সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নারী কল্যাণ ও নিরাপত্তায় সংসদে ঐতিহাসিক বিল পেশ করলেন কংগ্রেস সাংসদ কাদিয়াম কাব্য। এদিন লোকসভায় মোট দুটি বিল পেশ হয়েছেন তিনি। যেখানে প্রথম বিলে কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে এবং দ্বিতীয় বিলে দুর্দশাগ্রস্ত মহিলাদের জন্য সরকারি হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।
তেলেঙ্গানার ওয়ারাঙ্গেলের সাংসদের পেশ করা দুটি বিলের প্রথমটিতে বলা হয়েছে, যে সব মহিলারা চাকরিজীবী তাঁদের স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে সরকার উদ্যোগ নিক। সমস্ত সরকারি, বেসরকারি এবং অসংগঠিত ক্ষেত্রে পরিষ্কার শৌচাগার এবং পর্যাপ্ত স্যানিটারির ব্যবস্থা আইনত বাধ্যতামূলক হোক। যাতে ঋতুস্রাব চলাকালীন কোনওরকম স্বাস্থ্যসংক্রান্ত ঝুঁকির মুখে পরতে না হয়। এই আইন শুধু মহিলাদের স্বাস্থ্য এবং মর্যাদার জন্যই নয়, বরং তাদের কর্মক্ষেত্রে তাঁদের অগ্রগতির জন্যও অপরিহার্য।
এর পাশাপাশি দ্বিতীয় বিলে অবিবাহিত, বিধবা এবং দুর্দশাগ্রস্ত মহিলাদের জন্য সরকারি হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে। দাবি করা হয়েছে, এইসব মহিলাদের জরুরি আর্থিক সাহায্য, মাসিক ভাতা, আবাসস্থল ও জনকল্যাণমূলক প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া হোক। দেশের হাজার হাজার বিধবাদের যে ভয়ংকর বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হয় তা তুলে ধরে সংসদে কাব্য বলেন, এই সব মহিলাদের বেশিরভাগই শ্বশুরবাড়ি এবং বাপের বাড়ি থেকে পরিত্যক্ত হওয়ার পরে শোচনীয় পরিস্থিতির মুখোমুখি হন। এদের আয়ের কোনও উৎস নেই। অনেকের আবার সন্তানকে নিয়ে চরম দারিদ্যের মধ্যে দিন কাটাতে হয়। আরও উদ্বেগের বিষয় হল, গ্রামীণ অঞ্চলে এই বিধবারা যৌন নির্যাতন ও জোরপূর্বক পতিতাবৃত্তির শিকার হন। কিছু ক্ষেত্রে বিধবাদের 'ডাইনি' হিসেবে হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। বেশিরভাগ বিধবারা জীবিকা নির্বাহের জন্য পরিচারিকা হিসেবে কাজ করেন।
শুধু তাই নয়, এই বিলে মহিলাদের ঋতুকালীন ছুটিরও দাবি করেছেন সাংসদ। বর্তমান শ্রম আইন সংশোধনের দাবি জানিয়ে যুক্তি সহকারে তিনি বলেন, ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনে এক গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মহিলাদের ঋতুকালীন ব্যাথা প্রায় হার্ট অ্যাটাকের মতোই তীব্র। ফলে বিশেষ সেই দিনগুলিতে মহিলাদের ছুটি পাওয়ার অধিকার থাকা উচিত। তাই নয়া বিলে মাসে দু'দিন মহিলা কর্মীদের সবেতন ছুটি দেওয়া হোক যাতে ওই দিনগুলিতে তাঁরা বিশ্রাম পেতে পারেন।
