সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রেল পুলিশের রিপোর্টে অস্বস্তিতে পড়ল রেল! নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্টের ঘটনায় রেলের দাবিকে খণ্ডন করে দুর্ঘটনার প্রাথমিক রিপোর্ট দিল আরপিএফ। যেখানে বলা হয়েছে, মাত্র দুঘণ্টা সময়ের মধ্যে চারটি ট্রেন ছিল নয়াদিল্লি স্টেশনে। এর উপর ভুল ঘোষণা হয়। এর ফলে ভয়ংকর ভিড়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এক সময় কাউন্টার থেকে জেনারেলের টিকিট দেওয়া বন্ধ করতে বলেন নয়াদিল্লি স্টেশনের এক আরপিএফ আধিকারিক। যদিও ততক্ষণে বিপজ্জনক ভিড় তৈরি হয়ে গিয়েছে। এর পরেই পদপিষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় ১৮ জনের।
আরপিএফের প্রাথমিক রিপোর্টের কথা জানা গিয়েছে একাধিক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে। সেখানে ভুল ঘোষণাকেই পদপিষ্টের ঘটনার অন্যতম কারণ বলা হয়েছে। যদিও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব জানিয়েছিলেন, নয়াদিল্লি স্টেশনে অতিরিক্ত ভিড় ছিল না। এদিকে রেল পুলিশের রিপোর্ট উল্লেখ করা হয়েছে, শনিবার রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে ঘোষণা করা হয়, নয়াদিল্লি স্টেশনের ১২ নম্বর প্ল্যাটফর্মে প্রয়াগরাজগামী কুম্ভ স্পেশাল ট্রেন আসছে। যদিও খানিক পরেই বলা হয়, ১২ নম্বরে নয়, ট্রেনটি ১৬ নম্বর প্ল্যাটফর্মে আসছে। একই সময়ে ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে ছিল মগধ এক্সপ্রেস। আর ১৫ নম্বরে ছিল উত্তর সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস। অন্য দিকে, প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেস ধরার জন্য ১৪ নম্বর প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়েছিলেন বিপুল সংখ্যক মানুষ। মূল গোলমাল হয় অবশ্য এর পরে।
হুড়োহুড়ি পড়ে যায় তখন, যখন কুম্ভ স্পেশ্যাল ট্রেন ঘোষণা হয়। এর ফলে ১২-১৩ এবং ১৪-১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্মের যাত্রীদের একাংশ ওভারব্রিজে ওঠার চেষ্টা করেন। একই সময়ে দুটি ওভারব্রিজের সিঁড়ি ধরে নামছিলেন মগধ এক্সপ্রেস, উত্তর সম্পর্ক ক্রান্তি এক্সপ্রেস এবং প্রয়াগরাজ এক্সপ্রেসের যাত্রীরাও। এই পরিস্থিতিতে ব্যাপক হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ধাক্কাধাক্কিতে ভিড়ের মধ্যে ওভারব্রিজে পড়ে যান বহু যাত্রী। তাদের মাড়িয়েই যাওয়ার চেষ্টা করেন অন্য যাত্রীরা। আরপিএফের তরফে আরও বলা হয়েছে, রাত ৮টা ১৫ থেকে ১০টা ১০, এই দুঘণ্টার মধ্যে চারটি ট্রেনের ভিড় তৈরি হয়েছিল।
রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, ঘণ্টায় গড়ে ১৫০০ জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল সেদিন। নয়াদিল্লি স্টেশন উত্তর রেলের অন্তর্গত। উত্তর রেলে মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক হিমাংশুশেখর উপাধ্যায় জানিয়েছে, আরপিএফের রিপোর্ট তাদের হাতে এসেছে। বাকি রিপোর্ট দেখার পর উচ্চপর্যায়ের কমিটি রেলকর্মীদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে। তার পরই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
