shono
Advertisement
Chhattisgarh

পরিবেশ ধ্বংসের মহাযজ্ঞ! আদানির কয়লাখনিতে সাফ ২১৫ হেক্টর জঙ্গল, বিপাকে আদিবাসীরা

স্থানীয়দের অভিযোগ, 'আদানিদের হাতে আদিবাসীদের জঙ্গল ও জমি তুলে দিয়ে শুরু হয়েছে রাক্ষুসে উন্নয়ন।'
Published By: Amit Kumar DasPosted: 06:21 PM Jun 28, 2025Updated: 06:26 PM Jun 28, 2025

সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কয়লা খনিতে কয়েক হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে আদানির সংস্থা। তারই কুফল ভুগতে হচ্ছে ছত্তিশগড়ের সাধারণ আদিবাসীদের। অভিযোগ, কয়লাখনির কাজ শুরু করতে ছত্তিশগড়ের রায়গড় জেলার তামনার তহসিলের একাধিক গ্রামে শুরু হয়েছে বৃক্ষ নিধন পর্ব। গত ২৬ ও ২৭ জুন পালমা সেক্টর ২ ব্লকে কেটে ফেলা হয়েছে ৫ হাজার গাছ। লক্ষ্য ২১৫ হেক্টর জঙ্গল পুরোপুরি সাফ করে ফেলা। এই ঘটনায় প্রতিবাদে মুখর হয়েছেন স্থানীয় আদিবাসীরা। যদিও অভিযোগ উঠছে, প্রতিবাদ থামাতে চলছে বেলাগাম ধড়পাকড়।

Advertisement

২০১৫ সালে ছত্তিশগড়ের গারে পামলা সেক্টর-২ কয়লা খনিটি আদানির সংস্থাকে বরাদ্দ করেছিল কয়লা মন্ত্রক। অনুমান এই খনিতে আনুমানিক ৬৫৫.১৫৩ মেট্রিক টন কয়লা রয়েছে। কয়লা উত্তোলনের লক্ষ্যে ওই এলাকার ২৫৮৪ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করছে আদানির সংস্থা। যার মধ্যে ২১৫ হেক্টর জমির পুরোটাই জঙ্গল। পাশাপাশি ১৪টি গ্রামের বাসিন্দাদের অন্যত্র সরানো হচ্ছে। এই ঘটনায় ফুঁসে উঠেছেন এলাকাবাসী। আদিবাসীদের জঙ্গল ও জমির অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন এলাকার বাসিন্দারা। এই ঘটনায় ছত্তিশগড় হাইকোর্ট ও পরিবেশ আদালতে মামলাও দায়ের হয়েছে। তবে সে সব উপেক্ষা করে চলছে বৃক্ষ নিধন যজ্ঞ।

জঙ্গলে চলছে গাছ কাটা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত ২৬ জুন সকালে কড়া পুলিশি নিরাপত্তায় মুদাগাঁও, সারাইটোলা গ্রামে গাছ কাটা শুরু হয়। এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় গ্রামবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পরিবেশকর্মীদের গ্রেপ্তার করে পুলিশ। গ্রামবাসীদের পক্ষ নিয়ে ঘটনার প্রতিবাদে নেমেছে ছত্তিশগড় অ্যাসোসিয়েশন ফর জাস্টিস অ্যান্ড ইকুয়ালিটি (CAJE)। তাদের অভিযোগ, পুলিশ, বনবিভাগ ও আদানির কর্মীরা গোটা জঙ্গল ঘিরে ফেলে গাছ কাটা শুরু করেছে। প্রতিবাদ করায় স্থানীয় কংগ্রেস বিধায়ক বিদ্যাবতী সিদার, লেখক রিনচিন-সহ মোট ৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শুধু তাই নয়, জঙ্গলে মহুয়া ফুল কুড়োতে যাওয়ায় তিন মহিলাকেও গ্রেপ্তার করা হয়। স্থানীয়দের দাবি, 'একটা সময়ে এইসব অঞ্চলে মাওবাদীদের ব্যাপক দাপট ছিল। লাগাতার অভিযানের জেরে মাওবাদকে এলাকা থেকে সাফ করেছে সরকার। এরপরই আদানিদের হাতে আদিবাসীদের জঙ্গল ও জমি তুলে দিয়ে শুরু হয়েছে রাক্ষুসে উন্নয়ন।'

পুলিশি নিরাপত্তায় চলছে গাছ কাটা।

CAJE-এর বিবৃতি অনুযায়ী, প্রায় ৭,৬৪২ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ১৪টি গ্রামের মানুষ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। ১৭০০ পরিবার বাস্তুচ্যুত হবেন। বন উজাড়ের ফলে বাস্তুতন্ত্র তো বটেই ক্ষতির পরিমাণ হবে ১৫.২২ কোটি টাকা। তবে এই জঙ্গল এলাকার মানুষের কাছে তাদের পৈতৃক ভূমি। গ্রামবাসীদের জীবিকার অন্যতম মাধ্যম। ফলে জঙ্গলের ক্ষতি মানতে নারাজ এলাকাবাসী। যার জেরে স্থানীয় ও পরিবেশ প্রেমীরা ২০১৭ সাল থেকে এই প্রকল্পের বিরুদ্ধে সরব। তবে মুনাফালোভীদের আগ্রাসনের কাছে গৌণ হয়ে উঠেছে সমস্ত রকম প্রতিবাদ।

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • কয়লাখনির কাজ শুরু করতে ছত্তিশগড়ের রায়গড় জেলার তামনার তহসিলের একাধিক গ্রামে শুরু হয়েছে বৃক্ষ নিধন পর্ব।
  • গত ২৬ ও ২৭ জুন পালমা সেক্টর ২ ব্লকে কেটে ফেলা হয়েছে ৫ হাজার গাছ।
  • লক্ষ্য ২১৫ হেক্টর জঙ্গল পুরোপুরি সাফ করে ফেলা।
Advertisement