ছবিতে তাঁকে দেখে থাকতে পারেন! একটা বাচ্চা ছেলে তার ঠাকুর্দার হাতের লাঠিটা ধরে টানছে। টানতে টানতে নিয়ে যেতে চাইছে সমুদ্রতীরের কোনও একটা দিকে। দেখাতে চাইছে কিছু একটা।
ওই ছবিটা এখন সব দিক থেকেই স্মৃতি। বয়স পেরিয়ে গিয়ে ওই শিশুটি এখন বৃদ্ধ বলেই শুধু নয়। পাশাপাশি, মহাত্মা গান্ধির নাতি হিসেবে আর নিজ যোগ্যতায় যা কিছু জীবনসঞ্চয় ছিল, সব হারিয়ে বৃদ্ধাবাসকে আশ্রয় করতে হয়েছে বলে!
বৃদ্ধাবাসটির অবস্থাও ভাল কিছু নয়। রাজধানী দিল্লির এই গুরু বিশ্রাম বৃদ্ধ আশ্রমের কেবল একটিই ঘরে খাট আছে। যে ঘর এত দিন পর্যন্ত ব্যবহার করা হত আইসিইউ হিসেবে। এবার সেই ঘরেই মাথা গুঁজতে বাধ্য হয়েছেন কানু রামদাস গান্ধি আর তাঁর স্ত্রী শিবলক্ষ্মী গান্ধি।
তবে বরাবর কিন্তু অবস্থাটা এমন ছিল না। ”আমাদের কাছে অনেক কিছুই ছিল। সে সব আমরাই নষ্ট করে ফেলেছি”, সংক্ষেপে জানিয়েছেন শিবলক্ষ্মী গান্ধি।
কী ভাবে দিল্লির এই বৃদ্ধাবাসে আশ্রয় নিতে বাধ্য হলেন গান্ধি পরিবার? পুরোটা না বললেও অতীত জীবনের কিছু কথা বলেছেন গান্ধি দম্পতি।
মহাত্মা গান্ধি যখন মারা যান, তখন কানুর বয়স ছিল ১৪ বছর। জওহরলাল নেহরু আর ইউএস অ্যাম্বাসাডর জন কেলেথ গ্যালব্রেইথ ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজিতে অ্যাপলায়েড ম্যাথামেটিকস পড়ার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে দেন কানুকে। তার পর হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলেও পড়াশোনা করেন কানু। দীর্ঘ দিন ছিলেন হ্যাম্পটনে। সেখানে নাসার দফতরে কাজও করেছেন তিনি। অন্য দিকে, শিবলক্ষ্মী বায়োকেমিস্ট্রি নিয়ে পিএইচডি করে মন দিয়েছিলেন রিসার্চে।
কিন্তু, সুখের সেই দিন আর রইল না। ২০১৪ সালে শেষ পর্যন্ত ভারতে চলে আসতে বাধ্য হন তাঁরা। প্রথমে বাসস্থান বলতে ছিল দেশের নানা গান্ধি আশ্রম, পরে এই বৃদ্ধাবাস।
তবে মানসিক ভারসাম্যহীনদের মধ্যে থেকেও এখনও আশা মুছে যায়নি গান্ধি দম্পতির। তাঁরা আপাতত এমন এক বৃদ্ধাবাস খুঁজছেন যেখানে তাঁদের মতো প্রবাসীদের ঠাঁই হতে পারে।
The post জানেন কি, মহাত্মা গান্ধির নাতির আশ্রয় এখন বৃদ্ধাবাস? appeared first on Sangbad Pratidin.