্র থেকেই মুছে যেতে পারে হিমাচল প্রদেশ! এমন আশঙ্কা প্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। উত্তর ভারতের রাজ্যটির প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, সেই কথা মাথায় রেখেই এমন আশঙ্কা শীর্ষ আদালতের। দুই বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, কেবল রাজস্ব আদায়ের দিকে মন দিলে চলবে না। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে প্রকৃতির দিকে নজর দিতে হবে।
হিমাচল প্রদেশ হাই কোর্টের একটি নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে পিটিশন দায়ের হয় সুপ্রিম কোর্টে। কী জানিয়েছিল উচ্চ আদালত? আসলে চলতি বছরের জুন মাসে হিমাচল প্রদেশ সরকার একটি নির্দেশিকা জারি করে। সেখানে বলা হয়, নির্দিষ্ট কয়েকটি এলাকাকে গ্রিন এরিয়া বলে ঘোষণা করতে হবে। মূলত ওই এলাকাগুলির নির্মাণশিল্পে রাশ টানতেই এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সরকার। কিন্তু সরকারি নির্দেশিকার বিরোধিতা করে হিমাচল প্রদেশ আদালতে আবেদন জমা পড়ে। সেই আবেদনে কোনও পদক্ষেপ করতে চায়নি উচ্চ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি জেবি পারদিওয়ালা এবং আর মহাদেবনের বেঞ্চে এই পিটিশনের শুনানি শুরু হয়। দুই বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, "কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয়কেই মনে করিয়ে দিতে চাই, রাজস্ব আদায় করাটাই সবকিছু নয়। প্রকৃতি এবং বাস্তুতন্ত্রকে ক্ষতিগ্রস্ত করে রাজস্ব আদায় করা যায় না। বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী যদি সবকিছু চলতে থাকে তাহলে খুব দ্রুত এমন দিন আসতে চলেছে যেদিন ভারতের মানচিত্র থেকে হিমাচল প্রদেশ হয়তো মুছে যাবে। ঈশ্বর করুন এমন দিন যেন দেখতে না হয়। হিমাচল প্রদেশের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। যেভাবে প্রাকৃতিক ভারসাম্য নষ্ট হয়েছে তার জেরেই গত কয়েক বছর ধরে প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে আসছে।"
উল্লেখ্য, গত কয়েকবছর ধরেই ধস, হড়পা বান, অতিবৃষ্টির মতো নানা বিপর্যয় নেমে এসেছে হিমাচলে। মাসখানেক আগেই প্রচণ্ড বৃষ্টির জেরে বন্যায় ১৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে সেখানে। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ, যোগাযোগ এবং পর্যটনের কথা মাথায় রেখে সাম্প্রতিক অতীতে প্রচুর নির্মাণ হয়েছে পাহাড়ি রাজ্যটিতে। সেই কারণে প্রকৃতিও হয়তো ক্ষুব্ধ। তাই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের দায় নিতে হবে মানুষকেই।
