সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: নোভেল করোনা ভাইরাসের প্রকোপে বিশ্বজুড়ে মৃত্যু মিছিল চলছে। প্রচুর মানুষ আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালেও ভরতি রয়েছেন। নিজেদের জীবন বিপন্ন করে সেই সব মরণাপন্ন রোগীদের চিকিৎসা করছেন চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। স্নান ও খাওয়া ভুলে প্রায় ২৪ ঘণ্টা ধরেই পরিষেবা দিয়ে চলেছেন। বিশ্বের পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালেও সেই একই ছবি ধরা পড়েছে। ইতিমধ্যে করোনা রোগীদের চিকিৎস করতে গিয়ে কয়েকজন ডাক্তারও এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। আরও এই বিষয়ে খোঁজখবর করতে গিয়ে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।

অভিযোগ উঠছে, অজানা এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্তদের সুস্থ করার দায়িত্ব যাঁদের উপর। তাঁদের জন্যই ঠিকঠাক নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হচ্ছে না অনেক জায়গায়। সুরক্ষিত পোশাকের অভাব থাকায় আক্রান্তদের চিকিৎসার সময় বাধ্য হয়ে রেনকোট ও হেলমেট ব্যবহার করছেন অনেক চিকিৎসক। কোথাও কোথাও আবার বাতিল প্লাস্টিক দিয়ে জোড়াতাপ্পি মেরে তৈরি করা পোশাকে কাজ চালাচ্ছেন নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীরা। গোটা দেশে এই মারণ ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১৩০০ পেরিয়েছে। তিনজন বিদেশি বাদে মৃত্যু হয়েছে ৩৭ জন ভারতীয়। তখন অনেক হাসপাতালে মেডিক্যাল এবং সার্জিক্যাল মাস্কেরও অভাব রয়েছে।
[আরও পড়ুন: করোনায় আক্রান্ত দিল্লি মহল্লার আরও এক চিকিৎসক, কোয়ারেন্টাইনে রোগীরা ]
সূত্রের খবর, দক্ষিণ কোরিয়া ও চিনে থেকে এই ধরনের জিনিসপত্র আসা বন্ধ রয়েছে। চাহিদা অনুযায়ী দেশেও এত জিনিস তৈরি করা যাচ্ছে না। ফলে, এই সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে চেষ্টা চলছে। আশা করা যায় খুব তাড়াতাড়ি এই সমস্যার সমাধান হবে। এই ধরনের আশ্বাসবাণীর পরেও অবশ্য বিষয়টিকে কেন্দ্র করে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতার বেলেঘাটা আই ডি হাসপাতালে সুরক্ষিত পোশাকের জায়গায় রেনকোট দেওয়ার জেরে জুনিয়র ডাক্তারদের ক্ষোভপ্রকাশ করতেও দেখা যায়।
এপ্রসঙ্গে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক জুনিয়র ডাক্তার বলেন, ‘এভাবে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমরা পক্ষে কাজ করা সম্ভব নয়।’ যদিও এই বিষয়ে কিছু বলতে অস্বীকার করেন ওই হাসপাতালের সুপার ডা. আশিস মান্না। প্রায় একই অবস্থা চোখে পড়েছে হরিয়ানাতেও। সেখানকার একটি ইএসআই (ESI) হাসপাতালে এন ৯৫ মাস্ক না থাকায় বাইকের হেলমেট মাথায় দিয়ে রোগী দেখছেন সন্দীপ গর্গ নামে এক চিকিৎসক। এপ্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, আমার কাছে কোনও এন ৯৫ মাস্ক নেই। নিরাপত্তার জন্য তাই সার্জিক্যাল মাস্কের উপর হেলমেট ব্যবহার করছি।’
[আরও পড়ুন: করোনা মোকাবিলায় ‘রাফ অ্যান্ড টাফ’ যোগী! প্রকাশ্যে ভর্ৎসনার পর সরলানে আমলাকে]
পরিস্থিতি দেখে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই হওয়ার ছিল। দেশের জনস্বাস্থ্য খাতে জিডিপির মাত্র ১.৩ শতাংশ টাকা ব্যয় করে ভারত সরকার। যা বিশ্বের অন্যান্য দেশের থেকে অনেক কম। যার ফলে এই সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
The post করোনার বিরুদ্ধে ছেঁড়া রেনকোট ও হেলমেট নিয়ে লড়ছেন চিকিৎসকরা, সমালোচনা নেটদুনিয়ায় appeared first on Sangbad Pratidin.