সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: দেশের বিভিন্ন প্রান্তে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে বাংলাভাষীদের। কোথাও ধরপাকড়, কোথাও বাংলাদেশি বলে দাগিয়ে দেওয়া, কোথাও কর্মক্ষেত্রে হেনস্তা। অন্তত রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের এমনটাই অভিযোগ। যে যে রাজ্যগুলিতে বাংলাভাষীদের হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে, সেই তালিকায় নবতম সংযোজন কি অসম? অন্তত সে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মার মন্তব্যে তেমনটাই মনে হচ্ছে। হিমন্ত ঘুরিয়ে বলে দিচ্ছেন, বাংলা যাঁদের মাতৃভাষা, তাঁরা নিজেদের বিদেশি হিসাবেই পরিচয় দিচ্ছেন।
অসমে বাঙালি বনাম অসমীয়া বিবাদ দীর্ঘদিনের। ছয় ও সাতের দশকে অসমের 'বঙ্গাল খেদা' অভিযানের স্মৃতি আজও ভুক্তভোগীদের মধ্যে টাটকা। সে রাজ্যে বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর নতুন করে ভাষা বিবাদ মাথাচাড়া দিয়েছে। সম্প্রতি অসমের এক সংখ্যালঘু নেতা সে রাজ্যের সংখ্যালঘু মুসলিমদের উদ্দেশে আহ্বান জানিয়েছেন, আসন্ন জাতিগত জনগণনায় তাঁরা যেন নিজেদের মাতৃভাষা হিসাবে 'অসমীয়া'কে না বেছে নিয়ে বাংলাকে বেছে নেয়। সংখ্যালঘু সংগঠন আমসুর নেতা মইনুদ্দিন আলির ওই মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের ঝড় ওঠে অসমে। প্রশ্ন উঠতে শুরু করে, তাহলে কি অসমে অসমীয়াদের সংখ্যালঘু হিসাবে দেখানোর চেষ্টা হচ্ছে।
ওই সংখ্যালঘু নেতার মন্তব্যের জবাব দিতে গিয়ে আরও বিতর্কিত মন্তব্য করলেন অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত। তিনি বললেন, "এভাবে ভাষাকে ব্ল্যাকমেল করার করার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা যাবে না। অসমে অসমীয়াই স্থায়ী। এটাই সরকারি ভাষা, এটাই রাজ্য ভাষা। কিন্তু কেউ যদি বাংলাকে নিজেদের মাতৃভাষা হিসাবে দেখায়, তাহলে শুধু এটাই বোঝা যাবে যে রাজ্যে কতজন বিদেশি রয়েছে।" স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠছে, তাহলে কি বাংলাভাষী মানেই তাঁদের বিদেশি হিসাবে দেগে দিতে চাইছেন হিমন্ত?
হিমন্ত অবশ্য কোনও বিতর্কের ধার ধারতে নারাজ। তিনি বলছেন, "চর এলাকায় মুসলিমরা বরাবরই বাংলায় কথা বলেন। কিন্তু অসমের ভূমিপুত্র মুসলিমরা অসমীয়াতে কথা বলেন। তবে কে নিজেদের মাতৃভাষা হিসাবে কী লিখল তাতে কিছু যায় আসে না। অসমের রাজ্যভাষা অসমীয়াই থাকবে।"
