সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শপথ গ্রহণের মাত্র তিনদিনের মধ্যে পদত্যাগ করলেন বিহারের শিক্ষামন্ত্রী মেওয়ালাল চৌধুরী (Mewa Lal Choudhary)। শপথ নেওয়ার পর থেকেই একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন তিনি। দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে তুলোধোনা করেছিলেন বিরোধীরা। বিতর্কের মুখে নীতীশ কুমারই (Nitish Kumar) তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেছেন বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে নীতীশ কুমারের মন্ত্রিসভার সদস্য মেওয়ালালের বিরুদ্ধে। তারপরেও তিনি কীভাবে শিক্ষামন্ত্রীর পদ পান, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে? প্রশ্ন উঠেছে নীতীশ কুমারের মন্ত্রী বাছাই নিয়েও। বিরোধীর প্রশ্ন, দুর্নীতির অভিযোগের কথা কারোর অজানা নয়, তাহলে কীভাবে তাঁকে মন্ত্রীত্ব দিলেন নীতীশ কুমার? আর মন্ত্রীত্ব দেওয়ার পর তা কেড়ে নেওয়ারই বা কী অর্থ?
[আরও পড়ুন : জাতীয় সঙ্গীত গাইতে গিয়েই হোঁচট বিহারের নতুন শিক্ষামন্ত্রীর! ভাইরাল ভিডিওয় নিন্দার ঝড়]
নীতীশ কুমারকে তীব্র আক্রমণ করে আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদবের টুইট, “দুর্নীতিগ্রস্ত হওয়া সত্ত্বেও মন্ত্রী হল। শপথ নেওয়ার কয়েকঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগেরও নাটক করা হল! আসল দোষী তো আপনি (নীতীশ কুমার)। কেন ওঁকে মন্ত্রী করলেন? আপনার এই গিমিক, দ্বিচারিতা আর চলবে না।” বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর এই সিদ্ধান্তের পিছনে বিজেপির চাপ রয়েছে বলেও দাবি করছেন কেউ কেউ। তাঁদের কথায়, দলের ভাবমূর্তি স্বচ্ছ রাখতেই নীতীশ কুমারের উপর চাপ দিয়েছেন তাঁরা। তার জেরেই তড়িঘড়ি এই পদত্যাগ।
বিহারের নতুন মন্ত্রিসভায় তিনিই সবচেয়ে ধনী ছিলেন। তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক দুর্নীতি মামলা রয়েছে। এমনকী, দুর্নীতির অভিযোগে ২০১৭ সালে তাঁকে দল থেকে বহিষ্কৃতও করা হয়। কিন্তু পরে আবার দলে ফিরে আসেন তিনি। আর এবার শিক্ষামন্ত্রীর পদও পেয়েছিলেন। একবার বহিষ্কৃত হয়েও তিনি কীভাবে মন্ত্রিত্ব পেলেন? সে প্রশ্ন তুলেছিল আরজেডি। শিক্ষামন্ত্রীর পদ পাওয়া মেওয়ালালের শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
শপথ গ্রহণের তিনদিনের মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী পদত্যাগের জন্য বিহারের শক্তিশালী বিরোধী দলকেও বাহবা দিচ্ছেন কেউ কেউ। মেওয়ালালের শপথগ্রহণের পর থেকেই তেজস্বীর তীব্র আক্রমণের মুখে পড়তে হয়েছে নীতীশ কুমারকে। সেই চাপ এড়াতেই কি মেওয়ালালকে পদত্যাগ করতে কার্যত বাধ্য করলেন নীতীশ? উঠছে প্রশ্ন।
[আরও পড়ুন : ‘আগে চা বেচতেন, এখন স্টেশন বেচছেন’, মোদিকে তোপ কেসিআরের, বিরোধী ঐক্যের ডাক]
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে তারাপুরে মেওয়ালালের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। অভিযোগ, ভাগলপুর কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি থাকাকালীন সহকারী অধ্যাপক ও জুনিয়র গবেষক নিয়োগের ক্ষেত্রে দুর্নীতি হয়েছে। তিনিও তাতে যুক্ত ছিলেন। তৎকালীন বিহারের রাজ্যপাল তথা বর্তমানের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের অনুমতি অনুসারে তদন্তও শুরু হয়েছে। কিন্তু মেওয়ালালের বিরুদ্ধে এখনও কোনও চার্জশিট দাখিল হয়নি।