সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীরে নতুন যুগের সূচনার জন্য প্রকাশ্য সভায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর (Amit Shah) প্রশংসায় পঞ্চমুখ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ কুমার মিশ্র। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন এই বিচারপতির বক্তব্য, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর জন্যই কাশ্মীরে মানবাধিকারের নতুন অধ্যায়ের সূচনা হয়েছে। যদিও, মানবাধিকার কমিশনের এই বক্তব্যের পরদিনই কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতি (Mehbooba Mufti) অভিযোগ করলেন, বিজেপি সরকার নির্বিচারে সাধারণ কাশ্মীরিদের জেলে ঢোকাচ্ছে।
মঙ্গলবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের (NHRC) ২৮ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে কমিশনের চেয়ারম্যান অরুণ কুমার মিশ্র স্পষ্টই বলেন, অমিত শাহর জন্যই উপত্যকায় নতুন যুগের সূচনা হয়েছেন। কীসের নতুন যুগ, তা স্পষ্ট না করলেও বিচারপতি মিশ্র (Arun Kumar Mishra) যে সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিল এবং উপত্যকার বিশেষ মর্যাদা প্রত্যাহার প্রসঙ্গেই মন্তব্য করেছেন সেটা স্পষ্ট। শুধু কাশ্মীর নয়, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মতে, উত্তরপূর্ব ভারতে যে নতুন যুগের সূচনা হয়েছে, সেটারও আসল কারিগর অমিত শাহই।
[আরও পড়ুন: আফগানিস্তানের মাটি যেন সন্ত্রাসের উৎস না হয়, G-20 বৈঠকে সাফ বার্তা মোদির]
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে, কাশ্মীরের এই ‘নতুন যুগ’ কি আদৌ পুরনো যুগের থেকে ভাল? কারণ, ৩৭০ ধারা বাতিলের পরও উপত্যকায় জঙ্গি হামলা কমেনি। উলটে ২ বছরের বেশি সময় ধরে কাশ্মীরে প্রায় সেনার শাসন চালাতে হচ্ছে। সাম্প্রতিককালে কাশ্মীরে নতুন করে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর অত্যাচার শুরু হয়েছে। অনেক কাশ্মীরি পণ্ডিত ফের আতঙ্কে ঘর ছাড়ছেন। এই পরিস্থিতিতে আবার মেহবুবা মুফতি সুর চড়িয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, সরকার নির্বিচারে কাশ্মীরিদের আটক করছে। কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর হুঁশিয়ারি, এভাবে চলতে থাকলে এর ফল ভুগতে হবে কেন্দ্রকে।
[আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর মোদির নতুন উপদেষ্টা হলেন পশুখাদ্য কেলেঙ্কারি ফাঁস করা প্রাক্তন আমলা]
প্রশ্ন উঠছে, এই যখন পরিস্থিতি তখন মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান কীভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসা করছেন? একটি স্বশাসিত সংস্থার প্রধান এভাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রশংসা করতে পারেনি কিনা সেটা নিয়েও প্রশ্ন আছে। প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যেই এরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) কমিশনের পাঠানো তদন্ত কমিটির নিরপেক্ষতা নিয়ে সরাসরি প্রশ্ন তুলেছেন। তৃণমূল কংগ্রেসের অভিযোগ ছিল, ওই কমিটির অন্তত দু’জন বিজেপির সঙ্গে জড়িত। সবার সামনে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানের শাহ-স্তুতি আরও একবার এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিল।