সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: কানাডার প্রিন্স এডওয়ার্ড দ্বীপে বড়সড় সমস্যার মুখে পড়েছেন ভারতীয় পড়ুয়ারা। তাঁদের একটা বড় অংশকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে দেশে। এর মধ্যে একটা বড় অংশের ভারতীয় পড়ুয়াও রয়েছেন। তাঁদের অভিযোগ, তাঁরা স্নাতক হওয়ার পরও সেখানে কাজ করার অনুমতি হিসাবে ‘ওয়ার্ক পারমিট’ পাচ্ছেন না। সেই কারণেই তাঁদের দেশে প্রত্যর্পণের মুখে পড়তে হচ্ছে বলেও অভিযোগ। এই অভিযোগ নিয়েই গত কয়েক দিন ধরে স্থানীয় প্রশাসনের বিরুদ্ধে তাঁরা প্রতিবাদে সরব। তাঁদের দাবি না মানা হলে তাঁরা অনশনের রাস্তা নেবেন বলে সরব হয়েছেন। প্রতিবাদরত পড়ুয়াদের দাবি, তাঁদের সেদেশে থাকতে দিতে হবে। যদিও নয়াদিল্লির দাবি, গোটা বিষয়টি সম্পর্কে তারা অবহিতই নয়।
গত এক বছর ধরে কানাডায় (Canada) বসবাসকারী এই পড়ুয়াদের দাবি, স্থানীয় সরকার সেখানে পড়ুয়াদের ওয়ার্ক পারমিট সংক্রান্ত নীতিতে রাতারাতি বদল এনেছে। প্রতিবাদীদের অভিযোগ, “ওরা আমাদের এখানে ডেকেছে, এখন তারা চায় আমরা চলে যাই।” প্রতিবাদীদের প্রতিনিধি রুপিন্দর সিং ২০১৯ সাল থেকে কানাডায় রয়েছেন। তিনি বলেন, “আমাদের প্রভিন্স আমাদের ভুল প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।” বিস্তারিত দিয়ে তিনি জানিয়েছেন, “ওরা আমাদের ভুল তথ্য দিচ্ছিল। এটি সম্পূর্ণভাবে একটি শোষণ।“
[আরও পড়ুন: ‘জেলের ঘানি টানিয়ে ছাড়ব’, বিজেপি যোগের অভিযোগ তোলায় অতিশীকে তোপ স্বাতীর]
ইতিমধ্যেই কানাডায় খলিস্তানি নেতা নিজ্জর হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বেশ কয়েকজন ভারতীয়। তারই মাঝে সেখানে পড়ুয়াদের এই প্রতিবাদ। তাঁদের দাবি তাঁরা ওয়ার্ক পারমিটের ক্ষেত্রে প্রিন্স এডওয়ার্ড দ্বীপে প্রশাসনিক নীতি বদলের জন্য প্রত্যর্পণের মুখে পড়েছেন। পিইআই বা প্রিন্স এডওয়ার্ড আইল্যান্ড একটি আইন সদ্য পাশ করেছে, যেখানে স্নাতকোত্তর পড়ুয়াদের ওয়ার্ক পারমিট দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সীমাবদ্ধতা লাগু করা হয়েছে। তারা এখন শুধু, নির্মাণ কাজে থাকা পড়ুয়ারা, স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে পড়াশোনা করা পড়ুয়াদেরই দিচ্ছে ওয়ার্ক পারমিট। ফলে কানাডার বাইরে থেকে আসা বহু পড়ুয়াকে সেদেশ ছাড়তে বাধ্য করা হচ্ছে। প্রায় দু’সপ্তাহ ধরে চলছে প্রতিবাদ বিক্ষোভ। কিন্তু নয়াদিল্লি জানিয়েছে, তারা এ বিষয়ে কিছু জানে না। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেছেন, “ওখানে বড় কিছু ঘটনা ঘটেছে বলে আমাদের জানা নেই।” যদিও এক্স হ্যান্ডল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঢেউ।
ভারতীয় (Indian Student) শিক্ষার্থীদের দাবি, ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ বাড়ানো এবং অভিবাসন নীতিতে সাম্প্রতিক পরিবর্তনের পর্যালোচনা করা অবিলম্বে প্রয়োজন। এর আগে ম্যানিটোবাতেও একই ঘটনা ঘটে, যার পরে ট্রুডো সরকার নড়েচড়ে বসে ওয়ার্ক পারমিটের মেয়াদ দু’বছর বাড়িয়ে দেয়। এবার একই ধরনের ঘটনা প্রিন্স এডওয়ার্ড দ্বীপে। গত এক বছরে ভারত ও কানাডার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি হয়েছে অনেকটাই সদ্য খলিস্তানি নেতা নিজ্জরের হত্যাকাণ্ড ঘিরে ব্যাপক কূটনৈতিক চাঞ্চল্য চলছে। তারই মাঝে ভারতীয় পড়ুয়াদের কানাডায় এই ধরনা নতুন করে উদ্বেগ
তৈরি করেছে।