সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কাশ্মীরের বুকে ঘটে যাওয়া নৃশংস জঙ্গি হামলায় প্রাণ গিয়েছে ২৬ পর্যটকের। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের 'টার্গেট' করে জঙ্গিরা খুন করেছে। বেঁচে ফেরা পর্যটকদের কথায় বারবার উঠে এসেছে এই বয়ান। শুধু তাই নয়, ভাইরাল হওয়া কয়েকটি ভিডিওতেও তা বোঝা গিয়েছে। মঙ্গলবারের এই হামলার প্রভাব পড়েছে গোটা দেশেই। প্রিয়জনকে হারিয়ে সর্বস্বান্ত বহু দেশের বহু পরিবার। সন্ত্রাসবাদের প্রত্যক্ষ না হলেও পরোক্ষ প্রভাব পড়ল রাজস্থানের এক যুবকের জীবনে। পহেলগাঁওয়ের হামলায় পাক যোগ উঠে আসায় কড়া পদক্ষেপ নিয়েছে ভারত। আটারি-ওয়াঘা সীমান্ত বন্ধের পাশাপাশি এই মুহূর্তে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যাতায়াত আপাতত বন্ধ। ফলে বিয়ের দিনক্ষণ স্থির থাকা সত্ত্বেও যেতে পারলেন না রাজস্থানের শয়তান সিং। কারণ, বিদেশমন্ত্রকের নিষেধাজ্ঞা।
রাজস্থানের বাসিন্দা শয়তান সিংয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছিল পাকিস্তানের পাত্রীর সঙ্গে। বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল অমৃতসরের আটারি সীমান্ত পেরিয়ে 'বারাত' নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল তাঁর। কিন্তু ২২ এপ্রিল, পহেলগাঁওয়ের বৈসরন উপত্যকায় জঙ্গিদের গুলিতে ছাব্বিশজন পর্যটক ঝাঁজরা হয়ে যাওয়ার পর মোটেই শয়তানের পক্ষে পাকিস্তানে বিয়ে করতে যাওয়াটা সহজ ছিল না। কারণ বিয়ের অনুষ্ঠান আর তাঁর ব্যক্তিগত নেই। এটা এখন দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের টানাপোড়েনের মাঝে জড়িয়ে গিয়েছে। পহেলগাঁও হামলার প্রত্যাঘাত স্বরূপ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একাধিক নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে নয়াদিল্লি। ভারতের পাক নাগরিকদের দ্রুত যেমন এদেশ ছাড়তে বলা হয়েছে, তেমনই ওদেশের বাসিন্দাদেরও ভিসা আটকে দেওয়া হয়েছে। এর মাঝে পড়ে বিয়েটাই পিছিয়ে গেল শয়তান সিংয়ের। তাতে নিজের হতাশা চেপে রাখতে পারেননি।
সংবাদসংস্থা এএনআই-তে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অবশ্য শয়তান মেনে নিয়েছেন দেশের নিরাপত্তাই সর্বাগ্রে, তার জন্য বিদেশমন্ত্রক যা ভালো মনে করেছে, সেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। শয়তানের কথায়, ''জঙ্গিরা যা করেছে, তা ঘোর অন্যায়। আমার বিয়ে ছিল পাকিস্তানে। কিন্তু বাধা এসে গেল, এখন তো যেতে পারব না। কী করা যাবে? সরকার ভেবেচিন্তেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দেখা যাক কী হয়।'' আপাতত দেশের পরিস্থিতিতে শয়তান সিংয়ের বিয়ে যে বিশ বাঁও জলে পড়ল, তা বলাই বাহুল্য।
