সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ন্যাশনাল হেরাল্ডের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ঘটনায় এবার কেন্দ্রের মোদি সরকারকে তুলোধোনা রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বলের। ৬৬১ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের ইডির নোটিসকে 'গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত' বলে অভিযোগ করলেন তিনি। সিব্বলের বলেন, "আমরা মুখেই নিজেদের গণতন্ত্রের জননী বলি। কিন্তু বাস্তবে আপনারা একনায়কতন্ত্রের জনক।''
কংগ্রেস নিয়ন্ত্রিত অ্যাসোসিয়েটেড জার্নালস লিমিটেডের বিরুদ্ধে আর্থিক তছরুপের মামলা আগেই দায়ের করেছিল ইডি। সেই মামলার সূত্র ধরে আগেই ইয়ং ইন্ডিয়ান এবং অ্যাসোসিয়েট জার্নাল লিমিটেডের ৭৫২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। সেই সম্পত্তিরই একটা বড় অংশ এবার অধিগ্রহণ করতে চলেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। শনিবারই সেই মর্মে নোটিস জারি করা হয়। দিল্লির আইটিও, মুম্বইয়ের বান্দ্রায় অবস্থিত ন্যাশনাল হেরাল্ডের একাধিক দপ্তরে শনিবার নোটিস দেওয়া হয়। লখনউয়ের বিশ্বেশ্বর নাথ রোডের এজিএল ভবনেও শুক্রবার নোটিস পাঠানো হয়েছে। এই জায়গাগুলি খালি করে দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ইডি।
ইডির এই তৎপরতায় যারপরনাই ক্ষুব্ধ কংগ্রেস। ন্যাশনাল হেরাল্ডের সবরকম তদন্তপ্রক্রিয়াকে রাজনৈতিক প্রতিহিংসা বলে অভিযোগ তোলা হয়েছে কংগ্রেসের তরফে। এর প্রেক্ষিতেই রবিবার সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে মোদি সরকার ও কেন্দ্রীয় এজেন্সির বিরুদ্ধে সরব হন রাজ্যসভার সাংসদ কপিল সিব্বল। তিনি অভিযোগ করেন, "এই সরকার কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে হাতিয়ার করে কংগ্রেসকে আর্থিকভাবে পঙ্গু করার চেষ্টা চালাচ্ছে। কংগ্রেসের সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে এরা কংগ্রেসকে ধ্বংস করতে চায় যাতে দলের কোনও অফিস না থাকে।" সিব্বল আরও বলেন, "আমি যতদূর জানি কংগ্রেসের কাছে খুব বেশি অর্থ নেই। ফলে দলের উপর এই আর্থিক হামলা চালালে কংগ্রেস আর রাজনৈতিক দল হিসেবে কাজ করতে পারবে না। এটা গণতন্ত্রের উপর সরাসরি আঘাত।"
একইসুরে সিব্বল বলেন, "আমরা শুধুমাত্র মুখেই নিজেদের গণতন্ত্রের জননী বলে দাবি করি, কিন্তু বাস্তবে আপনারা স্বৈরাচারের জনক। এরা বিরোধী দলগুলিকে ধ্বংস করতে কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করছে। অথচ এরাই বিরোধী দলে থাকা সেইসব নেতাদের নিজেদের দলে টেনে নেবে যাঁদের বিরুদ্ধে ভুরি ভুরি দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। তাঁদের রাজ্যসভার সাংসদ করবে, কেন্দ্রীয় মন্ত্রক দেবে। অথচ তখন তাঁদের বিরুদ্ধে কোনও ইডি বা সিবিআই পদক্ষেপ নেবে না।"
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের নভেম্বর মাসে রাজস্থান এবং তেলেঙ্গানার ভোটের প্রাক্কালে ৭৫২ কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছিল ইডি। এর মধ্যে ইয়ং ইন্ডিয়ানের ৯০ কোটি এবং AJL-এর ৬৬১.৯ কোটি টাকার সম্পত্তি ছিল। অ্যাসোসিয়েট জার্নাল এবং ইয়ং ইন্ডিয়ান, দুটি সংস্থাই কংগ্রেস নিয়ন্ত্রিত। এর মধ্যে সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুলের গান্ধী দুজনেই ইয়ং ইন্ডিয়ানের ডিরেক্টর। AJL-এর সঙ্গেও সরাসরি যোগ রয়েছে গান্ধী পরিবারের।