অর্ণব আইচ: হার্টের অবস্থা একদমই ভাল নয় নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের। ৩ টি ধমণীতে ব্লকেজ। প্রয়োজন ওপেন হার্ট সার্জারির। আদালতে এমনটা জানিয়েই সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের জামিনের আরজি করলেন তাঁর আইনজীবী। আরজি জানালেন বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচারের অনুমতির। যদিও এসএসকেএমের রিপোর্ট নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। আদালতের কাছে আরজি জানালেন, এসএসকেএমের রিপোর্ট দিল্লি এমইসে পাঠানোর জন্য, যাতে সেখানকার চিকিৎসকদের মতামত পাওয়া যায়। শুনানি শেষে জামিনের আরজি খারিজ করে আদালত।
নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃতদের মাধ্যমেই কিছুদিন আগে উঠে আসে সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের নাম। একাধিকবার তাঁকে জেরা করা হয়। অবশেষে গ্রেপ্তারি। সুজয়কৃষ্ণের বন্দিদশাতেই মৃত্যু হয় তাঁর স্ত্রীর। সেই সময় প্যারোলে মুক্তি পান কালীঘাটের কাকু। তারপরই হঠাৎ করে অসুস্থতা। ভরতি করা হয় এসএসকেএম হাসপাতালে। বর্তমানে সেখানেই ভরতি তিনি। সেই কারণে বৃহস্পতিবার আদালতে সশরীরে হাজিরা দিতে পারেননি সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র। এদিন আদালতেই ‘কালীঘাটের কাকু’র অসুস্থতাকে হাতিয়ার করেই জামিনের আরজি জানালেন তাঁর আইনজীবী। এদিন আদালতে আইনজীবী জানিয়েছেন, সুজয়কৃষ্ণের হার্টের অবস্থা একেবারেই ভাল নয়। ৩ টি ধমণীতে ব্লকেজ রয়েছে। ইতিমধ্যেই অ্যাঞ্জিওগ্রাম করা হয়েছে। ওপেন হার্ট সার্জারি করতে হবে। এসএসকেএমের রিপোর্ট পেশ করে আইনজীবী আদালতে বলেন, অপারেশন ১০০ শতাংশ সফল হয় না। পাশাপাশি এসএসকেএম হাসপাতালের চিকিৎসা নিয়েও খানিকটা সংশয় প্রকাশ করেন তিনি। আইনজীবীর আরজি, সুজয়কৃষ্ণকে যেন তাঁর পছন্দের বেসরকারি হাসপাতালে ও পছন্দের চিকিৎসকদের কাছে অস্ত্রোপচারের অনুমতি দেওয়া হয়। পালটা আদালতের তরফে জানাতে চাওয়া হয়েছে, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আর্থিক পরিস্থিতি, তাঁর মেয়ের হদিশ। কারণ, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা ব্যয়বহুল।
[আরও পড়ুন: একাদশ-দ্বাদশের উত্তরপত্রে ‘কারচুপি’, ৯০৭ জন শিক্ষকের নামের তালিকা প্রকাশ SSC’র]
যদিও সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের আইনজীবীর পালটা দিয়েছেন ইডির আইনজীবী ফিরোজ এডুলজি। জামিনের আরজির বিরোধিতা করে তিনি এদিন বলেন, “রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এসএসকেএম হাসপাতালের উপর ভরসা রাখেন। একমাসের মধ্যে দুটি হার্ট প্রতিস্থাপন হয়েছে এই হাসপাতালেই। আমাদের ধারণা এসএসকেএমই যথেষ্ট চিকিৎসার জন্য।” কালীঘাটের কাকুর অসুস্থতাতেও প্রভাবশালী তত্ত্ব উঠে এসেছে। ইডির আইনজীবী এদিন বলেন, “সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র ১৬ দিন বাড়িতে ছিলেন, তখন কিছু হল না। জেলে ঢোকার সময়ই অসুস্থ, এতেই প্রভাব বোঝা যায়।” এরপরই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। বলেন, গ্রেপ্তারের পর পার্থ চট্টোপাধ্যায়ও অসুস্থ হয়েছিলেন। তাঁকে প্রথমে এসএসকেএম ও পরবর্তীতে ভুবনেশ্বর নিয়ে যাওয়া হয়। ভুবনেশ্বরের চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন কোনও সমস্যা নেই। এরপরই তিনি বলেন, “অনেকেই এসএসকেএমের অপব্যবহার করেন রাজনৈতিক স্বার্থে। ডাক্তারদের অসম্মান করছি না। কিন্তু রাজনৈতিক চাপে যেভাবে রিপোর্ট তৈরি হয় তাতে আমার সংশয় রয়েছে।” এরপরই তিনি সুজয়কৃষ্ণের রিপোর্ট এইএসে পাঠানোর আরজি জানান তিনি।