সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: আইপিএলের প্রথম ম্যাচেই মুখ থুবড়ে পড়ল কলকাতা নাইট রাইডার্স (Kolkata Knight Riders)। খাতায়-কলমে হারের ব্যবধান মাত্র ৭ রানের হলেও, বাস্তবের মাটিতে কার্যত একপেশেভাবেই হারতে হয়েছে নাইটদের। এই হারের ময়নাতদন্তে উঠে আসছে সম্ভাব্য পাঁচ কারণ।
১। বিশ্রী অধিনায়কত্ব: নাইটদের অধিনায়ক হিসাবে প্রথম ম্যাচে ডাহা ফেল নীতীশ রানা। হাতে একের পর এক বিকল্প থাকা সত্ত্বেও সেভাবে ব্যবহারই করতে পারলেন না তিনি। পাঞ্জাব ব্যাটাররা যখন শার্দূল ঠাকুর, টিম সাউদিদের ইচ্ছামতো পেটাচ্ছেন, তখনও অন্য কোনও বোলারকে ব্যবহার করলেন না রানা। অথচ, তাঁর হাতে অনুকুল রায় ছিলেন, তিনি নিজে স্পিন করতে পারেন, আন্দ্রে রাসেল ছিলেন। যদি ধরেই নেওয়া হয় রাসেল পুরো ফিট নন, তাও বরুণ চক্রবর্তী, নারিনরা যখন পিচ থেকে কিছুটা হলেও সাহায্য পাচ্ছিলেন, তখন কেন অনুকুল রায়কে ব্যবহার করা হল না। আর তাঁকে যদি বল নাই করানো হবে তাহলে কেন জগদীশনকে না খেলিয়ে তাঁকে খেলানো হল? এ প্রশ্নের উত্তর অবশ্য নীতীশ রানার (Nitish Rana) পাশাপাশি চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতকেও দিতে হবে।
[আরও পড়ুন: ‘আমার বিরুদ্ধে একটাও কথা বললে…’, কেজরিওয়ালের অসম সফরের আগে হুঁশিয়ারি হিমন্তর]
২। পেসারদের ব্যর্থতা: পাঞ্জাবের অর্শদীপ সিং (Arshdeep Singh) যেখানে মাত্র ১৯ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিচ্ছেন, সেই একই পিচে কেকেআরের টিম সাউদি ৪ ওভারে দিচ্ছেন ৫৪ রান। ১০ কোটির বোলার শার্দূল ঠাকুর ৪ ওভারে দিচ্ছেন ৪৩ রান। দলের প্রধান দুই পেসারের এই দিশাহীন পারফরম্যান্স শুরুতেই ব্যাকফুটে ফেলে দেয় নাইটদের।
৩। টপ অর্ডারের ব্যর্থতা: প্রথম ম্যাচে যেভাবে কেকেআরের ব্যাটিং বিভাগ পাঞ্জাবের শর্ট বোলিংয়ের সামনে মুখ থুবড়ে পড়ল সেটাও চিন্তায় রাখবে কোচ চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতকে। শ্রেয়স আইয়ারের অভাব যে গোটা মরশুমে নাইটদের ভোগাবে, সেটাও এদিন মনদীপ সিং, অনুকুল রায়দের দায়িত্বজ্ঞানহীন ব্যাটিংয়ে প্রমাণ হয়ে গেল। গুরবাজ ছাড়া টপ অর্ডারের বাকি দুই ব্যাটারের উদ্দেশ্যই বোঝা গেল না। মনদীপ, অনুকুলরা ঠিক কী করতে চাইছিলেন, সেটা তাঁরাই জানেন। তাছাড়া সেট হওয়ার পর একের পর এক ব্যাটার যেভাবে উইকেট ছুঁড়ে দিয়ে এলেন, সেটাও কম চিন্তার নয়।
[আরও পড়ুন: এবার জন্ম তারিখ নিয়ে বিতর্কে শতরূপ ঘোষ, শুভেচ্ছা কুড়োতে ব্যবহার করেন লেনিনের জন্মদিন!]
৪। অহেতুক পরীক্ষানিরীক্ষা: দুই মরশুম আগে কেকেআরকে (KKR) ফাইনালে তুলেছিলেন ওপেনার ভেঙ্কটেশ আইয়ার। টুর্নামেন্টের শুরুতে অনেকেই ধরে নিচ্ছিলেন ভেঙ্কি গুরবাজের সঙ্গে ওপেন করবে। অথচ কেকেআর এদিন ওপেন করাল মনদীপ সিংকে। আর ভেঙ্কটেশকে খেলানো হল চারে। হঠাত অনুকুল রায়কে খেলানো হল ৩ নম্বরে। যিনি কিনা ঘরোয়া ক্রিকেটেও নিয়মিত ব্যাটিং করেন না। আবার দলের এক নম্বর ব্যাটার রাসেল ব্যাট করলেন ৬ নম্বরে। প্রথম ম্যাচে এই গুচ্ছ পরীক্ষানিরীক্ষার কোনওটাই কাজে লাগল না। বরং পুরো ম্যাচে ছন্দ পেতে অসুবিধা হল নাইটদের।
৫। দুর্ভাগ্য: নাইটদের হারে খানিকটা ভাগ্যও দায়ী। ১৯২ রানের টার্গেট নিয়ে খেলতে নেমে শুরুতেই ফ্ল্যাডলাইট বিভ্রাটে পড়তে হল কেকেআরকে। যার ফলে খেলা শুরু হল দেরিতে। আবার মোহালিতে বিকেল বেলা ভালই রোদ ছিল। নাইটরা ব্যাটে নামতেই কোথা থেকে হাজির মেঘ। যার ফলে কিছুটা সুবিধা পেলেন পাঞ্জাব পেসাররা। আবার যে অবস্থায় খেলা বৃষ্টির জন্য বন্ধ হল, তখনও নাইটরা হয়তো আশা করেছিলেন চমকপ্রদ কিছু হয়ে যেতে পারে। খেলা যখন বন্ধ হল তখন ২৪ বলে ৪৬ রান দরকার ছিল নাইটদের। ব্যাট করছিলেন শার্দূল ঠাকুর (Shardul Thakur) এবং সুনীল নারিন। এরা দু’জনেই কমবেশি ব্যাট করেন। সেই সময় খেলা বন্ধ না হলে কে জানে খেলার ফল বদলে যেত না!