সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উত্তরাখণ্ডের পর এবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধির (ইউনিফর্ম সিভিল কোড) পথে আর এক বিজেপি শাসিত রাজ্য গুজরাট। রাজ্যে এক আইন লাগু করার লক্ষ্যে মঙ্গলবার ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করল ভূপেন্দ্র প্যাটেলের সরকার। এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন শীর্ষ আদালতের প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাই। আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে সরকারকে এই বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেবে কমিটি।
দেশের প্রথম রাজ্য হিসেবে গত ২৭ জানুয়ারি উত্তরাখণ্ডে লাগু হয়েছিল অভিন্ন দেওয়ানি বিধি। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, এই রাজ্যে নয়া আইন লাগু করার সুবিধা ও অসুবিধা খতিয়ে দেখতে রাজ্য সরকার যে কমিটি গঠন করে তার শীর্ষে ছিলেন প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জনাপ্রকাশ দেশাই। গুজরাট সরকারের তৈরি করা কমিটিতেও জায়গা দেওয়া হল তাঁকে। নয়া বিধি প্রসঙ্গে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ভূপেন্দ্র বলেন, "আমরা ভারতীয় এটাই আমাদের ধর্ম। এবং এই ধর্মের ধর্মগ্রন্থ হল আমাদের সংবিধান। এই সংবিধানের ৭৫ তম বর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, দেশের সর্বত্র লাগু করা হবে অভিন্ন দেওয়ানি বিধি যাতে আইনে সকলের সমান অধিকার নিশ্চিত করা যায়।"
উল্লেখ্য, উত্তরাখণ্ডে নয়া আইন কার্যকর করার পর সেখানে যে সব নীতি লাগু হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য, বিয়ের ক্ষেত্রে সরকারি রেজিস্ট্রেশন বাধ্যতামূলক। তবে রেজিস্ট্রেশন না হলেও বৈধতা থাকবে বিয়ের। কিন্তু রেজিস্ট্রেশন না থাকলে ওই বিয়ে আইনি স্বীকৃতি পাবে না। মিলবে না সরকারি সাহায্যও। বিবাহিত অবস্থায় দ্বিতীয় বার বিয়ে করতে পারবেন না কেউ। বিয়ের ক্ষেত্রে পুরুষদের ২১ এবং মহিলাদের বয়স ১৮ বছর হতেই হবে। সমস্ত ধর্মের নাগরিকদের জন্যই এই নিয়ম বলবৎ থাকবে। সামাজিক বিয়ের পর ছমাস পর্যন্ত সময় দেওয়া হবে রেজিস্ট্রেশনের জন্য। এই সবকিছু লাগু হতে পারে গুজরাটেও। উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে যাতে ওই সন্তান সমানাধিকার পায় তা নিশ্চিত করা হবে নয়া আইনে। অর্থাৎ ধর্ম ভেদে আলাদা আইন নয়, রাজ্যে সকলের জন্য থাকবে একটাই আইন।
উত্তরাখণ্ডে সবচেয়ে বেশি আলোচিত বিষয় হয়েছে লিভ ইন সম্পর্কের নিয়মাবলি। আইন অনুযায়ী, সরকারিভাবে নথিভুক্ত করাতে হবে লিভ ইন সম্পর্ক। নোটিস দেওয়ার একমাসের মধ্যে লিভ ইন সম্পর্ক নথিভুক্ত করাতে হবে। তা না হলে সাজা ভুগতে হবে। লিভ ইন যুগলকে বাড়ি ভাড়া দেওয়ার সময় তথ্য গোপন করলে শাস্তি দেওয়া হবে বাড়ির মালিককেও। লিভ ইনের সরকারি নথিভুক্ত না করালে সর্বোচ্চ তিনমাসের জেল ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা হতে পারে। ভুল তথ্য দিলে এই সাজা বেড়ে ৬ মাসের জেল এবং ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।
