shono
Advertisement
Summer Health Tips

গরমে পান্তা না টাটকা ভাতে লেবু কচলে খাওয়া বেশি উপকারী? বিশেষজ্ঞর মত জেনে রাখুন

অভ্যাস না থাকলেও এখন ছাতা ব্যবহার করতে হবে। সঙ্গে রাখতে হবে জলের বোতল। 
Posted: 03:34 PM Apr 23, 2024Updated: 03:34 PM Apr 23, 2024

ভয়ংকর আগ্রাসী হয়ে উঠেছে বৈশাখ। তাপপ্রবাহ কলকাতা-সহ একাধিক জেলায়। কী করলে মোকাবিলা করা যাবে ৪৫-৪৬ ডিগ্রির গরম? কেমন হবে খাওয়া দাওয়া? ভালো থাকার পাসওয়ার্ড গৌতম ব্রহ্মকে  জানালেন রাজ্যের আয়ুর্বেদ অধিকর্তা ডা. দেবাশিস ঘোষ।  

Advertisement

পানাগড় ৪৬ ছাঁড়িয়েছে। বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, বীরভূম, বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর ৪৫ ছুঁইছুঁই। গরমের এই মারকুটে ব‌্যাটিং টি-টোয়েন্টির যে কোনও ব‌্যাটারকে লজ্জায় ফেলবে। দুপুর বারোটার মধ্যেই রাস্তাঘাট শুনশান। কিন্তু কাজের লোকেদের তো আর বাড়িতে বসে থাকলে হবে না। বেরোতেই হবে। তাই কিছু সাবধানতা অবলম্বন করতেই হবে। অভ‌্যাস না থাকলেও এখন ছাতা ব‌্যবহার করতে হবে। জলের বোতল সঙ্গে রাখতে হবে। হালকা ঢিলেঢালা সুতির পোশাক পরতে হবে। সহজপাচ্য টাটকা খাবার খেতে হবে। দু-তিনবার স্নান করতে হবে।

 

এগুলি সাধারণ নিয়ম। কিন্তু এর বাইরেও হাতের নাগালে থাকা কিছু জিনিস গরমের মোকাবিলায় ব‌্যবহার করলে ভালো থাকা যাবে। যেমন আমপোড়া, নুন-চিনি-লেবুর শরবত, লস্যি-ঘোল। পাশাপাশি খাবার-দাবারে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চলতে হবে। সংযম চাই। তবেই গরমের দোসর হওয়া বদহজম, অম্বল, রক্ত আমাশার মতো রোগ দূরে রাখা যাবে। এমনটাই বলছে আয়ুর্বেদ।

গরমের মোকাবিলায় অনেকেই পান্তা খান। কিন্তু, বাস্তবটা হল, যাঁরা অত্যন্ত কায়িক পরিশ্রমের কাজ করেন যেমন চাষি বা দিনমজুর শ্রেণির মানুষ, তাঁদের জন্য পান্তা ঠিক আছে। কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে নৈব নৈব চ।  কারণ, পান্তা শরীরে আমভাব বাড়িয়ে দেয়। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা ডেকে আনে।  তবে টাটকা ভাতে জল দিয়ে লেবু কচলে খাওয়া যেতেই পারে। গরম কালে স্যালাড খুবই উপযোগী। স্যালাডে অবশ্যই শসা এবং কাঁচা পেঁয়াজ যেন থাকে। এই দুটো জিনিসই শরীর ঠান্ডা রাখে।

পান্তা ভাত। ছবি: সংগৃহীত।

অনেকে এই গরম কালেও সর্দি-কাশিতে ভোগেন অর্থাৎ এলার্জির সমস্যা আছে। এঁরা সকালে খালি পেটে পাঁচ ছটা গোল মরিচ জল দিয়ে না চিবিয়ে খেতে পারেন। উপকার পাবেন। গরম কালে স্নান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একাধিকবার স্নান করা যেতে পারে। সমস‌্যা নেই। তবে মাথায় রাখতে হবে স্নান করতে হবে খাওয়ার আগে। পরে নয়। গরম কালে কচি ডাবের জল অত্যন্ত উপযোগী। শরীর ঠান্ডা রাখে। সেই সঙ্গে সোডিয়াম এবং পটাশিয়ামের ভারসাম্য বজার রাখে। তবে রাস্তায় কাঁটা ফল এড়িয়ে চলতে হবে কিংবা ফ্রিজে রাখা ফলের রস। 

[আরও পড়ুন: দেবকে দেখতেই ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান, মোক্ষম জবাব তৃণমূল প্রার্থীর]

কী খাবেন, আর কী খাবেন না, রোগ হলে কোন টোটকায় সামাল দেবেন, সবই জেনে রাখা ভালো।

খেতে হবে -
গরমে সহজপাচ্য খাবার খাওয়া উচিত। মিষ্টি, তেতো, ঠান্ডা, স্নিগ্ধ দ্রব্য খেতে হবে। সজনে ডাঁটা, ঢ্যাঁড়শ, পলতা পাতা, ঝিঙে, কচি পটল, লাউ, সাঁচি কুমড়ো, ডুমুর, কাঁচকলা, পুরনো চালের ভাত, হিনচে শাক, নটে শাক, মুগ বা মুসুরের হালকা ডাল, মোচা ইত্যাদি।

মাছ: চারাপোনা, মৌরলা, মাগুর, শিঙি মাছের পাতলা ঝোল খাওয়া ভালো। বড় মাছ, সামুদ্রিক মাছ, চিংড়ি, কাঁকড়া এড়িয়ে চলাই ভালো।

মাংস: মাংস খেলে খুবই কম মশলা দিয়ে ছোট দেশি মুরগির পাতলা ঝোল খাওয়া যেতে পারে। তবে, খাসির মাংস যত কম খাওয়া যায় ততই ভালো।

পানীয় জল: তেষ্টা পেলে প্রাকৃতিক কর্পূর ফেলে শোধন করা মাটির কুঁজোর ঠান্ডা জল।

ঘোল: টক দইকে ভাল করে মন্থন করে ঘোল তৈরি করে তাতে ভাস্কর লবণ বা সৈন্ধব লবন দিয়ে খেলে পেটের সমস্যা বিশেষ করে আমাশা বা অর্শে ভালো কাজ দেয়। শরীর ঠান্ডা থাকে।

আমের শরবত: কাঁচা আম পুড়িয়ে তার সঙ্গে জল দিয়ে বিটলবণ ও চিনি মিশিয়ে শরবত খেলে আরাম পাওয়া যায়। ছোলার ছাতু চারভাগ জলে গুলে শরবত করে খেলেও গরমে স্বস্তি মেলে।

ফল: ডায়াবেটিস না থাকলে তরমুজ, খেজুর। থাকলে শসা, আঙুর, জামরুল।

কী খাবেন না
গরম, ঝাল, নোনতা, চর্বিজাতীয় খাবার বেশি খাওয়া যাবে না। গুরুপাক খাবার এড়িয়ে চলাই ভালো। মদ্যজাতীয় পানীয় না খাওয়াই ভালো।

গরমে রোগ ও তার ঘরোয়া চিকিৎসা
বদহজম ও অম্বল: গাঁদাল পাতার ঝোল করে খেলে খুব ভালো। আদার খোসা ছাড়িয়ে এক টুকরো সৈন্ধব লবণ এক চিমটে দিয়ে খেলে বদহজমে ভালো কাজ দেয়। তাছাড়া একচামচ ধনে এক গ্লাস জলে ফুটিয়ে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে ঠান্ডা করে দিনে দুবার খেলে বদহজম দূর হয়। অম্বলে গুলঞ্চের কাণ্ডের রস করে একচামচ, ১/৪ চামচ মধু-সহ খেলে খুবই ভালো কাজ দেয়। এছাড়া ত্রিফলা চূর্ণ একচামচ করে তিনবার মধু-সহ খেলে অম্বল দূর হয়।

উদরাময় ও রক্ত আমাশা: বেদানার কুঁড়ি বেটে নিয়ে দুচামচ, ১/৪ চামচ মধু-সহ খেলে এই রোগে খুবই কাজ দেয়। কুর্চি গাছের ছাল চূর্ণ করে ১/২ কাপের সঙ্গে চার কাপ জল মিশিয়ে ফুটিয়ে এক কাপ থাকতে নামিয়ে ছেঁকে দুবার খেলে ভালো কাজ দেয়। কাঁটা নটের মূল চালধোয়া জলে পিষে একটু চিনি ও মধু মিশিয়ে খেলে রক্ত আমাশা কমে যায়। ডালিম পাতা, জামপাতা বেটে জলে ফেলে একটু চিনি মিশিয়ে শরবত করে খেলে পাতলা পায়খানা বন্ধ হয়। ছাগলের দুধ ১/২ কাপ করে দিনে দু-একবার খেলে রক্ত আমাশায় ভাল কাজ দেয়।


খইয়ের সরবত
একমুঠো খই একগ্লাস দুধে ভিজিয়ে এক চামচ চিনি মিশিয়ে খেলে শরীর ঠান্ডা থাকে। গরমে মেলে আরাম। তাছাড়া যাদের রক্তে ইউরিয়ার পরিমাণ বেশি (কিডনি রোগী), কিংবা বমিবমি ভাব রয়েছে তাদের জন্য ব্রহ্মাস্ত্র। সেক্ষেত্রে গরম জলে খই কচলে ঠান্ডা করে খেতে হবে।

[আরও পড়ুন: ভোট চাই ‘রামচন্দ্র’র, করজোড়ে জনতার দরবারে ‘সীতা-লক্ষ্মণ’]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

হাইলাইটস

Highlights Heading
  • যাঁরা অত্যন্ত কায়িক পরিশ্রমের কাজ করেন যেমন চাষি বা দিনমজুর শ্রেণির মানুষ, তাঁদের জন্য পান্তা ঠিক আছে।
  • কিন্তু বাকিদের ক্ষেত্রে নৈব নৈব চ।  কারণ, পান্তা শরীরে আমভাব বাড়িয়ে দেয়। ফ্যাটি লিভারের সমস্যা ডেকে আনে।
Advertisement