সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উচ্চশিক্ষার নামে ভারত বিরোধিতার চর্চা হয়, খোদ কেন্দ্রের এমন অভিযোগের তিরে থাকা দেশের নামী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ফলপ্রকাশ (JNU Poll Results) হল সোমবার। ঐক্য ভেঙে নির্বাচনে আলাদা লড়াই করেও ছাত্র সংসদের বিভিন্ন পদের দখল ধরে রাখতে সফল বাম, অতি বামেরা। তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে এক দশকের খরা কাটিয়ে ডানপন্থী ছাত্র সংগঠন এবিভিপিও ভালো ফলাফল করেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্যানেলে গুরুত্বপূর্ণ পদে জিতে এসেছেন এবিভিপি প্রার্থী। যাকে বড়সড় জয় হিসেবেই দেখছে বিজেপির ছাত্র সংগঠন।
জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচন হয়েছিল গত ২৫ এপ্রিল। সোমবার ফল প্রকাশিত হল। ফলাফল অনুযায়ী, অল ইন্ডিয়া স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বা AISA-র প্রার্থী নীতীশ কুমার ছাত্র সংসদের সভাপতি পদে নির্বাচিত হয়েছেন। বিপক্ষ অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের শিখা স্বরাজকে প্রায় তিনশো ভোটে হারিয়েছেন তিনি। একসময়ে এই পদে ছিলেন বাম নেত্রী ঐশী ঘোষ। এবার আইসা, এসএফআই, ডিএসএফ অর্থাৎ সমস্ত বাম ছাত্র সংগঠন আলাদাভাবে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে লড়াই করেছিল। প্রেসিডেন্ট পদে এসএফআইয়ের প্রার্থী ছিলেন তায়বা আহমেদ। তিনি মাত্র ৯১৮ ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে, সহ-সভাপতি বা ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে জিতেছেন আরেক অতিবাম সংগঠন ডিএসএফের মনীষা। এছাড়া সাধারণ সম্পাদক পদেও নির্বাচিত ডিএসএফের আরেক প্রার্থী মুনতেহা ফতিমা। এবিভিপির কুণাল রাইকে হারিয়েছেন তিনি।
সদ্য নির্বাচিত ছাত্র সংসদে সভাপতি নীতীশ কুমার আইসার প্রতিনিধি।
তবে তাৎপর্যপূর্ণভাবে এবার জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় প্যানেল অর্থাৎ গুরুত্বপূর্ণ পদে এবিভিপি-র প্রতিনিধিদের জয়জয়কার। আইসার নরেশ কুমারকে হারিয়ে যুগ্ম সম্পাদক পদে এবিভিপির বৈভব মীনা জিতেছেন। এর আগে বিজেপির ছাত্র সংগঠনের সৌরভ শর্মা ছিলেন এই পদে। সেটা ২০১৫-১৬ সাল। প্রায় ৯ বছর পর এই পদে বসলেন গেরুয়া ছাত্র সংসদের কোনও প্রতিনিধি। তারও আগে ২০০০-২০০১এ সন্দীপ মহাপাত্র ছিলেন জেএনইউ ছাত্র সংসদের যুগ্ম সম্পাদক।
JNU ছাত্র সংসদের যুগ্ম সম্পাদক পদে নির্বাচিত এবিভিপির বৈভব মীনা।
বৈভব মীনার জয়কে বিশ্ববিদ্যালয়ে এবিভিপি-র ক্ষমতাবৃদ্ধির বড়সড় হাতিয়ার হিসেবে দেখছেন গেরুয়া শিবিরের পড়ুয়ারা। তাঁদের তরফে বলা হচ্ছে, জেএনইউ-র ছাত্র সংসদের চরিত্র বদলের ইঙ্গিত এই জয়। অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের তরফে বিবৃতি দিয়ে বলা হয়েছে, ''এতদিন বামেরাই এখানে একচেটিয়া আধিপত্য কায়েম করেছিল। কিন্তু এমন নামী উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান, যেখান থেকে বহু বিখ্যাত ব্যক্তিত্ব পড়াশোনা করে আজ দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন, তাঁদের মতো এবার রাষ্ট্রগঠনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিচ্ছে এবিভিপি। এটাই পরিবর্তনের সূচনা।'' বৈভব মীনার কথায়, ''এতদিনে বামেরা ক্ষমতায় থেকে এখানকার আদিবাসী ও পিছিয়ে পড়া পড়ুয়াদের দিকে একেবারেই নজর দেয়নি। আমি সেই কাজ শুরু করব।''