সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: হাইকমান্ডের হস্তক্ষেপে সংঘাতে দাঁড়ি পড়েছে ঠিকই, তবে কর্নাটকের কুর্সির লড়াই যে পুরোপুরি থামেনি এবার তারই ইঙ্গিত দিলেন উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার। সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানালেন, 'মানুষ যদি মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁকে চান তাতে কোনও ভুল নেই। মনের কথা প্রকাশ করা দোষের নয়।'
হাইকমান্ডের নির্দেশে পরিস্থিতি আপাতভাবে ঠান্ডা হলেও রম্ভাপুরির সন্ত রাজাদেশিকেন্দ্র শিবাচার্য স্বামী শিবকুমারের পক্ষ নিয়ে বলেন, ''২০২৩ সালে কর্নাটকে কংগ্রেসের অভূতপূর্ব জয়ের পর দলের উচিত ছিল শিবকুমারকে আরও গুরুত্বপূর্ণ পদ দেওয়া। আশা করব ঈশ্বরের কৃপায় তিনি আগামিদিনে আরও বড় পদ পাবেন।" একইসঙ্গে শিবকুমারের সংযত আচরণেরও প্রশংসা করেন তিনি। এ প্রসঙ্গেই সাংবাদিকদের তরফে শিবকুমারকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "দলীয় কর্মী, সন্ত বা সাধারণ জনগণ যদি তাঁদের মনের ইচ্ছে প্রকাশ করেন, তা কোনও অন্যায় নয়। দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করতে নিষেধ করেছেন। ফলে এই ইস্যুতে আমরা দলের নির্দেশ পালন করব। বিষয়টি আমার ও দলের নিজস্ব বিষয়। শুধু এইটুকু বলব যে আমরা একসঙ্গে কাজ করছি।"
উল্লেখ্য, ২০২৩ সালে বিজেপিকে উৎখাত করে কর্নাটকে ক্ষমতায় এসেছিল কংগ্রেস। এর পর থেকেই দলীয় কোন্দলে নাজেহাল অবস্থা হাত শিবিরের। মুখ্যমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে সিদ্দারামাইয়ার পাশাপাশি উঠে আসেন ডিকে শিবকুমার। শেষ পর্যন্ত সিদ্দারামাইয়াকে শাসনভার দেওয়া হলেও এত সহজে দ্বন্দ্ব মেটেনি। সরকারের অন্দরে সংঘাতপর্ব উত্তরোত্তর বাড়তে থাকে। এর সঙ্গেই গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো সামনে আসে একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। বিরাট জমি দুর্নীতির অভিযোগে নাম জড়ায় খোদ মুখ্যমন্ত্রীর। এই পরিস্থিতিতে সিদ্দারামাইয়ার হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিয়ে শিবকুমারের হাতে ক্ষমতা দেওয়ার দাবি ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে মাঠে নামে কংগ্রেস হাইকমান্ড। দফায় দফায় বৈঠকের পর ঠিক হয়, এখনই মুখ্যমন্ত্রী বদল হবে না কন্নড় রাজ্যে। এই ধরনের কোনও পরিকল্পনা দলের হাই কম্যান্ডের নেই। দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সিদ্দা ও শিব প্রকাশ্যে মেনেও নেন সেকথা।
যদিও পরে সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে শিবকুমার বলেন, “আমার কী বা করার আছে? ওঁর (সিদ্দারামাইয়ার) পাশে দাঁড়াব এবং সমর্থন করব। হাইকমান্ড যা বলেছে আমাকে সেটাই করতে হবে।” কর্নাটকের বর্তমান উপমুখ্যমন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে কার্যত স্পষ্ট হয়ে যায়, শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশে সাময়িকভাবে ঝামেলা মিটলেও অচিরেই ফের দেখা দিতে পারে ‘কর্নাটক বিবাদ’। সেই সম্ভাবনাকে আরও উসকে দিয়ে এবার শিবকুমার জানালেন, কেউ যদি তার মনের ইচ্ছা প্রকাশ করেন তবে সে কখনও দোষের হতে পারে না।
