দরজায় এসে কড়া নাড়ছে শীত। আর শীত আসা মানেই মনটা যেন অজান্তেই ছুটে চলে যায় সুদূরের পথে। শীতের মিঠে কড়া রোদ গায়ে মেখে ছুটির দিনে বনভোজন যেন এক অনাবিল আনন্দ। চড়ুইভাতির সেই পুরনো ছবি এখন অবশ্য দেখা যায় না। তবে নিত্যনতুন গড়ে ওঠা পিকনিক স্পটের পাশাপাশি বেশ কিছু জনপ্রিয় পিকনিকের স্থান এখনও আকর্ষণ করে সকলকে। রইল কাছে দূরের সেই সমস্ত পিকনিক স্পটের হদিশই। লিখলেন সোমনাথ লাহা।
ধুতুরদহ
প্রাকৃতিক পরিবেশে সুসজ্জিত পিকনিক স্পট ধুতুরদহ। সায়েন্স সিটি থেকে ৪০ কিলোমিটার আর ঘটকপুকুর থেকে ১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই চড়ুইভাতির জায়গাটি রীতিমতো সাজানো গোছানো। রয়েছে বাগান-সহ সুইমিংপুল ও লেক। ইচ্ছে করলে থাকতেও পারেন। আটটি বাতানুকূল ঘর রয়েছে এখানে। ঘর প্রতি ভাড়া ২,০০০টাকা। প্রতিদিন এখানে দুটি দলকে পিকনিক করার অনুমতি দেওয়া হয়। পিকনিকের জন্য বরাদ্দ দুটি ঘর-সহ সম্পূর্ণ পিকনিকের জায়গাটি, ভাড়া ১২,০০০টাকা। তবে পিকনিকের যাবতীয় সরঞ্জাম ও কাঁচামাল সঙ্গে নিয়ে যাওয়াই ভাল।
কীভাবে যাবেন: এসপ্ল্যানেড থেকে মালঞ্চগামী বাসে চেপে নামতে হবে মিনাখাঁ স্টপে। এখান থেকে অটো বা রিকশা ধরে চলে আসতে পারেন। ধুতুরদহ, গাড়ি করে সড়কপথে এলে সায়েন্স সিটি থেকে বাসন্তী হাইওয়ে ধরে মিনাখাঁ পৌঁছে ডান হাতি রাস্তাতেই পড়বে ধুতুরদহ।
[ আরও পড়ুন: দেশের প্রথম ‘ম্যানগ্রোভ চিড়িয়াখানা’ গড়ে উঠবে সুন্দরবনে, ঘোষণা বনমন্ত্রীর ]
ডাবু
মাতলা নদীর তীরে অবস্থিত অত্যন্ত জনপ্রিয় পিকনিকের জায়গা ডাবু। তবে এখানে পিকনিক করতে এলে অনুমতি নিতে হয় সেচদপ্তরের থেকে। পিকনিকের যাবতীয় সরঞ্জাম সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে। পিকনিকের ফাঁকে নৌকা নিয়ে ভেসে পড়তে পারেন মাতলার বুকে। এখানে দেখা পেতে পারেন বেশ কিছু বিরল প্রজাতির পাখিরও। থাকার জন্য রয়েছে সেচদপ্তরের সুদৃশ্য বাংলো।
কীভাবে যাবেন: শিয়ালদহ দক্ষিণ শাখা থেকে ধরতে হবে ক্যানিংগামী ট্রেন। সময় লাগবে ঘণ্টা দেড়েক মতো। ক্যানিং স্টেশন থেকে অটো বা সাইকেল রিকশায় চেপে মিনিট পনেরোর মধ্যে পৌঁছে যেতে পারেন ডাবুতে। সড়কপথে গাড়িতে এলে গড়িয়া-বারুইপুরের রাস্তা ধরে ক্যানিং চলে আসা যায়।
বুকিংয়ের জন্য যোগাযোগ করবেন বিকাশভবন, দ্বিতীয় তল, নর্থ ব্লক, বিধাননগর, কলকাতা-৭০০০৯১ ঠিকানায়।
[ আরও পড়ুন: বেনজির! ‘নিষিদ্ধ’ ভারতীয় গাড়ি নিয়ে কৈলাসে পাড়ি বঙ্গসন্তানের ]
রাজবলহাট
জাঙ্গিপাড়া ব্লকে অবস্থিত কবি হেমচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্মস্থান রাজবলহাট একটি জনপ্রিয় পিকনিক স্পট। ষোড়শ শতকে এটিই ছিল ভুরসুট রাজবংশের রাজধানী। এখানকার চতুর্ভুজা মৃন্ময়ীদেবী রাজবল্লভীর মাহাত্ম্য অবর্ণনীয়। মূর্তিটির উচ্চতা ছ’ফুট। ১৭২৪-এ অপরূপ ভাস্কর্য শোভিত এই টেরাকোটার মন্দিরটি নির্মাণ হয়। এছাড়াও এখানে আরও দুটি টেরাকোটার মন্দির রয়েছে। সে দুটি হল-রাধাকান্ত মন্দির ও শ্রীধর দামোদর মন্দির। আটচালা বিশিষ্ট এই দুটি মন্দির এখানকার অন্যতম দ্রষ্টব্য। মন্দিরের আশপাশে রয়েছে কয়েকটি মাঠ ও পুকুর জায়গা বেছে নিয়ে বসে পড়ুন পিকনিক করতে। পিকনিকের যাবতীয় সামগ্রী স্থানীয় বাজার বা হরিপাল থেকে কিনতে পারেন।
কীভাবে যাবেন: ট্রেনে হাওড়া থেকে তারকেশ্বর, তালপুর বা হরিপাল লোকাল ধরে নেমে পড়ুন হরিপাল স্টেশনে। স্টেশন থেকে ১০ নম্বর রুটের বাস ধরে পৌঁছে যান রাজবলহাট। স্টেশন থেকে রাজবলহাটের দূরত্ব ২২ মিমি। বাসে করে আসতে চাইলে হাওড়া ও ধর্মতলা থেকে সরাসরি বাসে যেতে পারেন। বাস আসে ডোমজুড়, বড়গাছিয়া, জাঙ্গিপাড়া হয়ে। এই পথে নিজেদের গাড়িতেও আসতে পারেন এখানে।
The post শীতে কলকাতার কাছে চড়ুইভাতি সারতে চান? রইল তিনটি অফবিট জায়গার সন্ধান appeared first on Sangbad Pratidin.