অভিষেক চৌধুরী,কালনা: বড়সড় মাপের ওভারিয়ান টিউমার। বেসরকারি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করালে খরচ লক্ষাধিক টাকা। ব্যয়বহুল এমনই এক অপারেশনের কথা শুনে চোখ কপালে ওঠে দিন আনা দিন খাওয়া পরিবারের এক রোগীর। এদিকে অস্ত্রোপচার না করলেও প্রাণ সংশয় হতে পারত ওই মহিলার। সেই অস্ত্রোপচারই হল সম্পূর্ণ বিনামূল্যে!সৌজন্যে কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল (Kalna Super Specialty Hospital) । স্বাভাবিকভাবেই উন্নত চিকিৎসা পরিষেবা পেয়ে খুশি ভিন জেলার বাসিন্দা গোলাপি বিবির পরিবার। মাইক্রো সার্জারির মাধ্যমে বড়সড় মাপের ওভারিয়ান টিউমারের সফল অস্ত্রোপচারে খুশি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও।
নদিয়া জেলার শান্তিপুরের সাহেবডাঙার বাসিন্দা গোলাপি বিবি। বয়স মাত্র ২৭। এক সন্তানের মা। মাঝেমধ্যেই তাঁর পিঠের দিকে ও মাজায় যন্ত্রণা হত। বেশ কিছুদিন আগে হঠাৎ করেই তার পেটে যন্ত্রণা শুরু হয়। চিকিৎসার জন্য শান্তিপুর হাসপাতাল-সহ বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে শেষপর্যন্ত তাঁকে কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে নিয়ে আসে তাঁর পরিবার। গত ৭ জুলাই মেডিসিন ওয়ার্ডে ভরতি করা হলে পরে তাঁকে মহিলা ওয়ার্ডে স্থানান্তরিত করা হয়। এরপরই পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকরা জানতে পারেন তাঁর ডান ডিম্বাশয়ে বড়সড় মাপের, ৩৯২ ঘন সেন্টিমিটারের একটি টিউমার রয়েছে। যা তাঁর জীবনহানির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
[আরও পড়ুন: ভোটে হিংসা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী-কমিশনারকে কটূক্তি, হাতে জুতো নিয়ে কমিশনের সামনে বিক্ষোভ বিজেপির]
চিকিৎসকরা জানান,ওই টিউমার ঘুরে গেলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। শুধু তাই নয়,খুব বেশি বড় হয়ে গেলে ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার মত ঝুঁকিও থেকে যাচ্ছে। এই টিউমার অপারেশন ব্যয়সাপেক্ষ। এমন এক পরিস্থিতিতে শনিবার রাতে কালনা সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে মাইক্রোসার্জারির মাধ্যমে টিউমারটির অস্ত্রোপচার করেন ডাঃ অভয়চাঁদ নাগ ও তাঁর সহযোগী ডাঃ অরু কুমার ভদ্র। সাফল্যও মেলে।
এ প্রসঙ্গে ডাঃ অভয়চাঁদ নাগ জানান, “অল্পবয়সী এক মহিলা রোগীর ডানদিকের ডিম্বাশয়ে ৩৯২ ঘন সেন্টিমিটার আকারের একটি বড় মাপের টিউমার ধরা পড়ে। অপারেশন না করলে জীবন সংশয় হতে পারত। সাড়ে তিন বছর আগে ওই মহিলার সিজার করে একটি সন্তানও হয়েছে। তাই পেট না কেটে মাইক্রো সার্জারির মাধ্যমে ওই ওভারিয়ান টিউমারটি বের করা হয়।জটিল অপারেশন ছিল।সফল অপারেশনের পর রোগী স্থিতিশীল রয়েছেন।” অন্যদিকে রোগী গোলাপি বিবির স্বামী মিরাজ আলি ধাবক বলেন, “ব্যয়সাপেক্ষ এমনই এক অপারেশন সম্পূর্ণ বিনামূল্যে হওয়ায় আমরা খুবই খুশি। কারণ বাইরে লক্ষাধিক টাকা খরচ করার সামর্থ্য আমাদের নেই। সরকারি হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসা ব্যবস্থায় স্ত্রী নতুন জীবন ফিরে পেল এটা আমাদের কাছে খুবই আনন্দের।”