সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: লোকসভা ভোটের আগে ফের দলবদল! তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে ফিরলেন উত্তর দিনাজপুরের কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক সৌমেন রায়। কলকাতায় শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে ‘ঘর ওয়াপসি’ হল তাঁর। কেন তাঁকে দলে দলে নেওয়া হল, তার ব্যাখা দিয়েছেন খোদ বিরোধী দলনেতা।
শুভেন্দুর দাবি, “দল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া কাউকে সহজে ঘর ওয়াপসি করানো হয় না। কিন্তু ভাই সৌমেনের ক্ষেত্রে সেটা করা হল। কারণ, ও আমাদের দলের সর্বোচ্চ নেতৃত্ব, আদর্শের বিরুদ্ধে নিজে থেকে কোনও কুমন্তব্য করেননি। পঞ্চায়েতের সময় ওঁকে দিয়ে আমাদের বিপক্ষে কিছুটা বলানো হয়েছে। ওই কাজগুলো তিনি করেননি, বরং করানো হয়েছে।” এই ঘর ওয়াপসির নেপথ্যে রাজবংশী সমাজের প্রতিনিধি তথা বিজেপির রাজ্যসভার বিধায়ক অনন্ত মহারাজ রয়েছেন বলেও জানিয়েছেন শুভেন্দু। তাঁর কথায়, “রাজবংশী সমাজের প্রতিনিধি অন্তত মহারাজের সুপরামর্শে সৌমেন বিজেপিতে যোগ দিলেন। ও আগেও জানিয়েছে, ও এবং ওর পরিবার বিজেপি ছাড়া কিছু বোঝে না।” তবে এই দলবদলকে আমল দিতে রাজি নয় স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। এ প্রসঙ্গে উত্তর দিনাজপুরের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল জানান, “গদ্দার গেল কি এল তাতে দলের কিছু যায় আসে না। এতে আমাদের দল আরও শক্তিশালী হল।”
[আরও পড়ুন: চোদ্দোর ভোটে তৃণমূলের অ্যাকাউন্টে ‘গরমিল’! এবার অরূপ বিশ্বাসকে তলব ইডির]
উল্লেখ্য, সৌমেন রায় একুশ সালে দলবদলের পর থেকে তৃণমূলে তেমন গুরুত্ব পাননি বলেই অভিযোগ। দলীয় সূত্রে খবর, জেলার দলের অনুষ্ঠানে তাঁকে ডাকা হত না। ফলে বিজেপিতে প্রত্যাবর্তনের জন্য কার্যত পা বাড়িয়েই ছিলেন কালিয়াগঞ্জের বিধায়ক। লোকসভা ভোটের আগে বিজেপি থেকে সবুজ সংকেত পেতেই গেরুয়া শিবিরের যোগ দিলেন।
আলিপুরদুয়ারের বাসিন্দা সৌমেন রায়। দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল করতেন তিনি। মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ হিসেবেই পরিচিত ছিলেন এই বিধায়ক। একুশের ভোটের আগে ২০২০ সালে বিজেপিতে যোগ দেন সৌমেন। বিজেপির টিকিটে জিতে বিধায়ক হন তিনি। এ প্রসঙ্গে বলে রাখা ভাল, তাঁকে প্রার্থী করার পর থেকেই বিজেপির অন্দরে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল। রীতিমতো রাস্তায় বসে বিক্ষোভ দেখান বিজেপির নেতা-কর্মীরা। জিতে আসার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়ছিল সৌমেনের। অবশেষে তৃণমূলের তৎকালীন মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের হাত ধরে তৃণমূলে ফিরে গিয়েছিলেন। এবার চব্বিশের লোকসভা আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে ‘ঘর ওয়াপসি’ হল তাঁর।