সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: এতদিন যে অভিযোগ তিনি সংসদের বাইরে করছিলেন, এবার সেই ভোটচুরির অভিযোগে সংসদের অন্দরে দাঁড়িয়ে কেন্দ্রের মোদি সরকার এবং নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করলেন লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী। বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, "ভোটচুরির চেয়ে বড় দেশদ্রোহিতা আর কিছু হয় না।"
বিরোধীদের জোরালো দাবি এবং আন্দোলনের জেরে সংসদে SIR নিয়ে আলোচনায় রাজি হয়েছে সরকার। সেই আলোচনার শুরুতেই রাহুল বলেন, "হরিয়ানার ভোটার তালিকায় এক ব্রাজিলিয়ান মডেলের ছবি ২২ জায়গায় ছিল। আরও এক মহিলার নাম ২০০ জায়গায়। হরিয়ানার ভোটচুরি হয়েছে। আমি বারবার বারবার এক কথা বলে যাচ্ছি। কিন্তু নির্বাচন কমিশন আমার কথার কোনও জবাব দিতে পারছে না।" নির্বাচন কমিশনকে নিশানা করে রাহুল বলছেন, "কেন লক্ষ লক্ষ ভুয়ো ভোটারের নাম তালিকায়? এখনও তো কমিশন জবাব দিল না। SIR-এর পরেও কেন বিহারে ১.২ লক্ষ ভুয়ো ভোটার থেকে গেল? আসলে সরকার সব সংস্থাকে দখল করে নিয়েছে। আমি দেখিয়ে দিয়েছি কীভাবে কমিশন নিয়মের বাইরে গিয়ে কাজ করছে।"
রাহুলের সরাসরি প্রশ্ন, নির্বাচন কমিশনার বাছার কমিটি থেকে দেশের প্রধান বিচারপতিকে কেন বাদ দেওয়া হল? আমরা কি প্রধান বিচারপতিকেও ভরসা করতে পারি না? বিরোধী দলনেতা বলছেন, "নির্বাচন কমিশন বাছার সময় ঘরে কেন প্রধান বিচারপতি থাকবেন না? আমি প্যানেলে আছি, কিন্তু আমার কথার কোনও গুরুত্ব নেই। কেন দেশের নির্বাচন কমিশনার মোদি এবং অমিত শাহ বাছবেন?" উল্লেখ্য, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী দেশের প্রধান বিচারপতি বাছাই করার কথা ছিল ৩ সদস্যের কমিটির। যে কমিটিতে প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলনেতা এবং প্রধান বিচারপতির থাকার কথা। কিন্তু পরে মোদি সরকার অধ্যাদেশ জারি করে সেই সিদ্ধান্ত বদলে দেয়। কমিটি থেকে প্রধান বিচারপতিকে সরিয়ে ঢোকানো হয় মন্ত্রিসভার এক সদস্যকে। ফলে ৩ সদস্যের কমিটিতে সংখ্যাগুরু হয়ে যায় সরকার পক্ষ। সেটা নিয়ে আপত্তি বিরোধীদের।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এতদিন রাহুল গান্ধী সাংবাদিক বৈঠক করে ভোটচুরির অভিযোগ করছিলেন। সেই অভিযোগকে কমিশন গুরুত্ব দেয়নি। কমিশন জানায়, রাহুল কেন ওই অভিযোগ নিজের সাংবিধানিক শপথের অধীনে করছেন না? এবার বিরোধী দলনেতা সংসদে দাঁড়িয়ে ভোটচুরির অভিযোগ করলেন। স্বাভাবিকভাবেই অভিযোগের গুরুত্ব বাড়ল।
