সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অখিলেশ যাদব যেন হ্যামিলনের বাঁশিওয়ালা। যোগীর (Yogi Adityanath) সাজানো শহর তছনছ করতে মোহময় সুর বেঁধেছেন তিনি। যার মূর্ছনায় আকৃষ্ট হচ্ছেন রাজ্যের একের পর এক প্রভাবশালী দলিত নেতা। একে একে ভেঙে যাচ্ছে বিজেপির অভেদ্য দুর্গের স্তম্ভগুলি। নাহলে মাস দু’য়েক আগেও উত্তরপ্রদেশে যে বিজেপিকে (BJP) অপ্রতিরোধ্য মনে হচ্ছিল, ভোটের বাদ্যি বাজতেই সেখানে এভাবে গেরুয়া শিবিরে ভাঙন কেন ধরবে?
প্রথমে স্বামীপ্রসাদ মৌর্য, তারপর দারা সিং চৌহান এবং আজ ধরম সিং সাইনি (Dharam Singh Saini)। মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে ৩ জন মন্ত্রীকে খোয়াল বিজেপি। সেই সঙ্গে রয়েছেন তাঁদের সাঙ্গপাঙ্গরা। হিসাব বলছে, গত ৭২ ঘন্টায় মোট ৬ জন বিজেপি বিধায়ক পদত্যাগ করেছেন। তিন মন্ত্রী ধরলে সংখ্যাটা ৯। এরা প্রত্যেকেই যে সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেবেন তাতে সংশয় নেই। শোনা যাচ্ছে, অখিলেশ যাদবের (Akhilesh Yadav) কাছে যে তালিকা আছে তাতে আরও বেশ কয়েকজনের নাম রয়েছে। দিন দুই আগেই সমাজবাদী পার্টির জোটসঙ্গী এনসিপি নেতা শরদ পওয়ার বলছিলেন অন্তত ১৩ জন বিধায়ক পদত্যাগ করে সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেবেন। বিজেপির অন্দরে আশঙ্কা সেই সম্ভাবনা সত্যি হলেও হতে পারে।
[আরও পড়ুন: উত্তরপ্রদেশে কংগ্রেসের টিকিটে ভোটে লড়বেন উন্নাওয়ের নির্যাতিতার মা, প্রথম দফার তালিকা ঘোষণা প্রিয়াঙ্কার]
বৃহস্পতিবার যে মন্ত্রী পদত্যাগ করলেন সেই ধরম সিং সাইনি একদিন আগেও বলছিলেন, তিনি বিজেপি ছাড়ছেন না। খোদ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ নাকি তাঁকে ফোন করে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। কিন্তু তাতে লাভের লাভ কিছু হয়নি। ইতিমধ্যেই অখিলেশ যাদবের সঙ্গে দেখা করে ফেলেছেন সাইনি। অখিলেশ টুইট করে তাঁকে সমাজবাদী পার্টিতে স্বাগতও জানিয়েছেন। আগের দুই মন্ত্রীর মতো ধরম সিং সাইনিও দলিত সম্প্রদায়ের নেতা। তিনি আবার হুমকিও দিয়ে রেখেছেন, আগামী ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত রোজ একজন করে মন্ত্রী এবং ২-৩ জন করে বিধায়ক পদত্যাগ করবেন। সেটাই সবচেয়ে বেশি চিন্তায় রাখবে বিজেপিকে।
[আরও পড়ুন: ‘বিজেপির টিকিটে ভোটে আর লড়ব না’, সুদীপ রায় বর্মনের ঘোষণায় নয়া জল্পনা ত্রিপুরায়]
আসলে, যোগী আদিত্যনাথ নিজে ঠাকুর সম্প্রদায়ের লোক হওয়ায় উত্তরপ্রদেশের উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণদের মধ্যে বিজেপির প্রতি বিতৃষ্ণা তৈরি হয়েছে। সেই ঘাটতি মেটাতে এবার ওবিসি এবং দলিতদের টার্গেট করেছে গেরুয়া শিবির। কিন্তু যেভাবে একের পর এক দলিত নেতা দল ছাড়ছেন, তাতে দলিত ভোটের আশাও ক্রমশ ক্ষীণ হওয়া শুরু করেছে। তাছাড়া যে ভাবে ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিধায়করা দল ছাড়ছেন, তাতে ভোটারদের উদ্দেশে খুব একটা ভাল বার্তাও যাবে না।