কৃষ্ণকুমার দাস: কেন্দ্রীয় সরকার পর্যাপ্ত টিকা রাজ্যে পাঠাচ্ছে না বলে অভিযোগ। তবে তার মাঝেই কোভিড (COVID-19) মোকাবিলায় সোমবার থেকে কলকাতা শহরের নির্দিষ্ট ৩৭টি সেন্টারে আঠারোর্ধ্ব নাগরিকদের ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু করছে কলকাতা পুরসভা (KMC)। এর মধ্যে ২৯টি সেন্টারে এতদিন শুধুমাত্র সুপার স্প্রেডার গোষ্ঠীকে টিকা দেওয়া হচ্ছিল। এবার সেখান থেকেই টিকা পেতে চলেছেন সব প্রাপ্তবয়স্করা।
কোন কোন সেন্টারে সোমবার থেকেই ভ্যাকসিন (Vaccine) পেতে পারেন আঠারো থেকে ৪৪ বছরের নাগরিকরা? তাও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে পুরসভার তরফে। দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুর, চেতলা, হাজরা, আলিপুর ছাড়া আরও আটটি কেন্দ্র থেকে ১৮ উর্ধ্বরা শুধুমাত্র আধার কার্ড নিয়ে এলেই কোভিড টিকা পাবেন। কলকাতা পুরসভার মুখ্যপ্রশাসক ও পরিবহণমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছেন, “কেন্দ্রীয় সরকার চাহিদামতো ভ্যাকসিন না দিলেও আমাদের সাধ্যমতো নির্দিষ্ট কিছু কেন্দ্রে ১৮ উর্ধ্বদের জন্য ভ্যাকসিন চালু করে দিচ্ছি। তারপর কেন্দ্র থেকে আরও টিকা এলে ১৪৪টি ওয়ার্ডেই ‘ভ্যাকসিন ফর অল’ হবে।” অহীন্দ্র মঞ্চ, রক্সি, এলিট, স্টার থিয়েটার, কোয়েস্ট মল, সাউথ সিটি স্কুলের মতো মেগাসেন্টার মিলিয়ে মোট ৩৭টি সেন্টার থেকেও প্রাপ্তবয়স্করা টিকা পাবেন বলে জানিয়েছেন পুরসভার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক।
[আরও পড়ুন: প্রায় কোটি টাকার ওষুধ নষ্টের আশঙ্কা, স্বাস্থ্যদপ্তরকে জানাল বেলেঘাটা আইডি]
বিধানসভা ভোটের পর গত ৪ মে ফিরহাদ হাকিমের নেতৃত্বে প্রশাসকরা দায়িত্ব নেওয়ার পর শনিবার ছিল ৪৫তম দিবস। যেদিন প্রশাসকরা দায়িত্ব নেন সেদিন মহানগরে কোভিডের দৈনিক সংক্রমণ হার ছিল ৪২৪০ জন। আর তা শনিবার নেমে মাত্র ১১৯ জনে দাঁড়িয়েছে। মুখ্যপ্রশাসকের নির্দেশে টিকাকরণ ও টেস্টিংয়ের হার কয়েকগুন বৃদ্ধির পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বিধিনিষেধ জারি করার জেরে শহরে কোভিড সংক্রমণ হার তলানিতে নেমে এসেছে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ সুব্রত রায়চৌধুরী জানান, “১৪৪টি ওয়ার্ড মিলিয়ে ২৪ ঘণ্টায় নয়া সংক্রমিত মাত্র ১১৯ জন। শীঘ্রই এটা একশোর নিচে নেমে যাওয়ার সম্ভবনা।”
[আরও পড়ুন: রাজ্যে ভোট পরবর্তী হিংসা মামলা: হাই কোর্টের নির্দেশে স্থগিতাদেশ চেয়ে আবেদন মুখ্যমন্ত্রীর]
স্বাস্থ্যদপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃহত্তর কলকাতায় সংক্রমিত মাত্র ২১৭। অর্থাৎ কলকাতা পিনকোডে যতগুলি অঞ্চল আছে সেই বারাসত, বারাকপুর থেকে সোনারপুর, বারুইপুরের সংক্রমিতের সংখ্যা মিলিয়ে ২১৭ বলে দাবি পুরসভার। ভোটের প্রচারের মধ্যে নির্বাচন কমিশন যেদিন বোর্ড থেকে প্রশাসকদের সরিয়ে দেয় সেই ২০ মার্চ বৃহত্তর কলকাতায় সংক্রমিত ছিল ১২৫, আর শহরে ছিল সত্তরের নিচে। পুরসভার তরফে এখনও পর্যন্ত ২২ লক্ষ কলকাতাবাসীর টিকাকরণ হয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে দৈনিক এক লক্ষ টিকা দেওয়ার পরিকাঠামো প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু টিকা না মেলায় তা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি পুরসভার।