সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মানবিক না কি মানবিকতার ভান করে চূড়ান্ত অমানবিকতার নিদর্শন? কুলভূষণের যাদবের মা ও স্ত্রীর সঙ্গে যেভাবে তাঁর সাক্ষাতের ব্যবস্থা করেছিল পাকিস্তান, তারপর এ প্রশ্নই উঠেছিল। এবার তা নিয়ে মুখ খুলল ভারত। বিদেশমন্ত্রকের তরফে ঘটনার কড়া নিন্দা করে জানানো হল, চুক্তিভঙ্গ করেছে পাকিস্তান।
[ কাচের ওপারে কুলভূষণ, এটাই কি মানবিকতা? পাকিস্তানকে তোপ শহিদ পরিবারের ]
প্রায় ২২ মাস পরে পাকিস্তানে অপহৃত প্রাক্তন নৌসেনা অফিসারের সঙ্গে তাঁর পরিবারের লোককে দেখা করার অনুমতি দেয় পাক প্রশাসন। জানানো হয়েছিল, জিন্নার জন্মদিন উপলক্ষে মানবিক কারণেই এই সাক্ষাতের ব্যবস্থা। সাক্ষাতের ছবি প্রকাশ করে পাকিস্তান আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নাম কুড়োতে চেয়েছিল। জনিয়েছিল, তাদের লুকনোর কিছু নেই। কিন্তু ওই ছবিই একাধিক প্রশ্ন তুলে দেয়। মানবিকতার খাতিরে যে সাক্ষাত, সেখানে পুরু কাচের বেড়ার ওপারেই রেখে দেওয়া হয়েছিল কুলভূষণকে। ছুঁয়ে দেখতে পর্যন্ত দেওয়া হয়নি। স্পিকার ফোনে তাঁদের কথা হয়। ইন্টারকম ব্যবহার করতে দেওয়া হয়নি। রিসিভারে টেপ লাগানো ছিল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন পাকিস্তানে নিযুক্ত ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনার জে পি সিং। কিন্তু তাঁকেও আলাদা কিউবিকলে দূরে রাখা হয়। এর নাম মানবিক সাক্ষাত, প্রশ্ন উঠেছিল। এদিন দেশে ফিরে কুলভূষণের স্ত্রী ও মা দেখা করেন বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজের সঙ্গে। তারপরই পাকিস্তানের অমানবিকতার আরও নিদর্শন সামনে আসে।
বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে কুলভূষণের পরিবারের সদস্যদের বিস্তারিত কথোপকথনের পর জানা যায়, নিরাপত্তার নামে কুলভূষণের স্ত্রী চেতনকুলের মঙ্গলসূত্র পর্যন্ত খুলে রাখা হয়। তাঁর কপালের টিপও মুছে দেওয়া হয়। এমনকী তাঁর জুতো খুলে নেওয়া হয়েছিল, যা আর ফেরত দেওয়ার সৌজন্য পর্যন্ত দেখায়নি পাকিস্তান। বারবার চেয়েও তা পাওয়া যায়নি। কুলভূষণের মা জানিয়েছিলেন, মারাঠিতে তাঁদের কথা বলতে দেওয়া হয়নি। যা কথা হয়েছে, তা যাতে প্রত্যেকে শুনতে পান সে ব্যবস্থা করা হয়েছিল। জে পি সিংকে তো কুলভূষণের কাছ ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।
এদিন বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রভিশ কুমার এই ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। জানান, এই সাক্ষাৎ দুই দেশের মধ্যে এক চুক্তি ছিল। ভারতের যা যা করার কথা ছিল তা অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়েছে। কিন্তু চুক্তিভঙ্গ করেছে পাকিস্তান। অভিযোগ, পাক মিডিয়া কুলভূষণের স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারও করেছে। রভিশ কুমার জানান, নিরাপত্তার নামে পারিবারিক সংস্কৃতিতে হস্তক্ষেপ চূড়ান্ত অমানবিকতারই পরিচয়। কুলভূষণ যে চাপে ছিলেন তা স্পষ্ট। যে কথা তিনি বলেছেন তা যে শেখানো-পড়ানো তাও বোঝা যাচ্ছে। কতখানি সংবেদনশীলতার অভাব থাকলে একম কাজ করা যায় এদিন সে প্রশ্নই তোলা হয়েছে ভারতের পক্ষ থেকে। সৌজন্য সাক্ষাতের নামে পাকিস্তানের কোনও ষড়যন্ত্র আছে কিনা, সে বিষয়েও ভারত সতর্ক থাকবে বলে জানানো হয়েছে।
The post খুলে নেওয়া হয়েছিল কুলভূষণের স্ত্রীর মঙ্গলসূত্র, ফেরত দেওয়া হয়নি জুতোও appeared first on Sangbad Pratidin.