স্টাফ রিপোর্টার: ফাইনালে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে এই মরশুমের মতো সামনের মরশুমেও এএফসি কাপ নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে এটিকে মোহনবাগানের (ATK Mohun Bagan)। যেহেতু গ্রুপ লিগে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য পরের মরশুমে এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ ইতিমধ্যেই পেয়ে গিয়েছে মুম্বই সিটি এফসি (Mumbai City FC)। তাই ফাইনালে চ্যাম্পিয়ন অথবা রানার্স কোনও পজিশনই এটিকে মোহনবাগানের এএফসি কাপ খেলা আটকাবে না। শনিবার আইএসএলের (ISL 2020) ফাইনাল তাই হাবাসের দলের কাছে মূলত সম্মান রক্ষার লড়াই। সেক্ষেত্রে আবির্ভাবেই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করা সম্ভব হবে। আর গ্রপ লিগে একবারও হারাতে না পারা মুম্বইকে ফাইনালে হারাতে পারলে, এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে সরাসরি খেলতে না পারার ক্ষতে কিছুটা হলেও প্রলেপ দেওয়া যাবে। শনিবারের ফাইনালটিই এটিকে মোহনবাগানের কাছে আক্ষরিক অর্থেই তাই সম্মানের লড়াই।
বুধবার বিশ্রাম দেওয়ার পর এদিন ফুটবলারদের নিয়ে বিকেলে প্র্যাকটিসে নেমে পড়লেন হাবাস। যেখানে ভীষণভাবেই জোর দেওয়া হল সেটপিসে। সেটপিস থেকে শুধু গোল করা নয়।সেটপিস থেকে কীভাবে গোল আটকাতে হবে, তা নিয়েও দীর্ঘক্ষণ প্র্যাকটিস হল। বলাই বাহুল্য সেটপিস থেকে গোল আটকানোর ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা পালন করলেন বাংলার গোলকিপার অরিন্দম ভট্টাচার্য। শুধু এদিন প্র্যাকটিসে কেন, পুরো আইএসএল জুড়েই অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছেন এই বাঙালি গোলকিপার। ফাইনালের আগে এদিন অরিন্দম বলছিলেন, “গ্রুপ লিগে মুম্বই সিটির বিরুদ্ধে দুটো ম্যাচেই হেরেছি। তাই ফাইনালে ট্রফি জিততে পারলে গ্রুপ লিগের হারগুলো ভুলে যাবে সবাই।”
[আরও পড়ুন: সেই পুরনো চেনা ছন্দ, চেন্নাইয়ের নেটে একের পর এক ছক্কা ধোনির, দেখুন ভিডিও]
শনিবার ফাইনাল খেলতে নামার আগে গতবারের উদাহরণ দিচ্ছেন অরিন্দম। বললেন, “গতবারও কিন্তু আমরা চেন্নাইয়িনের কাছে গ্রুপ লিগে হেরে গিয়েছিলাম। ফাইনালে কিন্তু ওদের হারিয়েছি। এবারও সেরকম হতেই পারে। তাছাড়া মুম্বই তো অপরাজেয় নয়। আমাদের মতো ওরাও গ্রুপ লিগে গোল খেয়েছে, হেরেছে। তাই ফাইনালের ম্যাচটা আমরা জেতার আশা করতেই পারি। আর মাথায় রাখবেন, শনিবার ফাইনাল ম্যাচটা আমাদের কাছে যুদ্ধ।”
নিজেদের গোল সুরক্ষিত রাখতে হলে ডিফেন্সের আরও দুই বঙ্গসন্তানের উপর ভরসা রাখতে হবে অরিন্দম ভট্টাচার্যকে। একজন প্রীতম কোটাল হলে অপরজন শুভাশিস বোস। শনিবারের ফাইনাল প্রসঙ্গে প্রীতম বলছিলেন, “বিশ্বাস করুন, সরাসরি এএফসি চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলার সুযোগ হাতছাড়া হওয়ার আফশোসটা এখনও যায়নি। শনিবার জিতে ট্রফিটা কলকাতায় নিয়ে গিয়ে মুম্বইকে উপযুক্ত জবাবটা দিতে চাই। আর এবার আমরা সবুজ-মেরুন জার্সি পরে ফাইনাল খেলতে নামব, এই জার্সির গুরুত্ব আর ঐতিহ্যই অন্য রকম।”
হাবাস এদিন ক্লাসে তথ্য দিয়ে ফুটবলারদের দেখিয়েছেন, ওদের বেশিরভাগ গোলই হয়েছে সেটপিস থেকে। যে কারণে এদিন আলাদা করে সেটপিস আটকানোর প্র্যাকটিস হয়। যে প্রসঙ্গে প্রীতম বলছিলেন, “মুম্বই সেটপিসে ভয়ঙ্কর। চেষ্টা করা হবে, বক্সের আশেপাশে যাতে ফ্রি-কিক না পায়। তবে গ্রুপ লিগে মুম্বই আমাদের বিরুদ্ধে যে গোলগুলি করেছে, বেশিরভাগই কিন্তু আমরা উপহার দিয়েছি। ফাইনালে আমরা ডিফেন্ডাররা যদি গোল না খাই, তাহলে রয় কৃষ্ণ, উইলিয়ামস কিংবা মনবীররা ঠিক গোল করে দেবে।”
দলের আরেক নিয়মিত বঙ্গ ডিফেন্ডার বলছিলেন, “যেবার বেঙ্গালুরুতে ছিলাম, কার্ডের সমস্যায় ফাইনালে উঠেও খেলতে পারিনি। এবার ট্রফিটা জিতে আইএসএল না জেতার আক্ষেপ ভুলতে চাই। তার থেকেও বড় কথা, আমরা সবুজ-মেরুন জার্সি পরে শনিবার ফাইনাল খেলব। যে জার্সির জয় দেখার জন্য কোটি কোটি সবুজ-মেরুন সমর্থক টিভির সামনে অপেক্ষা করে থাকবে। এতদূর যখন চলে এসেছি, তখন আর পিছনের দিকে তাকাতে চাই না।”