সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অসমে (Assam) লাভ জেহাদ বিতর্ক তুঙ্গে। গত সোমবার রাজ্যের গোলাঘাটে এক তরুণী এবং তাঁর মা-বাবার খুনের পর থেকেই উত্তপ্ত পরিস্থিতি। আগুনে ঘি ঢেলেছেন অসমের কংগ্রেস সভাপতি (Congress President)। তিনি মন্তব্য করেছেন, লাভ জেহাদ (Love jihad) মহাভারতেও ছিল। এমন কথায় বেজায় ক্ষুব্ধ অসমের মুখ্যমন্ত্রী তথা গেরুয়া নেতা হিমন্ত বিশ্বশর্মা (Himanta Biswa Sarma)। তাঁর দাবি, “লাভ জেহাদের ফলেই সামাজিক অস্থিরতা তৈরি হচ্ছে। নচেত হিন্দু-মুসলিম শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান সম্ভব ছিল।”
শনিবার অসম পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দেন হিমন্ত। সেখানে নিজের বক্তব্যে বলেন, “লাভ জেহাদ, জোরপূর্বক ধর্মান্তর সামাজিক অস্থিরতা তৈরি করছে। আমাদের দেখতে হবে মেয়েদের জোর করে ধর্মান্তরিত করে বিয়ে করা হচ্ছে কি না… এই ধরনের বিয়েকে তদন্তের আওতায় আনতে হবে।” আরও স্পষ্ট করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “একজন কাজি (মুসলিম ধর্মগুরু) হিন্দু-মুসলিম বিবাহ নিবন্ধন করতে পারেন না। একইভাবে, একজন হিন্দু পুরোহিতও আইনগতভাবে একই কাজ করতে পারেন না… যদি ভিন্ন ধর্মের ছেলে-মেয়েরা বিয়ে করতে চায় তবে তাঁদের উচিত বিশেষ বিবাহ আইনের অধীনে তা করা। ধর্মান্তরিত করা চলবে না।” লাভ জেহাদের বিষয়ে রাজ্যের পুলিশকে সক্রিয় হওয়ারও নির্দেশ দেন হিমন্ত।
[আরও পড়ুন: লাখ টাকার বিনিময়ে গুলি! আদ্রায় তৃণমূল নেতা খুনে গ্রেপ্তার আরও ১ শুটার]
উল্লেখ্য,গত সোমবার উত্তর-পূর্বের রাজ্যটিতে স্ত্রী, শ্বশুর, শাশুড়িকে খুনের পর ৯ মাসের ছেলেকে নিয়ে থানায় আত্মসমর্পণ করেন নাজিবুর রহমান বোরা নামের এক যুবক। এই ঘটনাকে ‘লাভ জেহাদ’ বলে দাবি করেন হিমন্ত। এরপরই অসম কংগ্রেসের সভাপতি ভূপেন বোরা টেনে আনেন মহাভারতের প্রসঙ্গ। সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় তাঁকে বলতে শোনা যায়, ”যখন ভগবান শ্রীকৃষ্ণ রুক্মিনীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন, অর্জুন এসেছিলেন মহিলার ছদ্মবেশে। লাভ জেহাদ মহাভারতেও ছিল।”
[আরও পড়ুন: চোখ মেলে তাকালেন রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য, রাইলস টিউবে খাওয়ানোর চেষ্টা]
এই মন্তব্যের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন হিমন্ত। প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, ”শ্রীকৃষ্ণ ও রুক্মিনীর প্রসঙ্গ এভাবে টেনে আনাটা নিন্দনীয়। এটা সনাতন ধর্মবিরোধী। অপরাধমূলক কার্যকলাপের সঙ্গে ভগবানের তুলনা করা কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।” এই সঙ্গে তাঁর মন্তব্য ছিল, ”যদি কেউ অভিযোগ দায়ের করেন আমরা ওঁকে গ্রেপ্তার করতে বাধ্য হব।”