সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ইরানে হামলা করে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন করেছে আমেরিকা। রবিবার এমনই মন্তব্য করলেন ‘অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন’ (মিম)-এর প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়েইসি। পাশাপাশি, তিনি জানান, মার্কিন সংবিধান এবং পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তির লঙ্ঘনও করেছে আমেরিকা।
সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “আমেরিকার সংবিধান অনুসারে, মার্কিন কংগ্রেসের অনুমোদন ছাড়া দেশটি অন্য কোনও সার্বভৌম দেশকে আক্রমণ করতে পারে না। গাজায় গণহত্যা ধামাচাপা দেওয়ার জন্যই ইরানের উপর হামলা চালিয়েছে আমেরিকা।” তিনি আরও বলেন, “আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে ইরানের হাতে থাকবে ৯০ শতাংশ বিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম। মধ্যপ্রাচ্যের অন্যান্য দেশগুলিও ইজরায়েলকে ঠেকাতে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে।” একইসঙ্গে ইরান এবং ইজরায়েলে বসবাসকারী ভারতীয় নাগরিকদের প্রতিও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন হায়দরাবাদের সাংসদ।
ইজরায়েল-ইরান যুদ্ধে সরাসরি জড়িয়ে পড়েছে আমেরিকা। রবিবার ভোর রাতে মার্কিন সেনাবাহিনী ইরানের ফোরদো, নাতানজ ও ইসফাহানে অবস্থিত তিনটি পারমাণবিক কেন্দ্রে হামলা চালায়। আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে বলেন, “আমেরিকা ইরানের তিনটি পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রে সফলভাবে হামলা চালিয়েছে। আমেরিকার সব বিমান এখন ইরানের আকাশসীমার বাইরে।” মার্কিন প্রেসিডেন্টের দাবি, ইরানের ওই তিন পরমাণু গবেষণাকেন্দ্রগুলি পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছে মার্কিন সেনা। অন্য কোনও দেশের সেনাবাহিনী এখনও পর্যন্ত এই ধরনের অভিযান চালাতে পারেনি। আর কোনও সেনার পক্ষে এটা সম্ভবও হত না।” একই সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছেন, “এবার শান্তির সময়।”
তাৎপর্যপূর্ণভাবে শুক্রবারই ট্রাম্প জানিয়েছিলেন, ইরানকে পরমাণু অস্ত্র গবেষণা বন্ধের জন্য দু’সপ্তাহ সময় দিতে চান তিনি। কিন্তু সেই সময়সীমার অনেক আগেই ইরানে হামলা চালিয়ে দিল মার্কিন সেনা। পালটা শনিবার ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের হুঁশিয়ারির সুরেই বলে দেন, ‘পারমাণবিক কার্যকলাপ কোনওভাবেই বন্ধ করা হবে না।’ সম্ভবত পেজেশকিয়ানের সেই বার্তার পরই ট্রাম্প ইরানে হামলার সিদ্ধান্ত নেন। মধ্যপ্রাচ্যের এই লড়াইয়ে আমেরিকা সরাসরি জড়িয়ে পড়ায় বিশ্বযুদ্ধের আশঙ্কা যে ঘনীভূত হচ্ছে, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না।
